ইউটিউবার হলেও এখন অভিনেতা হওয়া যায়: মেহের আফরোজ শাওন

অনুষ্ঠানে বন্যা মির্জা ও মেহের আফরোজ শাওন৮ জুলাই নিজের গাওয়া গানের জন্য জাতীয় একটি স্বীকৃতি পান অভিনেত্রী-নির্মাতা মেহের আফরোজ শাওন। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্তির বাইরেও ‘যদি মন কাঁদে’ গানটিকে ঘিরে অন্যরকম কিছু স্মৃতি আছে এই শিল্পীর।
কারণ, এতে জড়িয়ে আছেন তার স্বামী ও এ গানের গীতিকার কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ। এ নিয়ে কিছু কথাও জানালেন এই শিল্পী। আর এগুলো সবই মিলল বাংলা ট্রিবিউন-এর ‘ফেসবুক লাইভ’ আড্ডায়।
১০ জুলাই বিকাল ৪টায় অভিনেত্রী ও বাংলা ট্রিবিউন-এর হেড অব মার্কেটিং বন্যা মির্জার সঞ্চালনায় সাজানো হয় এই আয়োজন।
‘শ্রেষ্ঠ গায়িকা’ হিসেবে সদ্য পাওয়া জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার নিয়ে নিজের অনুভূতি ঠিক এভাবেই জানান শাওন, ‘এর আগেও বহুবার প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কার নিয়েছি। হুমায়ূন আহমেদের জন্যই আমাকে কয়েকবার নিতে হয়েছে। তবে এবার যেন ছোটবেলার অনুভূতি পেলাম। ভেতরে টেনশনও কাজ করছিল। ঘামছিলাম। খুব ভালো লাগছিল।’
২০১৬ সালে রিয়াজ-মাহিকে নিয়ে শাওন নির্মাণ করেছেন নিজের পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‌‘কৃষ্ণপক্ষ’। আর সেই চলচ্চিত্রের সুবাদে এবার তিনি রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি পেলেন ‌‘শ্রেষ্ঠ গায়িকা’র।
আর এই গানটির জন্য ৮ জুলাই সন্ধ্যায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের ৪১তম আসরে মেহের আফরোজ শাওনের হাতে ‘শ্রেষ্ঠ গায়িকা’র পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মেহের আফরোজ শাওনবাংলা ট্রিবিউন-ফেসবুক লাইভে এসে গানটি সম্পর্কে শাওন আরও বললেন, ‘আসলে আমি নিজের কাজের ভক্ত না; নাচের ভক্ত নই, অভিনয়ের না, এমনকি আমার গানেরও না। তবে এ গানের কথা ভিন্ন। নিজের এ কাজের প্রতি অন্যরকম ভালোবাসা জড়িয়ে আছে। এর কারণ তিনটি। প্রথমত, গানের কথা, দ্বিতীয়ত গানের সুর। এতে একটা হামিং ছিল। ভীষণ পছন্দের। মনে হয় স্বর্গীয় কোনও সুর ভেসে আসছে। এটাও পছন্দের কারণ। আর একটি কথা, হুমায়ূন আহমেদের কোনও অনুষ্ঠান মানেই অবধারিত ছিল এ গান আমাকে গাইতে হবে! গানটি গেয়ে মানুষের এত ভালোবাসা পেয়েছি, যা বলার নয়। তাই এ গানটি আমার কাছে সত্যিই বিশেষ।’
বর্তমান সময়ের টিভিকেন্দ্রিক কিছু প্রবণতার সমালোচনা করেন টেলিভিশনের বিভিন্ন শাখায় কাজ করা এ তারকা। বললেন, ‘একটা সময় ছেলেমেয়েরা অনেক শিখত। আমি নিজেও বুলবুল ললিতকলাতে নাচ শিখেছি। টেলিভিশনে আসার জন্য শেখা নয়। দক্ষ হওয়ার জন্য শেখা। অভিনয় করতে হলে অনেক কিছু শিখতে হয়। স্টেজে অভিনয় করতে হলে নাচ, গান এ দুটো বিষয় তো জানতেই হবে। এছাড়া অনেক পড়াশোনাও করতে হয়। এখন এর উল্টো দেখা যায়। মডেলিং করা মানেই ধরে নেয় অভিনয় করা যায়! বলা উচিত কিনা জানি না, ইউটিউবার হলেও এখন অভিনেতা হওয়া যায়। গান পারলেও অভিনয় করানো হয়। রিয়েলিটি শোগুলো আমাদের অনেক ক্ষতি করেছে।’
মেহের আফরোজ শাওনপাশাপাশি দর্শকদের বেশ প্রশংসা করেন শাওন, ‘দর্শকের জানালা খোলা। এখন ওয়েব দরজা খুলে গেছে। তাই নির্মাতাদের শুধু দেশের ভেতর নয়, গ্লোবাল কম্পিটিশন করতে হবে। দর্শক এখন অনেক বেশি জানেন। দর্শক এখন সমালোচকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হচ্ছেন। তারা অনেক সূক্ষ্ম ও চমৎকারভাবে সমালোচনা করছেন। দর্শক যদি শিখতে পারেন তবে নির্মাতারা কেন নয়!’
এমন অনেক আলাপের ফাঁকে তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘এটা আমার জন্য প্রথম ফেসবুক লাইভ। আমি ব্যক্তিগতভাবেও কখনও ফেসবুক লাইভে যাইনি। প্রথম অভিজ্ঞতাটা দারুণ কিছু দিয়ে হলো।’
শাওন ও বন্যা মির্জার এই আড্ডার পুরোটা দেখা যাবে নিচের লিংকে-

ছবি তোলা ও ভিডিও নির্দেশনা: নুরুন্নবী চৌধুরী হাছিব