উৎসব থেকে খান আতার পাকিস্তানি ছবি বাদ

ছবিতে খান আতাপ্রসঙ্গ পাকিস্তান ও ভারত দ্বন্দ্ব। তবে ভারতের একটি উৎসবে প্রদর্শনী বাতিল হওয়া একটি ছবিকে ঘিরে চলে এলো বাংলাদেশের নামও।
এটি হচ্ছে ‘জাগো হুয়া সাভেরা’। ছবিটি পাকিস্তানের হলেও এতে জড়িয়ে আছেন বাংলাদেশের প্রতিথযশা দুই নির্মাতা। খান আতাউর রহমান ও জহির রায়হান- বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের সোনালি দিনের এ দুই মহাতারকা কাজ করেছিলেন ‘জাগো হুয়া সাভেরা’তে। কেন্দ্রীয় চরিত্র কাসিম হিসেবে ছিলেন খান আতা আর ছবির সহপরিচালক জহির রায়হান।
সম্প্রতি ভারতে ১৮তম জিয়ো মামি মুম্বাই চলচ্চিত্র উৎসবে এ চলচ্চিত্রকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। এরপর তোপের মুখে পড়েন আয়োজকরা। ভারত-পাকিস্তানের চলমান উত্তেজনার যে আঁচ চলচ্চিত্র জগতে পড়েছে তারই অংশ হিসেবে উৎসব থেকে ছবিটি বাতিলের দাবি ওঠে। এমনকি আয়োজকদের বিরুদ্ধে জাতীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে মামলাও হয়েছে!
এমন পরিস্থিতিতে চাপের কাছে নতি স্বীকার করে অবশেষে মুম্বাই চলচ্চিত্র উৎসবে ‘জাগো হুয়া সাভেরা’ প্রদর্শন না করার ঘোষণা দিয়েছে জিয়ো মামি কর্তৃপক্ষ। তবে ছবিটি শুধু ‘পাকিস্তানি’ বলেই বাতিল করা হয়েছে এর প্রদর্শনী।
মুম্বাই চলচ্চিত্র উৎসবের নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী ‘জাগো হুয়া সাভেরা’ প্রদর্শন না করার ঘোষণা দিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছেন আয়োজকরা।

জিয়ো মামি কর্তৃপক্ষের দেওয়া ওই বিবৃতিতে বলা হয়, “বর্তমান পরিস্থিতির বিবেচনায় ১৮তম মুম্বাই চলচ্চিত্র উৎসবের ‘ক্লাসিক ধারার’ অংশ হিসেবে ‘জাগো হুয়া সাভেরা’ ছবিটি প্রদর্শন না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’ 

এর আগে শনিবার, মুম্বাইয়ের একটি এনজিওর পক্ষ থেকে আম্বোলি পুলিশ স্টেশনে মামি’র বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। বলা হয়, বর্তমান পরিস্থিতিতে পাকিস্তানি চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা ‘জাতীয় অনুভূতিতে আঘাত’ দেওয়ার সামিল।
এদিকে ‘জাগো হুয়া সাভেরা’ পাকিস্তানি ছবি হলেও এর প্রতিটি ফ্রেমে আটকে আছে বাংলাদেশ। কথাসাহিত্যিক মানিক বন্দোপাধ্যায় রচিত উপন্যাস ‘পদ্মা নদীর মাঝি’র কাহিনি অবলম্বনে চলচ্চিত্রটি নির্মিত হয়। 

এর দৃশ্যধারণ হয়েছিল ঢাকা থেকে ৩০ মাইল দক্ষিণে মেঘনা নদীর তীরের এক জেলেপল্লীতে। ছবিটিতে জেলে কাসিম চরিত্রে খান আতা আছেন। তার সহশিল্পী  কলকাতার তৃপ্তি মিত্র। ১৯৫৯ সালে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানেই এর পুরো কাজ হয়। এ ছবির মধ্য দিয়েই ১৯৬০ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে অস্কারে প্রবেশ করতে পেরেছিল পাকিস্তান। ‘জাগো হুয়া সাভেরা ছবিতে খান আতা

উল্লেখ্য, সম্প্রতি ভারত-পাকিস্তানের রাজনৈতিক উত্তেজনার রেশ দুই দেশের বিনোদন জগতেও পড়েছে। এরই অংশ হিসেবে ভারতে পাকিস্তানি শিল্পীদের নিষিদ্ধ করার দাবি ওঠে। পরে ইন্ডিয়ান মোশন পিকচার্স প্রডিউসার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে ভারতীয় ছবিতে পাকিস্তানি অভিনেতাদের নিষিদ্ধ করা হয়। সর্বশেষ শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) পাকিস্তানি শিল্পীর অভিনয়কৃত যেকোনও চলচ্চিত্র প্রদর্শন না করার ঘোষণা দেয় ভারতীয় চলচ্চিত্র মালিক সমিতি (সিনেমা ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন)। 

/এফইউ/এম/