মাত্র ৮ প্রেক্ষাগৃহে দেশের প্রথম সার্ফিং চলচ্চিত্র ‘ন ডরাই’

ছবির একটি দৃশ্যে সুনেরাআগামীকাল (২৯ নভেম্বর) মুক্তি পাচ্ছে সার্ফিং নিয়ে নির্মিত বাংলাদেশের প্রথম চলচ্চিত্র ‘ন ডরাই’। এটি চলতি সপ্তাহে প্রদর্শিত হবে দেশের মাত্র ৮টি প্রেক্ষাগৃহে!

ছবিটিকে কেন্দ্র করে মুক্তির আগেই বেশ আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে দর্শক মনে। যদিও সেই হিসেবে হল-সংখ্যা বেশ কম। এর কারণ হিসেবে ছবিটির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান স্টার সিনেপ্লেক্স-এর জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা ইচ্ছে করেই প্রথম সপ্তাহে একসঙ্গে অসংখ্য হল কাভার করতে চাইনি। প্রায় শতাধিক হল থেকে সাড়া পেয়েছি। কিন্তু দিয়েছি মাত্র ৮টিতে। এরমধ্যে আমাদেরই তিনটি।’
তিনি আরও জানান, প্রথম সপ্তাহে হল-সংখ্যা কম হলেও পরের সপ্তাহে ন্যূনতম ৫০টি হলে দেওয়া হবে ‘ন ডরাই’।
বলে রাখা দরকার, দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাল্টিপ্লেক্স স্টার সিনেপ্লেক্স-এর প্রযোজনায় প্রথম চলচ্চিত্র এটি।
ছবিটি চলতি সপ্তাহে দেখা যাবে স্টার সিনেপ্লেক্সের বসুন্ধরা সিটি, ধানমন্ডি ও মহাখালী শাখায়। আরও দেখা যাবে রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্কের ‘ব্লকবাস্টার’, শ্যামলী সিনেমা, চট্টগ্রামের সিলভার স্ক্রিন, ময়মনসিংহের ‘ছায়বাণী’ ও বগুড়ার ‌‘মম ইন’-এ।
ছবিটির মুক্তি উপলক্ষে ইতোমধ্যে ‘অ্যাডভেঞ্চার অব আয়েশা’ নামের একটি কমিক বই প্রকাশ করেছে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানটি।
ছবিটির প্রযোজক মাহবুব রহমান রুহেল জানালেন, কক্সবাজারের একটি সার্ফিং ক্লাবের নামকরণ করা হয়েছে ‘ন ডরাই’।
তিনি বলেন, ‘‘কক্সবাজারে আমাদের একটি সার্ফিং ক্লাব আছে, যেখানে নিয়মিত ছেলেমেয়েদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। সেই ক্লাবটির নাম পরিবর্তন করে ‘ন ডরাই’ রাখা হয়েছে। ছবিটি শুধু সার্ফিং নিয়ে নয়, এটি একটি মুভমেন্টের নাম। দেশের প্রথম নারী সার্ফার নাসিমার উঠে আসার বাস্তব গল্প নিয়ে এই সিনেমা। বিশ্বের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে তার খবর ফলাও করে ছাপে। অথচ তার এখনও তেমন কোনও উন্নতি হয়নি। সামাজিক, পারিবারিক প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে সার্ফিংয়ের আইকন হয়ে ওঠার অদম্য জীবনের গল্প ‘ন ডরাই’।’’
‘ন ডরাই’-এর অন্যতম দুই চরিত্রে অভিনয় করেছেন সুনেরা বিনতে কামাল ও শরিফুল রাজ।
কেন্দ্রীয় চরিত্র আয়েশার ভূমিকায় অভিনয় করা সুনেরা বলেন, ‘ছবিটি নিয়ে ভাষার পাশাপাশি আমাদের সার্ফিংও শিখতে হয়েছে। টানা তিন মাস আমরা সেটার প্রশিক্ষণ নিই। এটা শিখতে গিয়ে চেহারার এমন অবস্থা হয়েছে যে, অনেকদিন পর মাহবুব ভাই একবার বিচে পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় আমাদের চিনতেই পারেননি।’
তিনি আরও জানান, একবার সার্ফিং বোর্ড থেকে পড়ে গিয়েছিলেন। এরপর তাকে সমুদ্র থেকে উদ্ধার করা হয়।

এদিকে রাজ বলেন, ‘ছবিটির গল্প সবচেয়ে অনুপ্রেরণার। তবে এতে প্রতিটি শিল্পী পরিশ্রম করে গেছেন। দীর্ঘ প্রস্তুতি ও দীর্ঘ সময় ধরে এর কাজ হয়েছে। আশা করি দর্শকরা মুগ্ধ হবেন।’
তানিম রহমান অংশু পরিচালিত এ ছবির চিত্রনাট্য লিখেছেন কলকাতার শ্যামল সেনগুপ্ত।
ছবিটি প্রসঙ্গে নির্মাতা অংশু বলেন, ‘একজন নারী সার্ফারের জীবন থেকে উৎসাহিত হয়ে এ ছবির জন্ম। গল্পটি গড়ে উঠেছে একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে। নারীর এগিয়ে যাওয়ার একটা বার্তাও থাকবে এতে। সিনেমার প্রায় নব্বই শতাংশ দৃশ্যধারণ করেছি কক্সবাজারে। এতে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষার ব্যবহার করেছি বেশি। কারণ, গল্পটা ওই অঞ্চলের। তবে তা সবাই যেন বুঝতে পারেন, সেভাবেই ব্যবহার করা হয়েছে।’