X
শনিবার, ০৩ মে ২০২৫
১৯ বৈশাখ ১৪৩২

শিক্ষা খাতে জিডিপির ৬ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়াসহ ১১ দাবি

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট 
০২ মে ২০২৫, ১৮:০৪আপডেট : ০২ মে ২০২৫, ১৮:০৪

ইউনেস্কোর সুপারিশ মোতাবেক শিক্ষা খাতে জিডিপির ৬ শতাংশ বরাদ্দ করাসহ ১১ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (বাকবিশিস)। 

শুক্রবার (২ মে) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এসব দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র সংস্কারে হাত দিয়েছেন। এটি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ ও সুবিশাল কর্মযজ্ঞ। তবে এটির জন্য প্রয়োজন কঠোর পরিশ্রম, একনিষ্ঠ সাধনা আর নিরবচ্ছিন্ন সময়। রাতারাতি এই মহৎ কার্য সম্পাদন করা সম্ভব নয়, শুরু করাকে আমরা স্বাগত জানাই। তবে দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, ১১টি বিষয়ের উপর ১১টি সংস্কার কমিশন গঠিত হয়েছে, কিন্তু শিক্ষার জন্য কোনও শিক্ষা কমিশন গঠিত হয়নি, অথচ যেকোনও দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য শিক্ষা হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। 

দেশের বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হচ্ছে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী দিয়ে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, তবে একই কারিকুলাম ও সিলেবাসে পাঠদান করা হলেও এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা মাত্র এক হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া, ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা এবং পাঁচ শত টাকা চিকিৎসা ভাতা পেয়ে থাকেন। অবসরে যাওয়ার পরেও ৩-৪ বছরেও অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পাচ্ছেন না। উপরন্তু অন্যায়ভাবে বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কর্তন করা হচ্ছে। ইউনেস্কোর সুপারিশ অনুযায়ী শিক্ষাখাতে জাতীয় বাজেটের ২০ শতাংশ অথবা জিডিপি'র ৬ শতাংশ বরাদ্দ করার কথা থাকলেও ধারাবাহিকভাবে জিডিপির মাত্র ২ শতাংশের আশেপাশে বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। বাকবিশিস মনে করে এই বরাদ্দ ন্যূনতম ৪ শতাংশ করলেই শিক্ষা খাতের বিরাজমান সমস্যার বিরাট অংশ সমাধান করা সম্ভব।

এসময় তারা তাদের ১১ দফা দাবি তুলে ধরেন। সেগুলো হলো- 

১. শিক্ষাব্যবস্থার জাতীয়করণ চাই, বিচ্ছিন্ন-বিক্ষিপ্ত সরকারিকরণ নয়। ইউনেস্কোর সুপারিশ মোতাবেক শিক্ষা খাতে জিডিপি'র ৬ শতাংশ বরাদ্দ করতে হবে।

২. সরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের ন্যায় এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদেরও শতভাগ উৎসবভাতা, বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসাভাতা প্রদান করতে হবে।

৩. অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ১১টি বিষয়ের উপর গঠিত ১১টি সংস্কার কমিশনের মতো শিক্ষা বিষয়ের উপর শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করতে হবে।

৪. উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজ এবং উচ্চ মাধ্যমিক কলেজের জ্যেষ্ঠ প্রভাষকের পদ বাতিল করে পূর্বের ন্যায় সহকারী অধ্যাপকের পদ চালু করতে হবে।

৫. বেসরকারি কলেজে অনার্স ও মাস্টার্সসহ বিভিন্ন পর্যায়ে নিয়োগকৃত শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করাসহ নন এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অবিলম্বে এমপিওভুক্ত করতে হবে।

৬. বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য সরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের ন্যায় অবসর সুবিধা প্রদান করতে হবে। তবে এই বিধান না হওয়া পর্যন্ত অবসরে যাওয়ার তিন মাসের মধ্যেই কল্যাণ ট্রাস্ট ও অবসর তহবিলের টাকা প্রদান করতে হবে। অবসর ও কল্যাণ ট্রাস্টের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ করতে হবে।

৭. বেসরকারি শিক্ষকদের বদলির জন্য দ্রুত নীতিমালা প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন করতে হবে। বেসরকারি কলেজে সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপকের পদ সৃষ্টি করতে হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের চাকরির বয়সসীমা ৬৫ বছর করতে হবে।

৮. শিক্ষা প্রশাসনে বেসরকারি শিক্ষকদের আনুপাতিক হারে পদায়ন করতে হবে।

৯. অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে পূর্বের ন্যায় অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে নিয়োগ প্রদান করতে হবে এবং অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগও শিক্ষক নিয়োগের ন্যায় এনটিআরসিএ বা অন্য কোনো বিকল্প শিক্ষক নিয়োগ কমিশনের মাধ্যমে করতে হবে।

১০. সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টির জন্য শিক্ষকদের উপর অসত্য অপবাদ দিয়ে হামলা, লাঞ্ছনা, হয়রানি ও চাকরিচ্যুতি বন্ধ করতে হবে।

১১. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বায়ত্তশাসন দিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ড. নুর মোহাম্মদ তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরসহ অন্যান্য শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন। 

/এএজে/ইউএস/
সম্পর্কিত
খিলগাঁওয়ে পৃথক ঘটনায় দুই শিশুর মৃত্যু
রাজধানীতে মোটরসাইকেল ধাক্কায় পথচারী নিহত, আহত স্বামী-স্ত্রী
কেন আবারও আন্দোলনে যাচ্ছেন সহকারী প্রাথমিক শিক্ষকরা?
সর্বশেষ খবর
ডি ব্রুইনার গোলে তিনে ম্যানসিটি
ডি ব্রুইনার গোলে তিনে ম্যানসিটি
‘কর্মীদের আর্থিক নিরাপত্তা ছাড়া গণমাধ্যম স্বাধীন হবে না’
মুক্ত গণমাধ্যম দিবস‘কর্মীদের আর্থিক নিরাপত্তা ছাড়া গণমাধ্যম স্বাধীন হবে না’
খিলগাঁওয়ে পৃথক ঘটনায় দুই শিশুর মৃত্যু
খিলগাঁওয়ে পৃথক ঘটনায় দুই শিশুর মৃত্যু
রাজধানীতে মোটরসাইকেল ধাক্কায় পথচারী নিহত, আহত স্বামী-স্ত্রী
রাজধানীতে মোটরসাইকেল ধাক্কায় পথচারী নিহত, আহত স্বামী-স্ত্রী
সর্বাধিক পঠিত
সাবেক এমপি ও বিএনপি নেতার ওপর দিনে সশস্ত্র হামলা, রাতে বাড়িতে আগুন
সাবেক এমপি ও বিএনপি নেতার ওপর দিনে সশস্ত্র হামলা, রাতে বাড়িতে আগুন
আগে রওনা দিয়েও এড়ানো গেলো না ‘নোটাম’, শাহজালালের ফ্লাইট গেলো ওসমানীতে
আগে রওনা দিয়েও এড়ানো গেলো না ‘নোটাম’, শাহজালালের ফ্লাইট গেলো ওসমানীতে
দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয় আটক
দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয় আটক
‘স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় ফার্মাসিস্ট যুক্ত করার কথা ভাবছে সরকার’
‘স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় ফার্মাসিস্ট যুক্ত করার কথা ভাবছে সরকার’
শৃঙ্খলা ফেরাতে রাস্তায় নামলেন ওসি
শৃঙ্খলা ফেরাতে রাস্তায় নামলেন ওসি