চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের প্রথমবর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তি আবেদন অনলাইনে শুরু হচ্ছে ১ জানুয়ারি। এবছর ভর্তি পরীক্ষায় কোটাধারীদের পাস নম্বর বাড়িয়ে ৪০ করা হয়েছে। গত বছর এই পাস নম্বর ছিল ৩৫। সেইসঙ্গে এবারও ‘সেকেন্ড টাইম’ ভর্তির সুযোগ দিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সচিব ও ডেপুটি রেজিস্টার ভর্তি কমিটির সচিব ও ডেপুটি রেজিস্ট্রার (একাডেমিক) এসএম আকবর হোছাইনের সই করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বুধবার (১ জানুয়ারি) বেলা ১১টা থেকে শুরু হয়ে এ আবেদন প্রক্রিয়া চলবে ১৫ জানুয়ারি রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত। এছাড়া ১৮ জানুয়ারি রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত ভর্তির আবেদন ফি জমা দেওয়া যাবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আবেদনকারীরা বাংলাদেশের যে কোনও শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২০২১ বা ২০২২ সালের মাধ্যমিক বা দাখিল বা সমমান পরীক্ষা এবং ২০২৩ বা ২০২৪ সালের উচ্চ মাধ্যমিক বা আলিম বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া সাপেক্ষে ভর্তি নির্দেশিকায় উল্লিখিত সংশ্লিষ্ট ইউনিট বা উপ-ইউনিট, অনুষদ, বিভাগ বা ইনস্টিটিউটে ভর্তির যোগ্যতা আছে, তারা ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য যোগ্য বিবেচিত হবে। অর্থাৎ এবারও ‘সেকেন্ড টাইম’ ভর্তির সুযোগ রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এছাড়া জিসিই (‘ও’ লেভেল এবং ‘এ’ লেভেল) ও সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এবং সমমানের বিদেশী সার্টিফিকেটধারীদের ক্ষেত্রে ২০২১ বা ২০২২ সালের জিসিই ‘ও’ লেভেল পরীক্ষায় এবং ২০২৩ বা ২০২৪ সালের জিসিই ‘এ’ লেভেল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে এবং যাদের ভর্তি নির্দেশিকায় উল্লিখিত ন্যূনতম যোগ্যতা রয়েছে, তারা সংশ্লিষ্ট ইউনিট বা উপ-ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য যোগ্য বিবেচিত হবে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে (https://admission.cu.ac.bd)-এ অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ভর্তিচ্ছুদের আবেদন সম্পন্ন করতে হবে।
গতবছরের মতো এবারও প্রতি ইউনিট বা উপ-ইউনিটের আবেদন ফি ৯০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর সঙ্গে প্রসেসিং ফি বাবদ ১০০ টাকা কাটা হবে। সুতরাং প্রতি ইউনিটে আবেদন ফি ১ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। নির্ধারিত আবেদন ফি মোবাইল ব্যাংকিং ‘রকেট’ বা ‘বিকাশ’-এর মাধ্যমে জমা দেওয়া যাবে।
ভর্তির ক্ষেত্রে সমতা নিরূপণ ফি বাবদ ১ হাজার টাকা পরিশোধ করে সমতা সনদ গ্রহণের প্রক্রিয়া ১ জানুয়ারি থেকে ১২ জানুয়ারি তারিখের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। সমতা নির্ধারণ সম্পন্ন হয়ে যোগ্য বিবেচিত হলে নির্ধারিত আবেদন ফি পরিশোধ করে যথা নিয়মে নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে আবেদন করতে হবে। এ বিষয়ে বিস্তারিত বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির ওয়েবসাইট https://admission.cu.ac.bd--এ পাওয়া যাবে।
