দুই বছর পর মঞ্চে উঠছে ‘বাঁধ’

প্রায় দুই বছরের বিরতির পর আবারও মঞ্চে উঠছে শওকত ওসমানের গল্প অবলম্বনে নাটক ‘বাঁধ’। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির প্রযোজনায় এই নাটকটির নাট্যরূপ ও নির্দেশনা দিয়েছেন মোহাম্মদ বারী। বিভিন্ন নাট্যদলের শিল্পীরা নাটকটিতে অভিনয় করছেন। রবিবার(৩১ জুলাই) সন্ধ্যা ৭টায় সেগুনবাগিচার জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে নাটকটির প্রদর্শনী হবে।

‘বাঁধ’ নাটকের দৃশ্য।‘বাঁধ’ নাটকের নির্দেশক মোহাম্মদ বারী বলেন, ‘বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি দেশব্যাপি সাহিত্য-নির্ভর নাট্য রচনা ও নির্মাণের আয়োজন করে। এ কর্মসূচির আওতায় ২০১৪ সালের ১১ জুলাই নাটকটি মঞ্চে আসে। কিন্তু দুটি প্রদর্শনীর পর আর এটির প্রদর্শনী হয়নি। এবার নাটকটি পুনঃমঞ্চায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখন থেকে নিয়মিতভাবে নাটকটির প্রদর্শনী হবে।’ 

নাটকটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করছেন তৌফিকুল ইসলাম ইমন, সাইফ সুমন, এ কে আজাদ সেতু, শাকিল সিদ্বার্থ, এহসানুর রহমান, বাকার বকুল, মোহাম্মদ বারী, হাসনাত রিপন, এজাজ বারী, শফিকুল ইসলাম, কাজী রাকিব, ম. সাঈদ, মেরিনা মিতু, রফিকুল ইসলাম, কান্তা জামান, এইচ এম মোতালেব, মিন্টু সর্দ্দার, শাহরিয়ার সোহাগ, মাহফুজ সুমন, বিপাশা মন্ডল, মাহিয়া নূর প্রমুখ।
নাটকের গল্পে দেখা যাবে, নদীবর্তী প্রান্তিক এক জনপদ নিয়ামত নগর। এই গ্রামের দুই জনগোষ্ঠী উত্তরপাড়া ও দক্ষিণপাড়া পরস্পরের আজন্ম শত্রু। এক মধ্যরাতে আকস্মিক বন্যায় ভেসে যাওয়া নিয়ামত নগরের গৃহস্থ নারী-পুরুষ-শিশু-বৃদ্ধ আশ্রয় নেয় জেলাবোর্ডের ভঙ্গুর বাঁধে। এ বাঁধেও বিভক্তি রেখা টেনে উত্তরপাড়ার মানুষ আশ্রয় নেয় বাঁধের উত্তর অংশে, আর দক্ষিণপাড়ার মানুষ দক্ষিণ অংশে। বাঁধের ক্রমাগত ভাঙ্গনের ফলে একসময় সকলে এক জায়গায় আশ্রয় নেয়। কিন্তু চরম সংকটকালেও প্রতিশোধ প্রতিহিংসায় হিংস্র হয়ে ওঠে উভয় পক্ষ। অবশেষে মহাপ্লাবনে ভেসে যাওয়া পিঁপড়ার দল থেকে শিক্ষা নেয় সকলে- ঐক্যের কোনও বিকল্প নেই।
‘বাঁধ’ নাটকের দৃশ্য।নাটক প্রসঙ্গে নির্দেশক মোহাম্মদ বারী বলেন, ‘‘এই নাটকের পটভূমিতে রয়েছে বিভাজিত সমাজের উগ্রবাদিতা। জাতীয় ও বৈশ্বিক রাজনীতি এবং সামাজিক বাস্তবতায় বিপরীতমুখি চিন্তা ও দর্শনের সহঅবস্থান আজ ভয়াবহ হুমকির মুখোমুখি। উগ্রবাদ ও ভেদচিন্তার দর্শন শেষ পর্যন্ত ধর্মের নামে আজ ভয়ংকর জঙ্গীবাদে রূপ নিয়েছে। তাই বলা যায়, ‘ওই বাঁধে’ গল্প থেকে রচিত নাটক ‘বাঁধ’ মূলত উগ্রবাদ ও ভেদচিন্তার বিরুদ্ধে মানবিক ঐক্যের জয়গান।’’
নাটকটির মঞ্চ ও প্রকাশনা ডিজাইন করেছেন শাহীনুর রহমান, কোরিওগ্রাফি করছেন বাকার বকুল, সংগীত পরিকল্পনা করছেন রিফাত আহমেদ নোবেল, আলোক পরিকল্পনা করছেন অম্লান বিশ্বাস, পোশাক পরিকল্পনা করছেন এনাম তারা সাকী। প্রযোজনা অধিকর্তা এজাজ বারী।
/এস/এমএম/