নিষিদ্ধ প্রসূন আজাদ

আমরা ক্ষুব্ধ ও অপমানিত হয়ে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি: অলীক

সূত্রপাত ফেসবুকে স্ট্যাটাস, ১৮ অক্টোবরের ঘটনা। শুরুটা করেছিলেন প্রসূন আজাদ। পাল্টা স্ট্যাটাসে জবাব ছিল রোকেয়াপ্রাচীর। এরপর সেখানে জড়িয়ে পড়ে টেলিভিশন ডিরেক্টরস গিল্ড, অভিনয়শিল্পী সংগঠন ও অনুষ্ঠান প্রযোজক অ্যাসোসিয়েশন। এদিকে ডিরেক্টরস গিল্ড ২৯ অক্টোবর প্রসূন আজাদকে বয়কট করার ঘোষণা দেয়। বিষয়টিতে সায় দিয়েছে বাকি দুই সংগঠন। এরপর থেকে থেকে বিনোদন জগতে বেশ জমাটি আলোচেনা-সমালোচনা। বিষয়টি নিয়ে এবার বাংলা ট্রিবিউন-এর মুখোমুখি হয়েছেন ডিরেক্টরস গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক ও পরিচালক এস এ হক অলীক-

প্রসূন ও অলীক


বাংলা ট্রিবিউন: আপনারা তো পরিচালক সংগঠন। কেন ও কীভাবে এতে জড়িয়ে পড়লেন?

অলীক: বিষয়টি আমি প্রথম দেখি ১৮ অক্টোবর। প্রসূনের স্ট্যাটাস। দেখি, সেখানে নাম উল্লেখ না করে একজন পরিচালকের বিরুদ্ধে বেশ আপত্তিকর কথা বলা হয়েছে। ভাষা প্রয়োগটা খুবই বাজে। আমি তখন বুঝিঝি। বাক্যগুলো এমন ছিল, তাকে (প্রসূন) কেন সেটে অপমান করল পরিচালক? কেন তার ভাইকে সঙ্গে নিতে চায়নি পরিচালক? তিনি কি অভিনয় না অন্য কিছু চাচ্ছিলেন!
এরপর আমি নিজে থেকে তাকে (প্রসূন) ফোন করি।

বাংলা ট্রিবিউন: কী বলেছিলেন তাকে?

অলীক: আমি তার কাছেই শুনলাম, সে রোকেয়া প্রাচীকে নিয়ে লিখেছে স্ট্যাটাসটি। প্রাচীর বিরুদ্ধেই তার যত অভিযোগ। আমি তাকে বলি, সমস্যা হয়েছে, সেটার সমাধানও হবে। কিন্তু সবার সামনে এভাবে আপত্তিকর ভাষার ব্যবহার করে কেন? আমি বললাম, স্ট্যাটাসটি তুলে নাও। সে আমাকে বলল, আমি জীবনে যা সিদ্ধান্ত নিই, তা কখনও তুলে নিই না!

বাংলা ট্রিবিউন: আপনি কি তাকে সাংগঠনিক কোনও চাপ দিয়েছিলেন?
অলীক:
না। আমি তাকে অনুরোধ করেছি। বলেছি, আমাদের সবার সুন্দর একটা সম্পর্ক থাকা উচিত। ভুল বোঝাবুঝি হতেই পারে। তোমার কোনও অভিযোগ থাকলে, তুমি জানাও। আমাদের কোনও পরিচালকের কোনও অপরাধ থাকে, সেটা আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব। আর তোমার হলে সেটাও আমরা ভাবব। এরপরও আমি অনেক আন্তরিকভাবেও বললাম, আমি তোমার বড় ভাইয়ের মতো। সে হিসেবে অনুরোধ করছি, তুমি এটা প্লিজ তুলে নাও।

বাংলা ট্রিবিউন: আপনি কি রোকেয়া প্রাচীর স্ট্যাটাসটি পড়েছিলেন?
অলীক:
হ্যাঁ। আমার কথাটা হলো প্রসূনের ভাষার ব্যবহার আপত্তিকর। রোকেয়া প্রাচীর স্ট্যাটাসে তা ছিল না। দুই দিন পর প্রসূন আবারও আপত্তিকর স্ট্যাটাস দিল। 

বাংলা ট্রিবিউন: আপনি দুই দিন পর্যন্ত কেন অপেক্ষা করছিলেন? আগেই তো সমাধানে বসতে পারতেন।
অলীক: আমি অনুরোধ করে অপেক্ষা করছিলাম। আর রোকেয়া প্রাচী তো সঙ্গে সঙ্গে আমাদের অভিযোগ করেননি। পরে রোকেয়া প্রাচীও অভিযোগ করলেন প্রসূনের বিরুদ্ধে। এরমধ্যে অনেকে আমাকে ফোন করা শুরু করলেন। আমাদের সংগঠন নিয়ে প্রশ্ন তোলা শুরু করলেন। তাদের অনেকের কথা ছিল, পরিচালকদের একটা সংগঠন থাকা সত্ত্বেও কেন প্রকাশ্যে এমন কাদা ছুঁড়াছুড়ি? এর মাধ্যমে প্রসূন কিন্তু শুধু রোকেয়া প্রাচীকে নয়, পুরো পরিচালক সমাজকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। তাই একটা সিদ্ধান্তে আসাটা জরুরি ছিল। প্রসূন আজাদ। ছবি সাজ্জাদ


বাংলা ট্রিবিউন:
প্রসূনের সঙ্গে পরে যোগাযোগ করেছিলেন? তার ভাষ্য কেমন?

অলীক: আমি মৌখিকভাবে অনুরোধ করার পর সংগঠনের পক্ষ থেকে তাকে একটি নোটিশ পাঠাই। কেন সে একজন পরিচালকের বিষয়ে এমন স্ট্যাটাস দিল- সেটা জানতে ব্যাখ্যা চেয়েছিলাম। কিন্তু সে কোনও সাড়া দেওয়ার প্রয়োজন মনে করেনি। এরপর আমরা আমাদের সিদ্ধান্ত অর্থাৎ এক বছর তাকে বয়কটের ঘোষণা দিই। এই মর্মে একটি চিঠিও তার কাছে গত পরশু (শনিবার) পাঠিয়েছি। 

বাংলা ট্রিবিউন: কিন্তু আপনারা অর্থাৎ পরিচালক গিল্ড কি একজন অভিনয়শিল্পীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার রাখেন? এটা কতটা যৌক্তিক?

অলীক: তাকে নিষিদ্ধ করার অধিকার আমাদের নেই, এটা ঠিক। আমরা তো তাকে নিষিদ্ধ করিনি। আমরা শুধু সিদ্ধান্ত এসেছি, ডিরেক্টরস গিল্ডের ৩৫০ জন পরিচালক প্রসূন আজাদের সঙ্গে কাজ করবে না। আমরা ক্ষুব্ধ ও অপমানিত হয়ে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কারণ এতবার বলার পরও প্রসূন আমাদের কথা শুনেনি। তার স্ট্যাটাস সে সরায়নি। তার কথাবার্তা এখনও আক্রমণাত্মক।

বাংলা ট্রিবিউন: কিন্তু আপনার পরিচালকরাই যদি সেটা না মানেন? তার সঙ্গে কাজ শুরু করেন? তখন কী করবেন?

অলীক: সাংগঠনিক ধারা অনুযায়ী আমরা সে পরিচালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।অলীক

 /এমএম/এম/