বাবা দিবসে বিশেষ

বাবা অন্তত দেখে যেতে পেরেছেন

ইমরান ও তার বাবাছোটবেলায় বাবাকে (মোজাম্মেল হক) ভীষণ ভয় পেতাম। সন্তান যেন বখে না যায়, এ কারণে পড়াশোনা নিয়ে শাসন করতেন। আর আমি মা'র সঙ্গে সঙ্গেই বেশি থাকতাম। বাবার সঙ্গে সেটা কম হতো। তাই ছোটবেলায় বোধহয় অল্প বিস্তর দূরত্ব ছিল।

বাবার হয়তো ভাবতেন, যেন আদর্শচ্যুত না হই। তাই প্রথম দিকে আমার গানের প্রতি তার আগ্রহ ছিল না। কিন্তু পরবর্তী সময়ে তিনি যখন দেখলেন, গান নিয়ে আমি ভালো করছি। তখন তিনিই সাপোর্ট করা শুরু করলেন। সেসময় নিজে থেকেই রেওয়াজ করতে বলতেন।

বড় হওয়ার পর যেন আমাদের ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। বিশেষ করে আমি কোনও সিদ্ধান্ত নিলে বাবা প্রথমে ভেবে দেখতেন। পরে দেখা যেত, তিনি তাতেই সাপোর্ট করছেন। কিছুটা সময় পার হওয়ার পর দেখেছি পরিবারে আমি ছোট হলেও তিনি আমার সিদ্ধান্তকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন।

আর যখন গানে পুরোপুরি থিতু হলাম। তখন বাবাই বিভিন্ন সময়ে ইউটিউবে আমার গানগুলো দেখত। বেশিজন দেখলে তিনি সেটা নিয়ে কথা বলতেন, উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতেন। এই বিষয়টি খুব মনে পড়ছে।
এখন যখন একলা থাকি বাবাকে মনে পড়ে। বাবা থাকলে বিষয়টি কেউ টের পাবেন না। যাদের বাবা নেই তাড়াই শুধু উপলব্ধি করতে পারবেন, বাব আসালে সন্তানের জন্য কী! বিশাল এক বটবৃক্ষ হয়ে তিনি আমাদের মাথার ওপর থাকতেন। অনেক সংকট তিনি আমাদের বুঝতে দেননি। এখন সেই বিষয়গুলোর মুখোমুখি হলে বুঝতে পারি, তিনি কীভাবে আগলে রাখতেন আমাদের।
সন্তান হিসেবে একটা জায়গায় আমার সান্ত্বানা আছে। বাবা মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার অনুষ্ঠান প্রায়ই দেখতেন। চাইতেন এটা যেন আমি পাই। তিনি চলে যাওয়ার আগে এই পুরস্কারটি বাবার হাতে তুলে দিতে পেরেছি। অন্তত বাবা জেনে গেছেন, তার সন্তান আদর্শচ্যুত হয়নি, বখে যায়নি। কাজ করে যাচ্ছে।মা ও বাবার মাঝে ইমরান
*প্রতি বছর জুন মাসের তৃতীয় রবিবার (১৬ জুন) উদযাপন করা হয় ‘বাবা দিবস’।