আজ (২৮ মে) অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতির নির্বাচন। কিন্তু বরাবরের মতো নির্বাচনের মাত্র দুদিন আগে তিন মাসের স্থগিতাদেশ আসে উচ্চ আদালত থেকে। হাইকোর্টের আদেশ আসে নাসির উদ্দিন নামের একজন প্রযোজকের রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে।
লিখিত বক্তব্যে প্রযোজক নেতা খোরশেদ আলম খসরু বলেন, 'নাসির উদ্দিন নামক রিট আবেদনকারী খোরশেদ আলম খসরু, শরীফ উদ্দিন খান দীপু, শামসুল আলম ও মনতাজুর রহমান আকবরের প্রার্থীতা অবৈধ- এই মর্মে আবেদন করে নির্বাচন তিন মাসের জন্য স্থগিত করিয়েছেন। তার কাছে আমার প্রশ্ন, উনি যে দোষে আমাদের প্রার্থীতা বৈধতার প্রশ্ন তুলেছেন একই দোষে তো অপর প্যানেলের কামাল মোহাম্মদ লিপু, আতিকুর রহমান লিটন, মোহাম্মদ হোসেন ও জাহিদ হোসেন'রাও দুষ্ট। তাহলে উনি তাদের বিরুদ্ধে আবেদন করলেন না কেন?'
পরবর্তীতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে খসরু বলেন, 'সংঘবিধি অনুযায়ী টানা ছয় বছর কেউ সমিতির নির্বাচন করতে পারবেন না। কিন্তু তারা রিট করেছেন টিও অনুযায়ী- অর্থাৎ পরপর তিন মেয়াদে কেউ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না এ মর্মে। কিন্তু কোন সংগঠন চলে তার সংঘবিধি অনুযায়ী? আমাদের সংঘবিধির নিয়ম অনুযায়ী টানা ছয় বছরের বেশি কেউ পদে থাকলে পরবর্তী দুই বছরের জন্য প্রার্থী হতে পারবে না। সে অনুযায়ী প্রথমে আমরা দুই বছর ক্ষমতা থাকার পর দেড় বছর প্রশাসক সমিতি চালিয়েছেন। এরপর আবার দুই বছর সমিতি নির্বাচিত হওয়ায় আবারও দেড় বছর প্রশাসক। এরপর লিপু সাহেবরা ক্ষমতা থাকাকালীন সময়ে দুই বছর পূর্তির ছয় মাস আগে আমরা পদত্যাগ করি। তার অর্থ আমরা কেউই টানা ছয় বছর ক্ষমতায় ছিলাম না।’
বোঝা যাচ্ছে আপনাদের উভয় প্যানেলেই অযোগ্য প্রার্থী আছেন আইনত, সমঝোতার আগে তাহলে কি আপনারা এসব নিয়ে কথা বলেননি? এমন প্রশ্নের জবাবে খসরু-আলম প্যানেলের আলম বলেন, 'আমরা কিন্তু ওদের পাঁচজনের নামে আগে অভিযোগ জানিয়ে রেখেছিলাম। নাসির উদ্দিনও আমাদের চারজনের নামে অভিযোগ জানিয়ে রেখেছিলেন। যখন মতলুব হোসেন ও ফরিদুর রেজা সাগরের নেতৃত্বে মিটিং হয় সমঝোতার তখন আমরা অভিযোগ তুলে নেওয়ার কথা বলি। নাসির উদ্দিনের অভিযোগ তুলে নেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছিলেন আবদুল আজিজ। কিন্তু সমঝোতা স্বাক্ষরের একদিন আগে আজিজ ভারত চলে যান, যদিও রিটের রায় এর আগেই হয়েছিল- যা তিনি গোপন রাখেন।'
প্রযোজক আবদুল আজিজের বিরুদ্ধে হাজারও অভিযোগ থাকলেও তাকে নির্বাচনে সভাপতি বানানোর জন্য সমঝোতার কারণ কী? ‘তার (আজিজ) যত অনিয়ম সেগুলোকে ঠিক করতেই একটা নির্বাচিত সমিতির দরকার ছিল। এছাড়া এক বছর এক বছর করে সভাপতি হবার জন্য নতুন কমিটি ক্ষমতায় আসার পরে ছয় মাসের ভিতরে সংঘবিধির পরিবর্তন আনার জন্য সমঝোতা মিটিংয়েও কথা হয়েছিল। আর গত ষোল বছরে আট বছর প্রশাসক সমিতি চালাচ্ছেন, প্রত্যেকবারই মামলা-মোকাদ্দমা হচ্ছে নির্বাচনের আগে। এবার যাতে তা না হয়, তার জন্যই এ সমাঝোতা হয়েছিল’- বললেন প্রবীণ নির্মাতা ও প্রযোজক কাজী হায়াত।
দুপুর একটায় অনুষ্ঠিত এ সভায় আরও জানানো গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সমিতির প্রশাসক বরাবর একটি চিঠি দিয়ে জাজ মাল্টিমিডিয়ার চেয়ারম্যান আবদুল আজিজ তাদের বিরুদ্ধে সমিতির নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য আবেদন করেন এবং সমিতির নিয়ম না মানার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এ সংক্রান্ত কাগজের একটি কপিও সম্মেলনে দেওয়া হয়।
হাইকোর্টে রিট আবেদনকারী নাসির উদ্দিন 'অনেক দামে কেনা' ছবির প্রযোজক বলে জানানো হয়। কিন্তু পোস্টারে কোথাও তার নাম নেই- ছবিটির একটি পোস্টার প্রদর্শন করে জানান এই প্যানেলের শামসুল আলম।
এদিকে একই ইস্যুতে জাজ মাল্টিমিডিয়া আজ শনিবার সন্ধ্যা সাতটায় পাল্টা সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে নিজ কার্যালয়ে।
/জেডএ/এমএম/