কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় তিন দিনব্যাপী লালন উৎসব

kushtia Lalon Shah Mazar Pic-2বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের ১২৯তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে কুষ্টিয়ার কুমারখালি উপজেলার ছেঁউড়িয়ার আখড়া বাড়িতে শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী লালন উৎসব।
লালন অ্যাকাডেমির আয়োজনে, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় আজ (১৬ অক্টোবর) থেকে শুরু হচ্ছে এ উৎসব।
এদিন সন্ধ্যায় বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ’র তিরোধান দিবসের অনুষ্ঠান অনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ।
এ উপলক্ষে লালনের মাজার সাজানো হয়েছে নতুন সাজে। মাজারের ভেতরে লালন অ্যাকাডেমির আশপাশের এলাকায় বসবে বাউল ফকিরদের আসর। বাইরে উন্মুক্ত লালন মঞ্চে চলবে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। উৎসবকে ঘিরে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় কালি নদীর পাড়ে বসছে তিন দিনের লালনমেলা।
বাউল দর্শনের ভাবাবেগ আর উৎসুক দর্শকদের ভিড় সামাল দিতে নেয়া হচ্ছে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। দেশি-বিদেশি দর্শনার্থী, সাধক ও আয়োজকদের নিরাপত্তায় নেয়া হয়েছে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা।
লালন শাহের আখড়াবাড়ি ঘুরে দেখা যায়, সাঁইজির তিরোধান দিবস উপলক্ষে এরইমধ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসেছেন লালন ভক্ত-অনুসারীরা। আখড়াবাড়ি চত্বর ও আশপাশে লালন ভক্তরা আসন গেঁড়ে বসেছেন এরইমধ্যে। তাদের মুখে মুখে সাঁইজির বাণী। মূল উৎসব শুরু হওয়ার আগেই আখড়ায় আসা বাউল সাধকরা মাজারের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়েছেন। কালিগঙ্গা নদীর তীরে হরেক রকমের পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা।
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম তানভীর আরাফাত জানান, লালন শাহের তিরোধান দিবস উপলক্ষে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রতিবারের মতো এবারও বিপুল পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে, সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশ থাকবে। পুরো মেলা পুলিশের সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকবে।
kushtia Lalon Shah Mazar Picতিনি বলেন, ‘বিশেষ করে মেলার প্রবেশপথগুলোতে পুলিশের ৬টি চেকপোস্ট থাকবে। আমরা মেলাকে কেন্দ্র করে মাজার এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছি।’
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. আসলাম হোসেন জানান, ইতোমধ্যে আমরা লালনমেলার প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন করেছি। গোয়েন্দা পুলিশ ও র‌্যাবের পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাত জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মেলা চলাকালে সেখানে দায়িত্ব পালন করবেন।
উল্লেখ্য, বাংলা ১২৯৭ সালের পহেলা কার্তিক বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ দেহধাম ত্যাগ করেন। এরপর থেকেই কুমারখালির ছেঁউড়িয়ায় কালিগঙ্গা নদীর তীরে পালিত হয়ে আসছে লালন তিরোধান দিবস। অনুষ্ঠানকে ঘিরে প্রতিবছর লালনের আখড়াবাড়ি কুমারখালির ছেঁউড়িয়ায় সমাগম হয় হাজার হাজার মানুষের। এ উৎসবকে ঘিরে দেশ-বিদেশ থেকে দলে দলে মানুষ ছুটে আসেন লালনের আখড়ায়।