শুটিং না করেই কলকাতা ফিরছেন অঞ্জু

অঞ্জু ঘোষ

গত ২৩ জানুয়ারি ঢাকায় এসেছেন কলকাতা প্রবাসী চিত্রনায়িকা অঞ্জু ঘোষ। কারণটা ছিল ২০ বছর পর ঢাকাই ছবিতে কাজ করা।
জীবনীভিত্তিক চলচ্চিত্র ‘মধুর ক্যান্টিন’-এ মধু দার স্ত্রীর ভূমিকায় থাকবেন তিনি। সিডিউল অনুযায়ী এটির শুটিং ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এদিনই তিনি ফিরে যাচ্ছেন কলকাতায়। হচ্ছে না তার শুটিং।
বিষয়টি জানতে পেরে যোগাযোগ করা হয় ‘মধুর ক্যান্টিন’ ছবির নির্মাতা সাঈদুর রহমান সাঈদের সঙ্গে। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বিস্তারিত বলেন, ‘পারিবারিক কারণে তিনি আগামীকাল কলকাতা যাচ্ছেন। আমাকে বলেছেন ১০ দিন সময় লাগবে। উনাদের ওখানে কোনও একটা অনুষ্ঠান আছে। আমি আর বেশি কিছু জানতে চাইনি। তিনি যেহেতু বলেছেন, এর ওপর আর কথা চলে না। তবে দিদি বেশি দিন সময় নেবেন না বলেই জানিয়েছেন।’
প্রায় ২০ বছর ধরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা অঞ্জু। কলকাতা শহরের সল্ট লেকের তার নিজস্ব তিনতলা বাসাতেই বেশিরভাগ সময় কাটান তিনি। এছাড়া শহরের দমদম ও রাজারহাটে তার দুটি অ্যাপার্টমেন্টও আছে।
কোনও এক কারণে অঞ্জু ঘোষের পরিবারের সদস্যরা গতকাল (৩০ জানুয়ারি) কলকাতা থেকে ফোন দিয়ে তাকে দ্রুত যেতে বলেন। আর এ কারণেই ১ ফেব্রুয়ারি তিনি কলকাতা যাচ্ছেন।
‘মধুর ক্যান্টিন’ সিনেমায় মধুদার চরিত্রে অভিনয় করছেন ওমর সানী। আর সাংবাদিকের ভূমিকায় দেখা যাবে মৌসুমীকে।
সিনেমায় মধুদার জীবনের ১৯৬৪ থেকে ১৯৭১-এর সময়টাই উঠে আসবে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগে অঞ্জু ঘোষ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ভোলানাথ অপেরার হয়ে যাত্রায় নৃত্য পরিবেশন করতেন ও গান গাইতেন। ১৯৮২ সালে এফ কবীর চৌধুরী পরিচালিত ‘সওদাগর’-এর মাধ্যমে তার চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে। এই ছবিটি ব্যবসায়িকভাবে সফল ছিল। রাতারাতি তারকা বনে যান তিনি। অঞ্জু বাণিজ্যিক ছবির তারকা হিসেবে যতটা সফল ছিলেন, সামাজিক ছবিতে ততটাই ব্যর্থ হন।

অঞ্জু ঘোষ

১৯৮৭ সালে অঞ্জু সর্বাধিক ১৪টি সিনেমায় অভিনয় করেন, মন্দা বাজারে যেগুলো ছিল সফল। ১৯৮৯ সালে মুক্তি পাওয়া ‘বেদের মেয়ে জোসনা’ অবিশ্বাস্য ব্যবসা করে। সৃষ্টি করে নতুন রেকর্ড।
তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে রয়েছে- সওদাগর, নরম গরম, আবে হায়াত, রাজ সিংহাসন, পদ্মাবতী, রাই বিনোদিনী, সোনাই বন্ধু, বড় ভালো লোক ছিল, আয়না বিবির পালা, আশা নিরাশা, নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা, মালাবদল, আশীর্বাদ প্রভৃতি।
১৯৯১ সালে বাংলা চলচ্চিত্রে নতুনদের আগমনে তিনি ব্যর্থ হতে থাকেন। এর কয়েক বছরের মাথায় তিনি দেশ ছেড়ে চলে যান ভারতে এবং কলকাতার চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে থাকেন। সর্বশেষ তিনি ভারতের বিশ্বভারতী অপেরার যাত্রাপালায় নিয়মিত অভিনয় করতেন।