ইউটিউবে ‘দেসপাসিতো’ হ্যাকড!

ইউটিউবে ‘দেসপাসিতো’ হ্যাক হওয়ার পরইউটিউবে ৫০০ কোটি বারেরও বেশি দেখা ‘দেসপাসিতো’ গানের মিউজিক ভিডিও হ্যাক করা হয়েছে। হ্যাকাররা এই ক্লিপের কাভার ইমেজ বদলে বন্দুক হাতে মুখোশধারী একদল মানুষের একটি ছবি জুড়ে দেয়। এ কারণে ত্রুটি মেটানো পর্যন্ত সাময়িকভাবে ভিডিওটি অফলাইনে রাখা হয়েছিল। পরে সেটি ঠিক করা হয়।
এদিকে মিউজিক হোস্টিং সার্ভিস ভেভোতে এক ডজনেরও বেশি গান একইরকম ক্ষতির শিকার হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে শাকিরা, সেলেনা গোমেজ ও টেলর সুইফটের মতো বিখ্যাত গায়িকাদের গান।
হ্যাকারদের এই দল নিজেদের ‘প্রোসক্স’ ও ‘কারয়েশ’ বলে পরিচয় দিচ্ছে। তারা কিছু ভিডিওর শিরোনাম নিজেদের বক্তব্য দিয়ে বদলে ফেলেছিল।
বিবিসিকে ইউটিউবের একজন মুখপাত্র বলেন, ‘মুষ্টিমেয় ভেভো চ্যানেলে অস্বাভাবিক আপলোড অ্যাক্টিভিটি দেখে সহযোগী প্ল্যাটফর্মকে নিয়ে আমরা বিষয়টি দ্রুত খতিয়ে দেখার জন্য ভিডিওগুলো নিষ্ক্রিয় করেছিলাম।’
ভেভো কর্তৃপক্ষ বলেছে, ‘হ্যাকিংয়ের শিকার সব ভিডিওকে পুরনো অবস্থানে ফিরিয়ে আনতে ও আমাদের ক্যাটালগ পুনরুদ্ধারে কাজ করছি। কীভাবে এই হ্যাকিং হলো তা উদ্ঘাটনে আমরা তদন্ত অব্যাহত রাখবো।’
এর আগে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে ভেভোর কিছু ফাইল চুরি ও ফাঁস হয় অনলাইনে। এ নিয়ে ছয় মাসের ব্যবধানে দ্বিতীয়বার হ্যাকিংয়ের শিকার হলো অনলাইন স্ট্রিমিংটি।
এবারের হ্যাকারদের একজন টুইটারের একটি অ্যাকাউন্টে পোস্ট করেছেন, ‘‘এটা স্রেফ মজার জন্য করা। আমি শুধু লিখেছি ‘হ্যাকড’। আমাকে ভুল বুঝবেন না, ইউটিউব ভালো লাগে আমার।’’
তবে সারে ইউনিভার্সিটির সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক অ্যালান উডওয়ার্ড বলেন, ‘কোডের মাধ্যমে ভিডিও আপলোড কিংবা পরিবর্তন করতে চাইলে একটি অথোরাইজেশন টোকেন প্রয়োজন হয়। সুতরাং হয় হ্যাকাররা অথোরাইজেশনের উপায় জানতে পেরেছে, নতুবা অর্থনৈতিক ব্যাপার জড়িত এখানে অথবা অন্য কোনও উপায়ে তারা ঢোকার অনুমতি পেয়েছে।’
ইউটিউবের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশিবার দেখা ভিডিওর মাইলফলক এখন ‘দেসপাসিতো’র দখলে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সংখ্যাটা ৫০২ কোটি ৫৮ লাখ ৮ হাজার ৭৭৬ বার পেরিয়েছে।


‘দেসপাসিতো’ই এখন সর্বকালের সবচেয়ে সফল স্প্যানিশ ভাষার পপ গান। এই শব্দের ইংরেজি হলো ‘স্লোলি’, বাংলায় এর অর্থ ‘ধীরে ধীরে’। লাতিন নাচের উপযোগী এই গানটি গেয়েছেন পুয়ের্তোরিকান সংগীতশিল্পী লুই ফনসি ও ড্যাডি ইয়াঙ্কি। এটাই এখন সর্বকালের সবচেয়ে সফল স্প্যানিশ ভাষার পপ গান।
২০১৭ সালের জানুয়ারিতে প্রকাশিত হয় ‘দেসপাসিতো’। প্রকাশের পরপরই লাতিন আমেরিকায় জনপ্রিয়তা পায় এটি। তবে অন্যান্য দেশের নজরে আসে কানাডিয়ান হার্টথ্রব জাস্টিন বিবারের সুবাদে। এক নাইটক্লাবে এই গান শুনে রিমিক্সের আগ্রহ দেখান তিনি। তার অংশগ্রহণে ‘দেসপাসিতো (রিমিক্স)’ প্রকাশের পর সাড়া জাগায়।

সূত্র: বিবিসি