মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা বলেন, সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলা চলচ্চিত্র ‘দেবী’ দেশের তামাকবিরোধী এবং জনস্বাস্থ্য কর্মীদের মধ্যে গভীর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। আইন অনুযায়ী ধূমপানের দৃশ্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ হলেও সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত এই চলচ্চিত্রে কারণে অকারণে বারবার আনা হয়েছে ধূমপানের দৃশ্য। ব্যবহার করা হয়েছে নিজস্ব মনগড়া সতর্কবাণী।
তাদের অভিযোগ, এর আগে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ‘দেবী’ সিনেমার যে ফার্স্টলুক পোস্টার প্রকাশিত হয়, তাতেও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘন করে ধূমপানের বিতর্কিত ছবি ব্যবহার করা হয়। তামাকবিরোধী সংগঠনগুলোর প্রতিবাদের মুখে সেটি পরিবর্তন করা হয়েছিল। অথচ মূল সিনেমা মুক্তি দেওয়ার ক্ষেত্রেও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রতি অবহেলা প্রদর্শন করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে তারা আরও অভিযোগ করেন, গত ১৯ অক্টোবর থেকে প্রেক্ষাগৃহে এই সিনেমাটির প্রদর্শন শুরু হলেও ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের আইন ও বিধিমালার সুস্পষ্ট নির্দেশনাগুলো মানা হয়নি। শুধু তাই নয়, সিনেমাটির পরিবেশক জাজ মাল্টিমিডিয়ার অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে গত ১১ অক্টোবর ছবিটির যে ট্রেলার মুক্তি দেওয়া হয় তাতেও এই বিধিমালা মানা হয়নি।
তারা বলেন, জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের সৃষ্ট মিসির আলি বাংলাদেশ কিশোর ও তরুণ পাঠকদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই এক জনপ্রিয় চরিত্র। একাধারে নিষ্ঠাবান পাঠক, বিজ্ঞানমনস্ক পরিশ্রমী গবেষক, নিখুঁত পর্যবেক্ষক এবং অন্যান্য রসবোধের অধিকারী এই মিসির আলি। ‘দেবী’ সিনেমায় মিসির আলির যেমন চিত্রায়ন করেছে, তেমনটা চালু থাকলে মিসির আলির চরিত্র অনুসরণ করা অসংখ্য কিশোর ও তরুণ ভক্তরা ধূমপানকে উপরোল্লিখিত গুণাবলির মধ্যে একটি অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গ হিসেবে ধরে নিতে পারেন। যা সন্দেহাতীতভাবে বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্যকে চরম ঝুঁকিতে ফেলবে। ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত জাতি করার সুস্পষ্ট লক্ষ্য নিয়ে এগোতে থাকা বাংলাদেশের এখনই দরকার এ বিষয়ে সচেতন হওয়া।
হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস অবলম্বনে ‘দেবী’ নির্মাণ করেছেন অনম বিশ্বাস। সরকারি অনুদান নিয়ে ছবিটি নির্মিত হয়েছে অভিনেত্রী জয়া আহসানের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সি-তে সিনেমার ব্যানারে। এতে মিসির আলি চরিত্রে অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী। ছবিটি পরিবেশনায় রয়েছে জাজ মাল্টিমিডিয়া।