ঢাকা সিটি কলেজ

ক্যাম্পাসে নতুন সভাপতির প্রবেশ ঠেকাতে দুদিন পাঠদান বন্ধ!

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত অমান্য করে ঢাকা সিটি কলেজের নতুন গভর্নিং বডির সভাপতি অধ্যাপক ড. সাব্বির মোস্তফা খানকে ‘কলেজে প্রবেশে বাধা’ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এ এফ এম মোবারক হোসেনের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, নতুন সভাপতির সঙ্গে দেখা না করার অজুহাতে কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম দুই দিন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তও নিয়েছেন তিনি।

জানতে চাইলে কলেজটির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এ এফ এম মোবারক হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সোমবার (৩০ জুন) ক্লাস সাসপেন্ড ছিল, আর আজ (মঙ্গলবার- ১ জুলাই) এইচএসসি পরীক্ষা ছিল।’ তবে নোটিশ দিয়ে বুধবার (২ জুলাই) বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বলেও স্বীকার করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ।

নতুন সভাপতি কলেজে এসে ফিরে গেছেন কিনা—এমন প্রশ্নের জবাবে মোবারক হোসেন বলেন, ‘আমরা তাকে বলেছিলাম, হঠাৎ করে এই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা শিক্ষকরা মিলে প্রস্তুতি নিয়ে সম্মানের সঙ্গে তাকে বরণ করে নেব। তাকে অনুরোধ করেছিলাম যেন এভাবে হুট করে না আসেন। কিন্তু তিনি সেটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে চলে আসেন। যেসব উচ্ছৃঙ্খল শিক্ষার্থী পরিকল্পিতভাবে কলেজের পরিবেশ নষ্ট করতে চেয়েছে, তাদের সঙ্গে নিয়েই তিনি এসেছিলেন। একজন সম্মানিত সভাপতি এমনটি করবেন—এটা দুঃখজনক ও বিস্ময়কর।’

তিনি আরও দাবি করেন, ‘আমাদের নির্বাচিত অধ্যক্ষ কাজী নিয়ামুল হক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন। গভর্নিং বডিতে তার অনুমোদন হয়েছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেবল আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দেওয়া বাকি।’

প্রসঙ্গত, সরকার পরিবর্তনের পর ঢাকা সিটি কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতিও পরিবর্তন করা হয়। আগের সভাপতির জায়গায় উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে বসানো হয়। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২০২৫ সালের ১২ মে’র নির্দেশনায় বলা হয়, কোনও উপাচার্য কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি হতে পারবেন না। সে অনুযায়ী, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ২৬ জুন নতুন সভাপতি হিসেবে নিয়োগ দেয় বুয়েটের পানি সম্পদ প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. সাব্বির মোস্তফা খানকে। বিদ্যোৎসাহী সদস্য হিসেবে নিয়োগ পান জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলী মো. মিজানুর রহমান।

নতুন সভাপতি ও বিদ্যোৎসাহী সদস্য ১ জুলাই প্রথমবারের মতো কলেজে গেলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তাদের সঙ্গে দেখা করেননি। এমনকি আগের দিন থেকেই কলেজ কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। নতুন সভাপতি ড. সাব্বির মোস্তফা খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলাম। পরে বিষয়টি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে জানিয়ে ফিরে আসি। এটি অত্যন্ত অসৌজন্যমূলক আচরণ।’

কলেজের এক সাবেক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘নতুন সভাপতি আসার খবর জেনেও ইচ্ছাকৃতভাবে তাকে অবজ্ঞা করেছেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় যেহেতু অবৈধভাবে বসানো অধ্যক্ষকে অনুমোদন দেয়নি, তাই তিনিই এখন প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে সরাসরি চ্যালেঞ্জে নেমেছেন।’