যে কারণে আয়োজনহীন তারেক মাসুদের জন্মদিন

তারেক মাসুদআজ (৬ ডিসেম্বর) বরেণ্য চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদের জন্মদিন। ১৯৫৬ সালের এই দিনে তিনি জন্ম নেন ফরিদপুরের প্রত্যন্ত গ্রামে, এক মুসলিম পরিবারে। বরাবরই এই নন্দিতজনের জন্মদিনে থাকে নানা আয়োজন। তবে এবার ঘটলো ব্যতিক্রম। তাকে ঘিরে ‘গুগল ডুডল’-এর বাইরে নেই কোনও আয়োজন।
কারণ হিসেবে উঠে এসেছে একই অঙ্গনের আরেক নন্দিতজনের নাম। তিনি আনোয়ার হোসেন। বিজয়ের মাসের প্রথম দিনেই (১ ডিসেম্বর) চিরবিদায় নিয়েছেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত এই চিত্রগ্রাহক ও আলোকচিত্রী।
আনোয়ার হোসেনের মৃত্যুশোক এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেননি চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা। তাই এরমধ্যে কোনও জন্মোৎসব করতে চান না বলে জানিয়েছে তারেক মাসুদ ফাউন্ডেশনসহ বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্র সংগঠন। মূলত এ জন্য আজ (৬ ডিসেম্বর) সারা দিন তারেক মাসুদকে নিয়ে কোনও আয়োজন ছিল না কোথাও।
আনোয়ার হোসেনতারেক মাসুদ ফাউন্ডেশনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে এর জনসংযোগ কর্মকর্তা আফতাব হোসেন বলেন, ‘এতদিন বেশ কয়েকটি সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান তারেক মাসুদের জন্মদিনের আয়োজন করে আসছিল। এরমধ্যে বরেণ্য চিত্রগ্রাহক আনোয়ার হোসেন আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। তাই সংগঠনগুলো জন্মদিনের আয়োজনটি এবার স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাশাপাশি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ক্যাথরিন মাসুদও আয়োজন স্থগিত করেছেন।’
তারেক মাসুদের জন্মদিন নিয়ে শিল্পকলা একাডেমি, মুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটিসহ বেশ কয়েকটি সংগঠন নিয়মিত আয়োজন করে আসছিল। তারা এবার তা স্থগিত করেছে।
এদিকে তারেক মাসুদকে শ্রদ্ধা জানিয়ে আজ (৬ ডিসেম্বর) গুগল প্রকাশ করেছে ডুডল। সার্চ ইঞ্জিন এই সাইটটির হোম পেজে রাখা হয়েছে মাটির তৈরি একটি ময়না পাখি। সঙ্গে একটি হাত। যা দিয়ে বোঝা যায়, তারেক মাসুদ ও তার সৃষ্টি ‘মাটির ময়না’কে।
তারেক মাসুদকে নিয়ে গুগলের ডুডলবিকল্প ধারার চলচ্চিত্রের পথিকৃৎ নির্মাতা তারেক মাসুদ ২০১১ সালের ১৩ আগস্ট মানিকগঞ্জে এক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান। সেদিন একই দুর্ঘটনায় আরও চার চলচ্চিত্রকর্মী না ফেরার দেশে পাড়ি জমান।
‘কাগজের ফুল’ চলচ্চিত্রের শুটিংয়ের লোকেশন দেখে ফেরার সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় তারেকের স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদও আহত হয়েছিলেন।
আদম সুরত, মুক্তির গান, মুক্তির কথা, মাটির ময়না, অন্তর্যাত্রা ও রানওয়ে’র মতো ছবি দিয়ে তারেক মাসুদ বাংলা চলচ্চিত্রে নতুন ধারার সূচনা করেছেন। তার চলচ্চিত্র ‘মাটির ময়না’ প্রথম বাংলাদেশি চলচ্চিত্র হিসেবে অস্কারে স্থান পেয়েছিল।