শিক্ষা উপকরণের দাম কমাতে কলা-কচুপাতা হাতে মানববন্ধন

কাগজসহ শিক্ষা উপকরণের দাম কমানোর দাবিতে কলাপাতা ও কচুপাতা হাতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন। দ্রুত দাম না কমালে সর্বাত্মক আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি। এ ছাড়া সমাবেশে শিক্ষামন্ত্রী ও বাণিজ্যমন্ত্রীর অপসারণ দাবি করেছে তারা।

সোমবার (১৪ নভেম্বর) বিকাল ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক দীপক শীল বলেন, ‘করোনার মধ্যে এমনিতেই শিক্ষাব্যবস্থা মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। মূল্যস্ফীতির কারণে খাদ্যের বা নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার বিষয়টি যেভাবে আলোচনায় আসে, শিক্ষা উপকরণের দাম বাড়ার বিষয় সেভাবে আলোচনায় আসে না। মানুষের খরচের বোঝা আরও ভারী হচ্ছে। নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তানরা পড়াশোনা চালাতে নিরুৎসাহিত হচ্ছে, এমনকি পড়াশোনা বন্ধ করার মতো সিদ্ধান্তও নিচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বইয়ের পাশাপাশি শিক্ষার জন্য অপরিহার্য শিক্ষার বিভিন্ন উপকরণ, খাতা-কলম-ফাইলের বাইরে রঙিন কাগজ, পেনসিল, শার্পনার, ইরেজার, মার্কার, স্ট্যাপলার, পিন, ক্লিপ, অফিস ফাইল, ক্যালকুলেটর, কলমের বক্স, স্টিল ও প্লাস্টিক স্কেল, রংপেনসিল, এনটিকাটার, কাঁচি, পরীক্ষায় ব্যবহৃত হয় এমন ক্লিপ বোর্ড, ছাপানোর কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য, প্রিন্টারের কালিসহ শিক্ষাসংশ্লিষ্ট সব উপকরণের দাম বেড়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মাত্র পাঁচ-ছয় মাসের ব্যবধানে এসব উপকরণের দাম বেড়েছে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত। কোনও কোনওটি বেড়েছে দ্বিগুণ। এতে দেশের মধ্যবিত্ত শ্রেণির ওপর যেমন বাড়তি চাপ পড়ছে, তেমনি অনেক নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তানদের লেখাপড়া বন্ধ হওয়ারও উপক্রম হয়েছে। তাই কাগজ-কলমসহ সব শিক্ষা উপকরণের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহার করতে হবে।’

সভাপতির বক্তব্যে সাইফ রুদাদ বলেন, ‘’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যে আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল, সেই আন্দোলনই সামরিক শাসক আইয়ুব খানের পতন করেছিল। ছাত্র স্বার্থে আঘাত করে কোনও সরকারই ক্ষমতায় টিকতে পারেনি। সর্বক্ষেত্রে শিক্ষাকে পণ্যে রূপান্তরের পাঁয়তারা করছে এ সরকার। আমরা ‘টাকা যার শিক্ষা তার’ নীতি মানি না। সব শিক্ষা উপকরণের দাম কমানো ও শিক্ষার ব্যয় সংকোচনের দাবি জানাই।

তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষা উপকরণের দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ শিক্ষামন্ত্রী ও বাণিজ্যমন্ত্রীকে অপসারণ করতে হবে। আমাদের দাবি মেনে নেওয়া না হলে সর্বাত্মক ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সরকারকে দাবি বাস্তবায়নে বাধ্য করা হবে।’

সমাবেশে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সংসদের সদস্য সাইফ রুদাদের সভাপতিত্বে এবং সহকারী সাধারণ সম্পাদক মাহির শাহরিয়ার রেজার সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন সাংগঠনিক সম্পাদক সুমাইয়া সেতু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের আহ্বায়ক কাজী রাকিব হোসাইন, ঢাকা মহানগর সংসদের সাধারণ সম্পাদক লাভলী হক, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক শাওন বিশ্বাস।