প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ ও প্রতিবেদকের ভাষ্য

‘কলেজ সরকারি, চলে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়’ শিরোনামে গত ২৮ জুন বাংলা ট্রিবিউনে প্রকাশিত একটি সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন শরীয়তপুরের গোসাইহাটের সরকারি শামসুর রহমান কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. হারুন-অর রশিদ।

সংবাদের লিখিত প্রতিবাদ জানিয়ে অধ্যক্ষ বলেছেন, ‘প্রকাশিত সংবাদে প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হওয়ার যে বক্তব্য উল্লেখ করা হয়েছে তা মিথ্য, বানেয়াট ও ভিত্তিহীন। প্রকৃতপক্ষে আমার সঙ্গে প্রতিবেদকের কোনও আলোচনা বা কথা হয়নি।’

প্রকাশিত সংবাদের বিষয়ে অধ্যক্ষ এমন দাবি করলেও প্রতিবেদকের সঙ্গে গত ১৩ জুন মোবাইল ফোনে কথা হয়েছে। জানতে চাওয়া হয়েছিল প্রভাষক সাইফুল ইসলামের বিষয়ে আদালতের নির্দেশ মানার জন্য মন্ত্রণালয় চিঠি দিয়েছে সে বিষয়ে সর্বশেষ কী অবস্থায় আছে? অধ্যক্ষ বলেন, ‘এটার সর্বশেষটা ঠিক আমিও জানি না, মন্ত্রণালয়ের এ বিষয়ে সঙ্গে যারা জড়িত, যারা এই কাজ করেছেন তারা বলতে পারবেন। আমি নতুন এসেছি।

গত ৩০ এপ্রিল প্রভাষক সাইফুল ইসলামকে প্রভাষক হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেয় মন্ত্রণালয়। এই সময়ের আগেই সরকারি শামসুর রহমান কলেজ অধ্যক্ষ পদে যোগদান করেন বলে স্বীকার করেন অধ্যাপক মো. হারুন-অর রশিদ। গত ৩০ এপ্রিল মন্ত্রণালয় চিঠি দেওয়া হয়েছে চিঠি পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে অধ্যক্ষ বলেন, ‘এ ব্যাপরটি টোটালি আমি ড্রিল করি না। পুরোটাই ডিল করে কলেজের প্রতিষ্ঠাতারা।’

অধ্যক্ষ মো. হারুন-অর রশিদ প্রতিবাদপত্রে উল্লেখ করেন, বর্তমানে কলেজটি সরকারি এবং আমি সরকার কর্তৃক দায়িত্বপ্রাপ্ত। তাই সরকারি নির্দেশনা মতে আমি আমার দায়িত্ব পালন করে আসছি। কলেজটি সেরকারি থাকা অবস্থায় সাবেক অধ্যক্ষ মৌজে আলী হাওলাদার সাহেবের বিষয়ে যে বক্তব্য প্রদান করা হয়েছে, তার সঙ্গে অত্র দফতরে রক্ষিত দলিলপত্র ও রেকর্ড মোতাবেক কোনও মিল নেই। যাতে উক্ত প্রতিবেদনটি মিথ্য ও বানোয়াট মর্মে প্রতিয়মান হয়।’

এ ক্ষেত্রে প্রতিবেদকের বক্তব্য, ‘প্রতিবেদনে বেসরকারি কলেজ থাকার সময়ের অভিযোগ উঠে আসলেও সাবেক অধ্যক্ষ মৌজে আলী হাওলাদার সাহেবের বিষয়ে কোনও বক্তব্য এই প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়নি। এমনকি তার নামও উল্লেখ করা হয়নি প্রকাশিত প্রতিবেদনে।’

অধ্যক্ষের নতিদীর্ঘ প্রতিবাদলিপির একাংশে বলা হয়, ‘পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি তার (প্রভাষক সাইফুল ইসলাম) বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ তদন্ত করে সাবেক শিক্ষক সাইফুল ইসলামকে চাকরি হতে অপসারণের সুপারিশ করে। ওই তদন্ত কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর তাকে চূড়ান্ত বরখাস্ত করেন। কলেজ কর্তৃপক্ষ তাকে চাকরিচ্যুত করেছে, এমন দাবি সঠিক নয়।’

এ বিষয়ে প্রতিবেদকের বক্তব্য, ‘উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রভাষক সাইফুল ইসলামকে প্রভাষক পদে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। অথচ মন্ত্রণালয়ের আদেশ মানেননি অধ্যক্ষ। বরখাস্ত সঠিক কিংবা বেঠিক তার চেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে আদালতের নির্দেশনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রভাষক পদে দায়িত্ব পালনের আদেশ দিয়েছে অধ্যক্ষকে। গত ৩০ এপ্রিল এই নির্দেশ দিলেও এখন পর্যন্ত আদেশ বাস্তবায়ন করেননি অধ্যক্ষ।’

প্রতিবাদলিপিতে আরও বলা হয়, ‘২০২৩ সালের ১০ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় সাইফুল ইসলামকে পুনর্বহালের জন্য অধ্যক্ষ বরাবরে নির্দেশ দিয়ে পত্র জারি করার পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় গত ২০২৪ সালের ২৪ মার্চ পুনর্বহাল পত্রটি বাতিল করেন। পরবর্তী সময়ে গত ২০২৫ সালের ৩০ এপ্রিল সাবেক শিক্ষক সাইফুল ইসলামকে দায়িত্ব পালনের জন্য পত্র দেওয়া হয়। যেহেতু কলেজটি সরকারি এবং রিট পিটিশনটিও বিচারাধীন বিধায় পদ সৃষ্টি না করে এবং সামগ্রিক দিক বিবেচনা করে কীভাবে বেতন ভাতা প্রদান করা হবে. সে বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা চেয়ে গত ১৩ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। যাহার পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার অপেক্ষায় রয়েছি।’

আরও পড়ুন:

কলেজ সরকারি, চলে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়!