রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের জন্য আদর্শ প্রতিষ্ঠান হবে বাউবি: শিক্ষা উপমন্ত্রী

শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, বিদেশে অবস্থানরত রেমিট্যান্স যোদ্ধারা আমাদের অর্থনীতিকে গতিশীল রেখেছেন। তাদেরকে সুদক্ষ, সময়োপযোগী করে গড়ে তোলার জন্য বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (বাউবি) আরও সৃজনশীল প্রোগাম চালু ও নতুন শর্ট কোর্স ডিজাইন করবে বলে আশা করি। রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের জন্য বাউবি হবে নির্ভরতা ও ভরসার একটি আদর্শ প্রতিষ্ঠান।

বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে  দেওয়া এক বাণীতে শিক্ষা উপমন্ত্রী এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, বিশ্ব এখন চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাক্রমে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের ছাপ থাকা আবশ্যকীয় হয়ে পড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রোগ্রামগুলোতে শুধু সর্বোচ্চ ডিগ্রিই নয়; বরং জীবনমুখী, কর্মমুখী, কারিগরি প্রোগ্রাম নিয়ে ডিজাইন করা উচিত বলে মনে করি। একটি সুনির্দিষ্ট টার্গেট নিয়ে তাদের এগিয়ে যাওয়া দরকার। বিদেশে অবস্থানরত স্বল্প শিক্ষিত বাঙালি শ্রমিকরা আরও দক্ষ ও শিক্ষিত হবেন কীভাবে সে ব্যাপারে গভীরভাবে ভাবার সময় এসেছে। কারণ, তারা আমাদের রেমিট্যান্স যোদ্ধা। অর্থনীতিকে গতিশীল রেখেছে তারা। বাস্তব কাজের জ্ঞান, দক্ষতা ও সনদের অভাবে সামনের দিনগুলোতে আমাদের রেমিট্যান্স যোদ্ধারা ভীষণ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবেন। আমি চাই তাদেরকে বাউবি সুদক্ষ, সময়োপযোগী করে গড়ে তোলার জন্য আরও সৃজনশীল প্রোগাম চালু ও নতুন নতুন শর্ট কোর্স ডিজাইন করবে। তাদের জন্য বাউবি হবে নির্ভরতা ও ভরসার একটি আদর্শ প্রতিষ্ঠান।

শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, প্রতিষ্ঠার ৩০ বছর হয়তো খুব বেশি সময় নয়। তবে দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বে শিক্ষার ধ্যানধারণা ও প্রয়োগগত চাহিদা অনেক দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই চাহিদা পূরণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়কে নতুন ভিশন ও মিশন গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা ছাড়া টিকে থাকার ক্ষেত্রে বড় ধরণের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে। অনলাইন পদ্ধতিকে আরও কীভাবে সবার জন্য সহজ ও সুলভ করার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের উন্মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থায় যুক্ত করা যাবে সেটিও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে গুরুত্বের সঙ্গে ভাবতে হবে।

মহিবুল হাসান চৌধুরী আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘সোনার বাংলা’ গড়ার প্রত্যয়কে বাস্তবায়ন করা এবং স্মার্ট সমৃদ্ধ উন্নত বাংলাদেশ গড়ার যে অভিপ্রায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিয়েছেন, যে রূপকল্প ২০৪১ তিনি আমাদের দিয়েছেন, তার প্রকৃত বাস্তবায়নই আমাদের অভিলক্ষ্য। সে আলোকে বাউবির অগ্রযাত্রা সুন্দর, সৃজনশীল হোক— ৩১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে রইলো শুভ কামনা।

শিক্ষাকে অবাধ, সর্বজনীন, জীবনমুখী হিসেবে করে তুলতে ১৯৯২ সালের ২১ অক্টোবর প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় বাউবি। এর ফলে শিক্ষার সুযোগ বহুমাত্রিক, অবারিত হয়। কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং ক্যাম্পাস গাজীপুরে ৩৫ একর জমির ওপর অবস্থিত প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়া এর ঢাকা আঞ্চলিক কেন্দ্রসহ দেশে আরও ১১টি আঞ্চলিক এবং ৮০টি উপ-আঞ্চলিক কেন্দ্র পরিকল্পনা মোতাবেক স্থাপিত হয়েছে। বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় প্রতিষ্ঠিত এই সব আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক কেন্দ্রের অধীন নিকটস্থ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সংযুক্ত করার মাধ্যমে সপ্তাহে ১/২ দিন শ্রেণি পাঠদান এবং অন্যান্য সহায়ক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের শিক্ষাক্রম সম্পন্ন হয়ে থাকে। মূলত যারা চাকরিজীবী কিংবা পারিবারিক ও শারীরিক অসুস্থতাজনিত কারণে লেখাপড়া সমাপ্ত করতে পারেননি তারা এবং যেকোন‌ও বয়সের যেকোনও নাগরিকই উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার অধিকার রাখেন। এর ফলে দেশে শিক্ষার হার বৃদ্ধি করা ছাড়াও আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের সুযোগ লাভ করার ব্যবস্থাও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে করা হয়ে থাকে। এ কারণে এটিকে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা নামে অভিহিত করা হয়।