স্টুডেন্টস কেবিনেট শিক্ষার্থীদের গণতন্ত্র চর্চায় উদ্বুদ্ধ করবে: শিক্ষামন্ত্রী

শিক্ষামন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনকোমলমতি শিক্ষার্থীদের গণতন্ত্র চর্চা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল করার লক্ষ্যেই স্টুডেন্টস কেবিনেট নির্বাচনের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।

রোববার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ নির্বাচন উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ নির্বাচনের বিস্তারিত তুলে ধরেন।

২১ মার্চ সোমবার ও ৩১ মার্চ বৃহস্পতিবার সারাদেশে ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি ও সমমান পর্যায়ের মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও দাখিল মাদ্রাসায় স্টুডেন্টস কেবিনেট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আগামীকাল সারাদেশে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ১৮ হাজার ১৩৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অনুরূপভাবে আগামী ৩১ মার্চ বৃহস্পতিবার ৪ হাজার ৮৫৮ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, এ নির্বাচনের সকল দায়িত্ব শিক্ষার্থীরা নিজেরাই পালন করবে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রত্যেক ভোটার প্রত্যেক শ্রেণিতে ১টি এবং সর্বোচ্চ ৩টি শ্রেণিতে ২টি করে মোট ৮টি ভোট প্রদান করতে পারবে। প্রত্যেক শ্রেণি থেকে একজন করে পাঁচটি শ্রেণি থেকে ৫ জন এবং পরবর্তী সর্বোচ্চ ভোটপ্রাপ্ত তিন শ্রেণি থেকে ১ জন করে ৩ জন মোট ৮ জন নিয়ে স্টুডেন্টস কেবিনেট গঠিত হবে।

অন্যদিকে বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস) সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে এ নির্বাচন আয়োজন করছে বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস)। নির্বাচনী বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করবেন স্ব স্ব বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। অন্যান্য নির্বাচনের মতোই ব্যালট বাক্স, ব্যালট পেপার, ভোটকেন্দ্র এবং বুথ থাকবে। তবে প্রার্থীদের কোনও প্রতীক দেওয়া হবে না। আর এই কেবিনেটের মেয়াদ হবে এক বছর।

স্টুডেন্টস কেবিনেটের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা প্রথম সভায় সর্বোচ্চ ভোটপ্রাপ্ত প্রতিনিধিকে প্রধানমন্ত্রী বা প্রধান প্রতিনিধি নির্বাচিত করবে। একই সঙ্গে মন্ত্রিসভার আলোকে প্রত্যেকের দায়িত্ব বণ্টন এবং সারা বছরের কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে। পাশাপাশি প্রতিটি শ্রেণি থেকে দুজন করে সহযোগী সদস্য মনোনীত করা হবে। বিদ্যালয়ের প্রধান আটটি কার্যক্রমের দায়িত্বে নির্বাচিত আটজন প্রতিনিধি থাকবে।
দায়িত্বের ক্ষেত্রগুলো হলো- পরিবেশ সংরক্ষণ (বিদ্যালয়, আঙিনা ও টয়লেট পরিষ্কার এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা), পুস্তক ও শিখন সামগ্রী, স্বাস্থ্য, ক্রীড়া, সংস্কৃতি ও সহপাঠ কার্যক্রম, পানিসম্পদ, বৃক্ষরোপণ ও বাগান তৈরি এবং দিবস ও অনুষ্ঠান উদযাপন।

এসব বিষয়ে ব্যানবেইসের গবেষণা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, আমরা ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্কুল পরিদর্শন করেছি। সেখানে নির্বাচনী আমেজ বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা কাজ করছে। কে কাকে ভোট দেবে এখন চলছে সেই হিসাব-নিকাশ। ছাত্রছাত্রীদের ব্যক্তিত্ব ও নেতৃত্বের বিকাশ এবং গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতেই এই নির্বাচনের আয়োজন।

স্টুডেন্টস কেবিনেট মাসে কমপক্ষে একবার সভা করবে। ছয় মাস পর পর সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতিতে সাধারণ সভা হবে। ২০১৫ সাল থেকে মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও দাখিল মাদ্রাসায় এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। আর ২০১০ সাল থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একই আদলে নির্বাচন হয়ে আসছে।

উল্লেখ্য, গত ৮ আগস্ট ১০ হাজার ৪৩টি মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রথমবারের মতো স্টুডেন্টস কেবিনেট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ২০১০ সাল থেকে প্রাথমিক পর্যায়ে এ ধরণের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষাসচিব মো. সোহরাব হোসাইনসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

/আরএআর/এজে/