বাংলা ট্রিবিউন: আপনার আয়োজন তো শুধু মে দিবসেই সীমাবদ্ধ থাকে না। আজকে (৩০ এপ্রিল) কোনও অনুষ্ঠানে অংশ নিলেন?
ফকির আলমগীর: আজ আছি স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে। এখানে বিকালে মে দিবসের অনুষ্ঠান হলো। আমরা ঠিক চৈত্রসংক্রান্তির মতোই আগের দিন অনুষ্ঠান করি। উদীচী, ঋষিজ, সত্যেন বন্দিশিখা, আনন্দন, সমস্বরসহ বেশ কয়েকটি সাংস্কৃতিক সংগঠন এতে অংশ নেয়।
গণসংগীত সমন্বয় পরিষদ এটি দেখভাল করল।
বাংলা ট্রিবিউন: এবারের মে দিবসে আপনার অনুষ্ঠানসূচি কেমন?
ফকির আলমগীর: সকাল থেকেই আয়োজনে অংশ নেবো। এটিএন বাংলায় ‘চায়ের চুমুকে’ ৭টায়, চ্যানেল আইয়ে ‘গানে গানে’ সকাল ৯টায়, একুশে টিভির ‘মে দিবস’
১০টায়। এরপর বিশ্রাম নিয়ে যাবো শ্রম অধিদফতর আয়োজিত অনুষ্ঠানে। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এটি হবে বিকাল ৪টায়। উত্তরার ১৪ নম্বর মাঠে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যাবো এরপর। সন্ধ্যা ৬টায় গাজী টিভিতে ‘শুভসন্ধ্যা’, এরপর এশিয়ান টিভিতে অংশ নেবো।
রাত পৌনে ১২টায় দেশটিভিতে ‘সোজা কথা’ অনুষ্ঠান দিয়ে শেষ হবে সারা দিনের সূচি।
ফকির আলমগীর: হ্যাঁ, ফেসবুকে তো ভাইরাল। এবার চারটি গান রিলিজ করলাম। ‘ফিদেল কাস্ত্রো’, ‘চল মজদুর’, ‘বাংলার কমরেড’ ও ‘ভালোবাসা তুমি ঘামে ভেজা নোনতা কবিতা’। মোটামুটি এই বয়সেও ভিডিওতে দাঁড়ালাম। ভিডিও আকারে এগুলো ছেড়েছি।
বাংলা ট্রিবিউন: প্রতিবছরই এ দিনটিকে ঘিরে নানা আয়োজন থাকে। এগুলোতে আদৌ শ্রমজীবীদের কোনও উপকার হচ্ছে?
ফকির আলমগীর: কেন হবে না? অবশ্যই হচ্ছে। খুলনায় পাটকল শ্রমিকদের ঘটনাটা দেখুন। ২০১৩ সালে রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর আজও মানুষ তাদের স্মরণ করে। সম্মান জানায়। তাদের সংগ্রাম আছে। মে দিবস এখনও চেতনার মশাল। এই মশালে আমরা আজও উজ্জীবিত। নুসরাত, এফআর টাওয়ার, পুরান ঢাকার আগুন- এগুলো লোভ-লালসার আগুন। এই বৈষম্য থেকে বের হয়ে আসতে হবে। যতদিন বৈষম্য অনাচার থাকবে, ততদিন মে দিবস থাকবে। আমাদের কণ্ঠ জেগে থাকবে।
বাংলা ট্রিবিউন: শ্রমিকদের মধ্যে কি আদৌ কোনও সচেতনতা তৈরি হয়েছে?
ফকির আলমগীর: আমরা জানি না শোকের সাগরে অথৈ জোয়ারে ভেসে যেতে/ আমরা জানি না হতাশার কাছে পরাজয়কে টেনে নিতে। এটা আমার গানের একটি লাইন।
কেন দুঃখী, দরিদ্র মানুষই শুধু তাদের অধিকার নিয়ে কথা বলবে? কেন সামাজিক, রাজনৈতিক শক্তি তাদের পাশে দাঁড়ায় না- এ কথা আমি বহুবার বলেছি। আর এগুলোই উঠে এসেছে গানে গানে। আর সচেতনতা শুধু শ্রমিকদের নয়, এটা সবার হওয়া দরকার।
বাংলা ট্রিবিউন: এবারের আয়োজনের মূল বক্তব্য কী থাকছে?
ফকির আলমগীর: ‘সবার ওপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই’। এটাই স্লোগান। হোক মানবতার জয়গান। এই যে বর্ণবাদ, হিংসা, মারামারি- এগুলো পশ্চাৎমুখী ধারণা। সমস্ত পৃথিবী যদি একটি সংসার হতো, আমরা সব মানুষ যদি একটি পরিবারের সদস্য হতাম, তাহলে কি হানাহানি হতো? হতো না। তাই এটাই আমাদের স্লোগান।
এবারের মে দিবস উপলক্ষে ফকির আলমগীরের গাওয়া নতুন তিনটি গান: