এগিয়ে যারা
মঞ্চ ও নাটক মাধ্যমের শিল্পীদের বেশিরভাগই উচ্চশিক্ষিত। একই সঙ্গে সিনেমার সিনিয়র তারকাদের অনেকেই উচ্চশিক্ষায় সার্টিফিকেটধারী। ঢাকার ছবির শুরুটাও অনেক বর্ণাঢ্য।
চিত্রনায়ক-প্রযোজক অনন্ত জলিলের দাবি- যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক করেছেন তিনি। অন্যদিকে অনেক আগেই শান্ত-মারিয়ম থেকে ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ে গ্র্যাজুয়েশন করেছেন টিভি ও চলচ্চিত্র অভিনেত্রী সোহানা সাবা।
খ্যাতিমান খল অভিনেতা মিশা সওদাগর ব্যবস্থাপনায় পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। একই প্রতিষ্ঠানের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতায় পড়েছেন চিত্রনায়ক ফেরদৌস। সিনিয়র অভিনেত্রী ওয়াহিদা মল্লিক জলি এই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করেছেন বলে দাবি করেন চিত্রনায়ক জায়েদ খান। ইডেন মহিলা কলেজ থেকে বাংলায় অনার্স-মাস্টার্স করেছেন অভিনেত্রী রুনা খান। ফিল্ম স্টাডিজের ওপর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক শেষ করেছেন স্বাগতা। চিত্রনায়ক রিয়াজের কলেজ জীবন শুরু হয় যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজে এইচএসসিতে ভর্তির মাধ্যমে। সেখান থেকে এইচএসসি পাস করে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়ে বাংলাদেশ এয়ার ফোর্স একাডেমিতে ১৯৯১ সালের জুন পর্যন্ত অধ্যয়ন ও প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএসসি সম্পূর্ণ করেন।
অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি ময়মনসিংহ আনন্দমোহন কলেজ থেকে ইংরেজিতে অনার্স করেছেন। চিত্রনায়িকা আলিশা প্রধান ইংলিশ মিডিয়াম প্রতিষ্ঠান থেকে এ লেভেল সম্পন্ন করে অর্থনীতি পড়ছেন ইডিক্সেল-এ। আর নায়িকা আঁচল স্ট্যামফোর্ড থেকে বিবিএ সম্পন্ন করেছেন। অর্চিতা স্পর্শিয়া ইউল্যাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ শেষ করেছেন। মডেল-অভিনেত্রী পিয়া লন্ডনকেন্দ্রিক একটি কলেজে আইন বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করছেন এখনও।
হালের তরুণ প্রজন্মের তারকাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অনেকে শিক্ষাজীবন ধারাবাহিক রাখলেও নিয়মিত ক্লাস করতে পারছেন না। চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন। একই অবস্থা চিত্রনায়িকা নুসরাত ফারিয়ারও। তিনি এআইইউবিতে বিবিএ’তে অষ্টম সেমিস্টারের ছাত্রী। সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজে পড়াশোনা করেছেন পিয়া বিপাশা। এখন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক করছেন।
নতুনদের মধ্যে সাবিলা নূর নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। অভিনয়শিল্পী জোভানও একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক করছেন। মডেল বিথী রানী সরকার ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ে (শান্তা মারিয়াম-উত্তরা ক্যাম্পাস), মৌসুমী হামিদ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে খুলনার একটি কলেজে অনার্সে পড়ছেন বলে জানিয়েছেন। তবে তিনি কাজের ব্যস্ততার কারণে নিয়মিত ক্লাসে যেতে পারেন না।
জানা যায়, বিদ্যা সিনহা মিম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও বেশি দিন ক্লাস করতে পারেননি। নতুন করে ভর্তি হয়েছেন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানকার পড়াশোনাও শেষ করতে পারেননি এ লাক্স সুন্দরী। নিয়মিত ক্লাস না করেও শিক্ষা জীবন চালিয়ে যাচ্ছেন চিত্রনায়ক বাপ্পী চৌধুরী। তিনি জানান, ক্লাসে না গেলেও নিয়মিত পরীক্ষাগুলোয় অংশ নেন। পাশাপাশি শিডিউল না থাকলে ক্লাস করেন তিনি। তমা মির্জা আইনে পড়ছেন মানারাত ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ে। ইতোমধ্যে পরীক্ষা দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
চলচ্চিত্র অঙ্গনের অনেকে বলছেন, বড় নায়ক নায়িকারা তাদের শিক্ষাজীবন নিয়ে কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন না। ব্যস্ততা ও খ্যাতির খাতিরেই পড়াশোনা থেকে ক্রমশ দূরে সরে যান তারা।
চিত্রনায়িকা মৌসুমীর শিক্ষাজীবন নিয়ে কোনও তথ্য জানা যায়নি। বাংলাদেশের শিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় জনমত ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সম্প্রতি তিনি ও বাংলাদেশের খ্যাতনামা জাদুকর জুয়েল আইচ ইউনিসেফ অ্যাডভোকেটের দায়িত্ব পালন করেছেন।
জানা যায়নি এক সময়ের স্বনামখ্যাত চলচ্চিত্রাভিনেত্রী শাবনুরের শিক্ষা জীবনের কোনও খবরও। তবে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় চলচ্চিত্র বিষয়ক পড়াশোনা করেছেন বলে খবর মিলেছে।
এই সময়ে বাংলা সিনেমার সবচেয়ে বড় তারকা চিত্রনায়ক শাকিব খান। অনেক কাছের মানুষও জানেন না তার শিক্ষা জীবন সম্পর্কে। তার এক ছবির প্রযোজক বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, ‘শাকিব খান কাছের মানুষদের বলতে শুনেছেন, তিনি উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন এবং প্রায়শই তাকে বলতে শোনা যায়, তিনি প্রকৌশলী হতে চেয়েছিলেন। কয়েকটি সাক্ষাৎকারে অবশ্য তিনি নিজেকে স্নাতক পাসও দাবি করেছিলেন। ইদানীং বিষয়টি তিনি সচেতনভাবে এড়িয়ে যান। তবে একাধিক ঘনিষ্ট ব্যক্তির মতে শাকিব খান এইচএসসি পাস করেছেন।
এছাড়া নায়িকা সিমলা শৈলকূপা গার্লস স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তিনি শৈলকূপা সরকারী কলেজে উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তি হন। কিন্তু দ্বিতীয় বর্ষে পড়ার সময়ই চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন বলে পড়াশোনার অকাল মৃত্যু ঘটে।
/এসটিএস/এম/এমএম/