প্রতি সংশ্লিষ্ট ইউনিট বা উপ-ইউনিটে ১০০ নম্বরের এমসিকিউ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ব্যবহারিক পরীক্ষায় (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) অংশগ্রহণ করতে হবে। ভর্তি পরীক্ষায় মোট প্রাপ্ত নম্বর থেকে প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ নম্বর কর্তন করা হবে। তবে এবার ‘সি’ ইউনিট ভর্তি পরীক্ষায় মোট প্রাপ্ত নম্বর থেকে প্রতিটি ১ নম্বরের প্রশ্নের ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ এবং প্রতিটি ২ নম্বরের প্রশ্নের ভুল উত্তরের জন্য ০.৫০ কর্তন করা হবে।
২০২২ সালের মাধ্যমিক বা দাখিল বা সমমান পরীক্ষা এবং ২০২৪ সালের উচ্চ মাধ্যমিক বা আলিম বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী ছাড়া অন্য শিক্ষাবর্ষে মাধ্যমিক বা দাখিল বা সমমান এবং উচ্চ মাধ্যমিক বা আলিম বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে তাদের নিজ নিজ সর্বমোট (এমসিকিউ+এসএসসি এইচএসসি সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএর গুণিতক+ব্যবহারিক (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) প্রাপ্ত নম্বর থেকে কর্তন করে মেধা তালিকা প্রস্তুত করা হবে। এবারের ভর্তি পরীক্ষায় কোটাধারী শিক্ষার্থীদেরও সাধারণ শিক্ষার্থীদের সমান অর্থাৎ সর্বনিম্ন ৪০ নম্বর পেয়ে পাস করতে হবে, যা গত বছর ৩৫ নম্বর ছিল।
কেন্দ্র নির্বাচনের ক্ষেত্রে: এবারও প্রথমবর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও আরও দু’টি বিভাগীয় শহরে অনুষ্ঠিত হবে। সেগুলো হলো- ঢাকা বিভাগে (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস) এবং রাজশাহী বিভাগীয় শহরে (রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস)। একই সময় ও তারিখে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তবে বি-১, বি-২ ও ডি-১ উপ-ইউনিটের পরীক্ষা শুধুমাত্র চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হবে।
আবেদনকারী শিক্ষার্থী কোন বিভাগীয় শহরে পরীক্ষা দিতে ইচ্ছুক আবেদনের সময় ইউনিট/উপ-ইউনিটে ১ম, ২য় ও ৩য় পছন্দের অপশন অর্থাৎ তিনটি কেন্দ্রের সবগুলো পছন্দ অনুযায়ী সঠিকভাবে নির্বাচন করতে হবে।
দ্বিতীয়বার আবেদনের সুযোগ বিষয়ে ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের মাধ্যমিক বা দাখিল বা সমমান পরীক্ষা এবং ২০২৩ সালের উচ্চমাধ্যমিক বা আলিম বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবে। তবে মাধ্যমিক বা দাখিল বা সমমান এবং উচ্চ মাধ্যমিক বা আলিম বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের প্রাপ্ত নম্বর থেকে ৩ নম্বর কর্তন করে মেধাতালিকা প্রস্তুত করা হবে। এটি গত বছর ৫ নম্বর কর্তন করে মেধাতালিকা প্রস্তুত করা হয়েছিল।
কোন ইউনিটের পরীক্ষা কবে তা নিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামী ১ মার্চ ‘এ’ ইউনিটের পরীক্ষা দিয়ে শুরু হবে ভর্তি পরীক্ষা। ৮ মার্চ ‘বি’ ইউনিট, ১৫ মার্চ ‘সি’ ইউনিট এবং ২২ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে ‘ডি’ ইউনিটের পরীক্ষা।
২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়ার নিয়মাবলি চবির ভর্তির ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে। আবেদনপত্রে যেকোনও প্রকার সংশোধনী বা ভর্তি পরীক্ষাসংক্রান্ত যেকোনও ডকুমেন্টের ডুপ্লিকেট কপি নেওয়ার জন্য (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) ৩০০ টাকা সার্ভিস চার্জ প্রযোজ্য হবে। অর্থাৎ আবেদন সংক্রান্ত সকল সংশোধনী ১ জানুয়ারি থেকে ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত সংশোধন করা যাবে। ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। খবর বাসস।