পৃথিবীর কোথাও এভাবে নববর্ষ পালন করা হয় না: জয়া আহসান

জয়া আহসান। ছবি: টাইমস অব ইন্ডিয়াকলকাতায় নববর্ষ উদযাপন করলেন জয়া আহসান। এর আগে ওপার বাংলায় এই উৎসব উপভোগ করা হয়নি তার। তবে পশ্চিমবঙ্গে ১৪২৫ সনকে স্বাগত জানানোর ফাঁকে বাংলাদেশকে ঠিকই মিস করেছেন তিনি। ভারতের বার্তা সংস্থা টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বাংলাদেশের নববর্ষ, খাবার, ঐতিহ্যসহ অনেক কথাই বলেছেন জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী।
জয়া বলেছেন, ‘কলকাতায় বাংলা নববর্ষ কীভাবে উদযাপিত হয় তা জানা ছিল না আমার। তবে বাংলাদেশে এটি কলকাতার দুর্গাপূজা উৎসবের চেয়ে কোনও অংশে কম নয়। ঢাকার চারুকলা ইনস্টিটিউটের মঙ্গল শোভাযাত্রা এমন এক আয়োজন যা একবার হলেও সবার দেখা দরকার। আমি মনে করি, পৃথিবীর আর কোথাও এভাবে নববর্ষ পালন করা হয় না যেখানে প্রত্যেক শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেয়। বাংলাদেশে নববর্ষ উদযাপনই প্রমাণ করে আমরা কতটা অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উদ্বুদ্ধ।’
প্রতি নববর্ষে শাড়ি থেকে শুরু করে, মসলা, মিষ্টি, ইলিশ মাছসহ অনেক উপহার পান জয়া। তবে এবার নিজের হাতে তা নিতে পারেননি। যদিও সব উপহার গুছিয়ে রাখতে ঢাকার বাসায় গৃহকর্মীকে ঠিকই বলে রেখেছেন।
পহেলা বৈশাখে কলকাতার রান্নাঘরে জয়া আহসান। ছবি: টাইমস অব ইন্ডিয়ানববর্ষে পরিবার আর বন্ধুদের উপহারও দেন জয়া। পত্রিকাটিকে তিনি জানান, পহেলা বৈশাখে সবার পোশাকে চোখে পড়ে ঐতিহ্য। মেয়েরা লাল-সাদা শাড়ি আর ছেলেরা পাঞ্জাবি-ধুতি পরে থাকে। তার কথায়, ‘এমনও হয়েছে ঈদে নতুন পোশাক পরিনি, কিন্তু নববর্ষে তা কোনোভাবেই মিস হতো না। বাংলাদেশে হালখাতা এখনও এক ঐতিহ্য। মনে পড়ে, নানার সঙ্গে দোকানে ঘুরে বেড়াতাম আমি আর আমার বোন। আমাদের লক্ষ্য ছিল মিষ্টির বাক্স ও পঞ্জিকা সংগ্রহ করা।’
নববর্ষে প্রত্যেকেরই তিন-চারটি নিমন্ত্রণ থাকে বলেও জানিয়েছেন জয়া। এছাড়া ঘরে বৈশাখী আড্ডা তো হয়ই। তিনি বলেন, ‘আমার মা ছিলেন পাকা রাঁধুনি। তার রান্না করা তাজা শাকসবজির সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের মাছ ও মাংস অতুলনীয়। ভর্তা ও পান্তা ভাত নববর্ষে আমাদের রেসিপির বিশেষ পদ। এছাড়া বিরিয়ানি, পোলাও, ইলিশ ভাজা ও সর্ষে ইলিশ তো থাকেই।’
দেবী’র নতুন পোস্টারে জয়া আহসানপান্তাভাত তৈরিতে জয়া ওস্তাদ! বৈশাখে পান্তাভাতে লবণ ছিটিয়ে কাটা পেঁয়াজ, লাল মরিচ, আলু ভর্তা ও ডিম কিংবা ইলিশ মাছ ভাজি খাওয়ার আমেজই আলাদা। তিনি অবশ্য বাড়তি স্বাদ পেতে পান্তার ওপর ভাজা চাল ছড়িয়ে দেন। জয়া বললেন, ‘আমি সর্ষে ইলিশও ভালো রাঁধতে পারি। জেল্লা চিকেন রোস্ট ও মাটন কাবাবের মতো নবাবি খানা বানাতে ভালো লাগে। আমার বোন (কান্তা মাসউদ) দারুণ দই পান্তা বানাতে পারে।’
জয়ার ভাষ্য, ‘বাংলাদেশে পহেলা বৈশাখের খাবারে মাটন রেজালা চেনা পদ। এই মেন্যুতে মা কাঁচা মরিচের দইসহ বিশেষ কিছু মসলা ব্যবহার করেন। তিনি কচুরলতি, শুঁটকি, সবজি, মাছসহ ২০ পদের খাবার তৈরি করেন। তার রসুন ভর্তা ও মুরগির মাংস দিয়ে টমেটো পোলাও দারুণ সুস্বাদু। মায়ের রান্না করা বিরিয়ানিও অনবদ্য। পহেলা বৈশাখে মাটির পাত্রে খাবার পরিবেশন আমাদের বাড়িতে আবশ্যকীয়।’
এদিকে বাংলাদেশে জয়ার নতুন ছবি ‘দেবী’র আরেকটি পোস্টার প্রকাশিত হয়েছে। রবিবার (১৫ এপ্রিল) সকালে নিজের ফেসবুক পেজে এটি শেয়ার করেন তিনি। এর ক্যাপশনে লেখা, ‘চলুন রানুর রহস্যময় জগতে।’ ছবিটিতে রানু চরিত্রেই দেখা যাবে তাকে। পোস্টারে লাল অক্ষরে উল্লেখ রয়েছে, ‘সবই কি রানুর মনগড়া?’ উত্তর মিলবে রবিবার (১৫ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টায়। তখন প্রকাশ হবে টিজার।
হুমায়ূন আহমেদের কাহিনি অবলম্বনে অনম বিশ্বাসের পরিচালনায় ছবিটিতে মিসির আলী চরিত্রে অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী। এর আগে তার ছবি দিয়ে সাজানো একটি পোস্টার প্রকাশিত হয়। ছবিটিতে আরও আছেন শবনম ফারিয়া, ইরেশ যাকের প্রমুখ। ‘দেবী’ জয়া আহসানের প্রথম প্রযোজনা।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া ও ফেসবুক