বাইক রাইডার থেকে বিশ্বসুন্দরীর মঞ্চে

জান্নাতুল নাঈম এভ্রিল (ছবি: সাজ্জাদ হোসেন)পড়াশোনা করেন আইন বিষয়ে, কিন্তু জান্নাতুল নাঈম এভ্রিল পরিচিত দেশের হাইস্পিড ‘লেডি বাইক রাইডার’ হিসেবে। মোটরসাইকেলপ্রেমীদের অনেকের কাছেই তিনি পরিচিত! সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তো এ কারণে জনপ্রিয়তাও আছে তার। এখন তিনি সারাদেশে পরিচিত। ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ ২০১৭’ প্রতিযোগিতার বিজয় মুকুট উঠেছে তার মাথায়। এবার বিশ্বজয় করতে ডিসেম্বরে চীনে অনুষ্ঠিতব্য ৬৭তম মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতায় লড়বেন ২০ বছর বয়সী এই তরুণী।

জান্নাতুল নাঈম এভ্রিল (ছবি: সাজ্জাদ হোসেন)মাত্র ১৪ বছর বয়সেই মামার কাছ থেকে বাইক চালানো শিখেছেন এভ্রিল। পারদর্শী হয়ে ওঠার পর এই বাহন নিয়ে বিভিন্ন নৈপুণ্য দেখানো হয়ে ওঠে তার শখ। হাইস্পিড বাইকের প্রতি নারীদের আগ্রহী করতে ইয়ামাহা ব্র্যান্ডের হয়ে কাজ করেছেন তিনি। তাকে বলা হয়ে থাকে নারী বাইক রাইডারদের আইকন। এভ্রিল বললেন, ‘ছোটবেলা থেকে বাইকের প্রতি তার ঝোঁক ছিল। সিসির ব্যাপারটা বোঝার পর সিবিআর ১৫০ সিসি চালাতে শুরু করেন।’

জান্নাতুল নাঈম এভ্রিল (ছবি: সংগৃহীত)শুধু দক্ষ বাইক চালানো নয়, এভ্রিলের আরও গুণ আছে। সাঁতার, বোলিং, গান, জিমন্যাস্টিক পারেন। বিশেষ করে উপহার র্যা পিং করতে পারেন দারুণ। লেডি বাইকার জান্নাতুল নাঈম এভ্রিলকে বন্ধুরা ডাকে ‘মাফিয়া গার্ল’! সাহসিকতা ও প্রতিবাদী চরিত্রের জন্য এবং হাইস্পিডের মোটরবাইক চালানোর ক্ষেত্রে পারদর্শিতার জন্য এই নাম দিয়েছেন তারা। তার কথায়, ‘অনেক ছিনতাইকারী ও ইভটিজারকে ধরেছি আমি। মেয়েদের সাহসী ও অধিকার সচেতন হওয়ার দরকার। অন্যায়ের বিরুদ্ধে নিজেদেরকেই প্রতিবাদ করতে হয়।’

জান্নাতুল নাঈম এভ্রিল (ছবি: সাজ্জাদ হোসেন)আগামীতে নারীর ক্ষমতায়নে কাজ করতে চান এভ্রিল। অবদান রাখার ইচ্ছে আছে বিভিন্ন সামাজিক কাজে। ঢাকা ও চট্টগ্রামের স্বেচ্ছায় রক্তদাতা দুটি গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত আছেন তিনি। এভ্রিল পড়ছেন এলএলবিতে দ্বিতীয় বর্ষে।

আড্ডাপ্রিয় এই মেয়েটি বন্ধুদের কেউ মনমরা থাকলে এক তুড়িতে হাসি ফুটিয়ে তুলতে পারেন। আর তার মন ভালো হয়ে যায় অস্কার এলে! বিশ্ব চলচ্চিত্রের সবচেয়ে মর্যাদাসম্পন্ন পুরস্কার নয়, অস্কার তার পোষা বিড়ালের নাম। সে থাকে এভ্রিলের ঘরে। তিনি বললেন, ‘ও অনেক সুন্দর। আমার কাছে এসে লাফিয়ে কোলে উঠলে খুব ভালো লাগে। তখন সব কষ্ট ভুলে যাই।’

জান্নাতুল নাঈম এভ্রিল (ছবি: সংগৃহীত)এভ্রিলের কাছে আপাতত অস্কার না থাকলেও চলছে! এমনিতেই তার মুখে এখন চওড়া হাসি। বিশ্বের সুন্দরীদের সঙ্গে লড়ার সুযোগ পেলে আনন্দে ভাসারই কথা। শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বসুন্ধরা ইন্টারন্যাশন্যাল কনভেনশন সিটির নবরাত্রী হলে ‘‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ ২০১৭’ প্রতিযোগিতার গ্র্যান্ড ফিনালেতে শেষ হাসি হেসেছেন তিনিই। এবার বিশ্বসুন্দরীর মঞ্চে হাসলেই হয়!