প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি নয়, চাকরি অব্যাহত রাখার আদেশ জারির দাবি

সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রামের (সেসিপ) ১ হাজার ১৮৭ পদ রাজস্ব খাতে স্থানান্তরে দীর্ঘদিন দাবি করে আসছেন কর্মকর্তা-কর্মচারী। আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সেসিপের মেয়াদ শেষ হবে। এই পরিস্থিতিতে প্রকল্পের মেয়াদ না বাড়িয়ে ওয়ার্ক অর্ডার বা চাকরি অব্যাহত রাখার আদেশ জারি করে চাকরির ধারাবাহিকতা রক্ষার দাবি জানিয়েছেন ৯৯১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী।

মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) সেসিপ কর্মকর্তা-কর্মচারী কল্যাণ পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মো. আব্দুল হাকিম ও সাধারণ সম্পাদক শামীমা ফেরদৌসী সই করা প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব জানানো হয়।

মো. আব্দুল হাকিম ও শামীমা ফেরদৌসী জানান, প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হলে, রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া না নেওয়া হলে সর্বাত্মক কর্মবিরতি ও শিক্ষা ভবনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন সব কর্মকর্তা-কর্মচারী। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদফতরের বাস্তবায়নাধীন সেসিপের ১ হাজার ১৮৭টি পদ অত্যাবশ্যকীয় ও কারিগরি। এই জনবলসহ রাজস্ব খাতে স্থানান্তরপ্রক্রিয়া ৩১ ডিসেম্বর মধ্যে শেষ করা সম্ভব না হলে ওয়ার্ক অর্ডার ছাড়াই সেসিপের মেয়াদ সপ্তম বারের মতো বাড়ানোর প্রক্রিয়া দৃশ্যমান হবে। যদি তা-ই হয়, কর্মকর্তা-কর্মচারী সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে যাবেন।

তারা আরও জানান, রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের ক্ষেত্রে সব ধরনের প্রতিবন্ধকতামূলক পরিপত্রগুলোর শর্ত শিথিল করে প্রধানমন্ত্রী ২০১৯ সালের ২৪ জুন জনবলসহ রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের অনুমোদন করেন। এরপর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সেসিপে সরাসরি নিয়োগ করা কর্মরত ১ হাজার ১৮৭টি পদ জনবলসহ রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের সম্মতি দেয়।

কিন্তু অর্থ বিভাগ ১ হাজার ১৮৭টি পদ জনবলসহ রাজস্ব খাতে স্থানান্তর ছাড়া মাউশির অর্গানোগ্রামে শুধু ৮০১টি পদ সৃষ্টির সম্মতি দেয়। অর্থ বিভাগের এই সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সম্মতির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। সে কারণে মাউশি থেকে আবার অর্থ বিভাগে পত্র পাঠানো হয়। কিন্তু অর্থ বিভাগ ২০২২ সালের ২৮ জুন চারটি কারণ দেখিয়ে সেসিপের ১ হাজার ১৮৭টি পদ জনবলসহ রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের সুযোগ নেই মর্মে অসম্মতি জ্ঞাপন করে। অথচ আগেই শর্তগুলো শিথিল করে প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিয়েছেন।

এদিকে মাঠপর্যায়ে কর্মরত জনবল অপরিহার্য হওয়ায় রাজস্ব খাতে স্থানান্তর সময়সাপেক্ষ উল্লেখ করে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে সেসিপের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়। যদিও বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ থেকে জনবল রাজস্ব খাতে স্থানান্তরপ্রক্রিয়া মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কাজ বিধায় প্রক্রিয়াকালীন থোক বরাদ্দ থেকে ওই জনবলের বেতন-ভাতা পরিশোধের বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে বলে মতামত দেওয়া হয়। সেসিপ প্রকল্পটির কার্যক্রম ৯৭ দশমিক ৫০ শতাংশ শেষ হওয়ায় প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি যুক্তিযুক্ত নয় মর্মেও জানিয়ে দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, প্রকল্পের মেয়াদ না বাড়িয়ে জনবল রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করার দাবিতে গত ২২ অক্টোবর থেকে শিক্ষা ভবন প্রাঙ্গণে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আন্দোলন চলাকালে শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাসে ২৫ অক্টোবর আন্দোলন স্থগিত করেন আন্দোলনকারীরা।

এদিকে সময় সল্পতার কারণে গত ৪ ডিসেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর প্রকল্পের মেয়াদ এক বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করে। অন্যদিকে সেসিপের ৯৯১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী ওয়ার্ক ওর্ডার বা চাকরি অব্যাহত রাখার আদেশ জারির জন্য মন্ত্রণালয়ে লিখিত আবেদন করেন।