জালিয়াতির মাধ্যমে এমপিওভুক্তি

৬৭৮ শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করার নির্দেশ

জাল সনদে নিয়োগ দেওয়া ৬৭৮ শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালককে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনায় শিক্ষকদের বেতনভাতা বাবদ নেওয়া অর্থ ফেরত আনা এবং ফৌজদারি মামলা দায়ের এবং জাল সনদে নিয়োগ কার্যক্রমে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। তবে এমপিও দেওয়ার জন্য দায়ী কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্ট কারও বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা নেই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অফিস আদেশে।

গত ১৮ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সহকারী সচিব (অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা শাখা) মো. সেলিম শিকদারের সই করা অফিস আদেশ থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

অফিস আদেশে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালককে নির্দেশনা দিয়ে বলা হয়, পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতর যাচাই-বাছাই করে ৬৭৮ জন শিক্ষক-কর্মচারীর জাল সনদ শনাক্ত করেছে। গত ৮ ফেব্রুয়ারি সনদ প্রদানকারী দফতরের প্রধান প্রতিনিধি সমন্বয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের সনদের সত্যতা যাচাই করে জাল সনদের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এ অবস্থায় ৬৭৮ জন জাল সনদধারী শিক্ষক-কর্মচারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো।

অফিস আদেশে জালসনদধারী শিক্ষক-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে সাত দফা শাস্তির নির্দেশ দেওয়া হয়।  নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে, সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের এমপিও বন্ধ এবং বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে চাকরিচ্যুত করা, সরকারের কাছ থেকে গ্রহণ করা বেতন-ভাতা সরকারি কোষাগারে ফেরত দিতে হবে। এছাড়া ফৌজদারী অপরাধের মামলা দায়ের, নিয়োগ কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। অবসরপ্রাপ্তদের অবসর সুবিধা প্রাপ্তি বাতিল, স্বেচ্ছায় অবসর নেওয়াদের অর্থ অধ্যক্ষ বা প্রধান শিক্ষকের মাধ্যমে আদায় করতে হবে এবং অবসর ভাতা/কল্যাণ ট্রাস্টের ভাতা বন্ধ করতে হবে।

এর আগে ২ মে শিক্ষক নিবন্ধন সনদ যাচাই বাধ্যতামূলক করে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)।  এই ঘটনার পর অবৈধ সনদধারীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দেয় ম্যনেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডি। ওই নিয়োগের পর যাচাই-বাছাই ছাড়াই এমপিওভুক্তির সুপারিশ করে সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক অফিস। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের এমপিও বৈঠকে সুপারিশ করা শিক্ষকের এমপিও দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়।

পরবর্তীতে শিক্ষকদের সনদ জালিয়াতির অভিযোগ উঠলে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতর (ডিআইএ) সনদ যাচাইবাছাই করে ৬৭৮ জন শিক্ষকের জাল সনদের অস্তিত্ব খুঁজে পায়। এরপর ডিআইএ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে তালিকাসহ এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পত্র দেয়।