শুটিংয়ে শিশুকে মানসিক চাপ, মায়ের আইনি চিঠি

পিয়া-রাজ্যর সেলফি ও নির্মাতা আদনানবিজ্ঞাপনচিত্রে কাজ করার সময় এক শিশুকে মানসিক চাপ দেওয়ার অভিযোগ এনে আইনি চিঠি পাঠিয়েছেন তার মা।
২৮ অক্টোবর একটি বিজ্ঞাপনের শুটিংয়ের সময় এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন মা নায়লা পারভীন পিয়া। তিনি নির্মাতা আদনান আল রাজীব ও তার টিমকে (পরিচালক রান আউট ফিল্মস লিমিটেড) শিশু অধিকারের পরিপন্থী ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘনের অভিযোগে চিঠিটি পাঠিয়েছেন।
মা নায়লা পারভীন পিয়া বলেন, ‘শুটিং-স্পটে মানসিক চাপ প্রয়োগ করে শুটিং থেকে বাদ দেওয়া হয় তার চার বছরের ছেলেকে।’
গত ৫ নভেম্বর  রাজ্য ও তার মায়ের পক্ষে আইনি চিঠিটি পাঠিয়েছেন আইনজীবী এলিনা খান।
এতে বলা হয়, শিশু রাজ্যকে শুটিংয়ে নিয়ে তার সঙ্গে জোরে কথা বলা হয়। তার সামনে অন্য শিশুকে কাজ করিয়ে রাজ্যকে মানসিক নির্যাতন, কষ্ট দেওয়া ও ক্ষতি করা হয়েছে।
বিষয়টি শিশু অধিকারের পরিপন্থী ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। পরিচালক হিসেবে ওই বিষয়ে সাত দিনের মধ্যে মতামত জানানোর অনুরোধ করা হয়েছে নির্মাতা আদনান আল রাজীবকে। না হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন আবেদনকারী।
রাজ্যের মা পিয়া বলেন, ‘রাজ্যের সামনেই অন্য একটি শিশুকে দিয়ে কাজটি করানো হয়। এমনকি একটা সময় সে শিশুটিও ভয়ে কেঁদে ফেলে। এখানে দুটি কাজ তারা করেছে, ছোট বাচ্চার সঙ্গে স্বাভাবিক আচরণ করা হয়নি। দ্বিতীয়ত, অন্য একটি শিশুকে তার সামনেই কাজ করিয়ে নিয়ে তাকে মানসিক সঙ্কট বা অপমান করা হয়েছে। আর এ কাজটি করেছেন আদনান আল রাজীবের সহকারী শামী। রাজীব সেসময় সেটে উপস্থিত ছিলেন।’
বিষয়টি নিয়ে আদনান আল রাজীরেব সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমি অভিযোগটি শুনেছি। তবে কোনও চিঠি আমার হাতে আসেনি। বিষয়টি নিয়ে আজ আমরা মিটিং করবো। খুঁজে বের করবো আসলে সেদিন কী ঘটেছিল। যদি আমাদের ভুল হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আমরা ক্ষমা চাইব। তবে তিনি (পিয়া) যে অভিযোগ করেছেন, তা মিথ্যা হলে তাকে অনুতপ্ত হতে হবে। আর আমরা অনেক দিন ধরে কাজ করে আসছি, কখনও তো কেউ আমাদের এমন অভিযোগ করেননি। এর ভেতরে ভিন্ন কারণও থাকতে পারে। আসলে আমি নোটিশ ও মিটিংয়ের পরই পুরো বিষয়টি বলতে পারব।’
এদিকে রাজ্যর মা পিয়া জানান, ফেসবুকে তার ছেলের ছবি দেখে বিজ্ঞাপনী প্রতিষ্ঠানটি নিজেরাই তার সঙ্গে যোগাযোগ করে। প্রথমে ‘না’ বললেও পরে রাজি হন। এরপর ২৮ অক্টোবর সকালে শুটিংয়ের জন্য ডাকা হয়। শুটিং শুরু হবে, শুটিং সেটে সহকারী পরিচালক শামী রাজ্যকে ডাকেন। শামী জোরে কথা বললে রাজ্য কেঁদে ফেলে। এসময় শামী বলেন, ওকে দিয়ে হবে না, ওকে সেট থেকে বের করে দাও!
পিয়া বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম- ওরা রাজ্যকে বোঝাবে। একটা ছোট বাচ্চা কয়েক দিন ধরে প্রস্তুতি নিয়ে এখানে এসেছে। অপরিচিত একজন মানুষের এমন আচরণে সে অভ্যস্ত নয়। ভয় পাওয়াটা স্বাভাবিক। এক মিনিট সময় না দিয়ে ওকে বের করে দেওয়া হয়। এটা খুবই অমানবিক এবং অসম্মানের।’
বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) দুপুরের পর পিয়া জানান, আজ সরাসরি রান আউট ফিল্মস লিমিটেড এর অফিসে গিয়ে তিনি নোটিশটি আবারও দিয়ে এসেছেন। ৭ দিনের মধ্যে চিঠির জবাব না পেলে তারা পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেবেন।