‘ইয়েল বিশ্ব ফেলো’ নির্বাচিত হলেন ভাসমান স্কুলের উদ্ভাবক মোহাম্মদ রেজোয়ান

বাংলাদেশের জলবায়ু অভিযোজন মডেল হিসেবে বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত ভাসমান স্কুলের উদ্ভাবক, স্থপতি মোহাম্মদ রেজোয়ান ২০২৫ সালের ‘ইয়েল বিশ্ব ফেলো’ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল ইউনিভার্সিটি প্রতি বছর বিশ্বের প্রভাবশালী ১৬ জন ব্যক্তিকে এই মর্যাদাপূর্ণ ফেলোশিপ প্রদান করে। ২০২৫ সালে এই ফেলোশিপের জন্য রেজোয়ানসহ বিশ্বের ৪ হাজার ২০০ জনেরও বেশি প্রার্থী ছিলেন।

রেজোয়ান ২০০২ সালে প্রথম চালু করেন ভাসমান স্কুল, যা বন্যাপীড়িত অঞ্চলের শিশুদের জন্য নিরাপদ এবং সুষ্ঠু শিক্ষা পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। তার উদ্ভাবিত এই ভাসমান স্কুলগুলো সৌরবিদ্যুৎ চালিত নৌকায় পরিচালিত হয় এবং বন্যার মধ্যেও শিক্ষার্থীরা তাদের পাঠ গ্রহণ করতে সক্ষম হয়। রেজোয়ান বলেন, ‘এই স্বীকৃতি বাংলাদেশের সমস্ত সংগ্রামী মানুষদের জন্য যারা আমাদের অনুপ্রাণিত করেছেন। এই স্বীকৃতি বিশ্বব্যাপী ভাসমান স্কুল মডেলের বিস্তারকে সহায়তা করবে।’

ইয়েল ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক লিডারশিপ সেন্টারের ডিরেক্টর এমা স্কাই বলেন, ‘রেজোয়ানের ভাসমান স্কুল মডেল শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা বিশ্বে জলবায়ু অভিযোজনের এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।’ তার এই উদ্ভাবনী কাজ বাংলাদেশের জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনায়ও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে এবং ইতিমধ্যে এশিয়া ও আফ্রিকার আটটি দেশে সফলভাবে অনুসরণ করা হয়েছে।

স্থপতি রেজোয়ানের স্কুল

রেজোয়ান শুধু শিক্ষা খাতে নয়, পরিবেশ ও স্বাস্থ্যসেবায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তার ভাসমান স্কুলের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে ভাসমান গ্রন্থাগার, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং খেলার মাঠ। তার উদ্ভাবন জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার দ্বারা স্বীকৃত এবং অনেক দেশের পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

এবার ইয়েল বিশ্ব ফেলো হিসেবে নির্বাচিত হয়ে রেজোয়ান ইয়েল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের পরামর্শ দেবেন, বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন ও শিক্ষার উন্নয়ন বিষয়ে আলোচনা করবেন এবং বাংলাদেশের অভিজ্ঞতাকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরবেন। 

এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় অর্জন, যা দেশের উদ্ভাবনী নেতৃত্ব ও জলবায়ু অভিযোজন মডেলের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি হিসেবে গণ্য হবে।