এফডিসি থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নায়করাজের মৃতদেহ

রাজ্জাকের জানাযাএফডিসিতে জানাজা আর চলচ্চিত্র পরিবারের সর্বস্তরের সদস্যের শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটের দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের নিয়ে যাওয়া হয়েছে কিংবদন্তি অভিনেতা রাজ্জাকের মৃতদেহ।
এর আগে মঙ্গলবার বেলা ১১টা ১০ মিনিটে তার মৃতদেহ এফডিসিতে আনা হয়। নামে চলচ্চিত্র পরিবারের ঢল। কে আসেননি ছুটে? দেখা মিলেছে নায়ক শাকিব খানেরও। সম্ভবত এবারই প্রথম তিনি এফডিসির কোনও জানাজায় অংশ নিয়েছেন! এর বাইরে যথারীতি হাজির ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, কবরী, সুচন্দা, আলমগীর, ববিতা, রুবেলসহ প্রায় সব প্রজন্মের শিল্পী-কুশলীরা।    
এদিকে এফডিসিতে শ্রদ্ধা জানানোর পর বেলা আড়াইটার দিকে নিয়ে যাওয়া হবে গুলশান আজাদ মসজিদে। সেখানে বাদ আসর আরেকটি জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।

উল্লেখ্য, সোমবার সন্ধ্যা ৬টা ১৩ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে মারা যান নায়ক রাজ্জাক। তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ায় দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
ষাটের দশকের মাঝের দিক থেকে এফডিসিই ছিল রাজ্জাকের দীর্ঘদিনের কর্মস্থল। এখানকার কোথায়ইবা তার পা পড়েনি! সত্তরের দশকে এখানকার ফ্লোরগুলো চাঙা থাকতো তার সুবাদেই। নায়করাজের সিনেমার শুটিং হলো জমজমাট হতো ফ্লোরগুলো। দিনে দিনে ‘নীল আকাশের নিচে’, ‘পিচঢালা পথ’ পেরিয়ে তিনি হয়ে উঠেছিলেন দেশীয় চলচ্চিত্রের ‘রংবাজ’।

সারাজীবন চলচ্চিত্র নিয়েই থেকেছেন রাজ্জাক। অভিনয়ই নয়, এফডিসি তাকে পেয়েছে পরিচালক হিসেবেও। ‘অনন্ত প্রেম’, ‘বদনাম’, ‘অভিযান’, ‘বাবা কেন চাকর’, ‘প্রফেসর’, ‘যোগাযোগ’, ‘সৎ ভাই’ পরিচালনা করে নিজের মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন তিনি।
রূপালি পর্দায় রাজ্জাককে ‘বাবা কেন চাকর’-এর মতো অনেক ছবিতে কাঁদতে দেখা গেছে। চরিত্রের প্রয়োজনে তাঁর সেই কান্না কাঁদিয়েছে দর্শকদের। কান্না কিংবা কমেডি, প্রেম কিংবা বলিষ্ঠ পুরুষের চরিত্রে এমন মানুষের অভিনয় আর দেখা যাবে না বলে এখন সতীর্থরা কাঁদছেন।
শুধু সতীর্থরাই নন, সারাদেশেই হয়তো ছড়িয়ে পড়েছে এই শোক। রাজ্জাক ভক্তদের চোখের কোণেও হয়তো জল জমেছে। ২১ আগস্ট ‘অশ্রু দিয়ে লেখা’ হলো বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের কিংবদন্তির অধ্যায়ের সমাপ্তি।
ছবি: সাজ্জাদ হোসেন