নির্মিত হচ্ছে ‘ব’ আদ্যক্ষরের ৯টি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র


প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় বিষয়টি প্রায় অবিশ্বাস্য। কারণ, ‘আহা!’ নির্মাতা এনামুল করমি নির্ঝর এরমধ্যে পার করে দিয়েছেন একযুগ। মুক্তির আলোয় আনতে পারেননি দ্বিতীয় কোনও চলচ্চিত্র।

সেই নির্মাতাই অনেকটা হুট করে চমকে দিলেন সবাইকে। ঘটা করে জানালেন, একসঙ্গে ৯টি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নিয়ে হাজির হচ্ছেন ২০২১ সালে! এরমধ্যে প্রমাণস্বরূপ দেখালেন, তিনটি ছবির টিজার। নাম চূড়ান্ত করে শুটিং এগিয়ে রেখেছেন বাকি ছবিগুলোরও। ঘোষণা দিয়েছেন সবগুলো ছবির নাম। উল্লেখ করেছেন, ছবিটির ধরণ ও নির্মাণের কারণ। সঙ্গে এটুকুও ব্যাখ্যা দিয়েছেন, কেন মাঝে এই দীর্ঘ সময় ডুবে ছিলেন।
শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) রাতে রাজধানীর এক কনভেনশন সেন্টারে খবরগুলো জানানোর জন্য ডেকে নেন তার বন্ধু, স্বজন ও সাংবাদিকদের। লম্বা বক্তব্যে তুলে ধরেন, তার নানাবিধ পরিকল্পনার কথা। যার বড় অংশ জুড়ে ছিল নির্মাণাধীন ৯টি চলচ্চিত্রের গল্প।
নির্ঝর জানান, সবগুলো ছবির নামই ‘ব’ আদ্যক্ষরের। কারণ, ব-তে বাংলাদেশ, ব-তে বঙ্গবন্ধু। নামগুলো এমন- ‌‌‘ব্যাপার’, ‘বাকবাকুম’, ‘বগল’, ‘বুদবুদ’, ‘বেলুন’, ‘বিষে ২০’, ‘বালিশ’, ‘বয়স-বাজনা’ ও ‘বিবাহ’। এরমধ্যে প্রথম ছবিটির শুটিং শেষ। বাকিগুলোর কাজ চলছে। যার সবকটির শুটিং শেষ করবেন ২০২০ সালের মধ্যে। আর এগুলো পর্যায়ক্রমে মুক্তি দেওয়া হবে ২০২১ সালে। কারণ, এই বছর উদযাপন হবে বাংলাদেশ জন্মের ৫০ বছর।
এনামুল করিম নির্ঝরের ব্যাখ্যাটা আরও অদ্ভুত। তার ভাষ্যে, ‘‘আমার জন্ম ১৯৬২ সালে। আর বাংলাদেশের জন্ম ১৯৭১। তার মানে, আমি বয়সে দেশের চেয়ে নয় বছরের বড়। আবার এই দেশ স্বাধীন হয়েছে ৯ মাস মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে। ছোটবেলা থেকেই শিখেছি- বয়সে বড় হলে ছোটদের জন্য কিছু দায়িত্ব পালন করতে হয়। অনেক ভেবে-চিন্তে সিদ্ধান্ত নিয়েছি- দেশের জন্য, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সিনেমা বানানোর মাধ্যমে সেই দায়িত্বটা পালন করা দরকার। মূলত এসব যোগসূত্র থেকেই আমার মাথায় ‘ব’ আদ্যক্ষরের নয়টি সিনেমা নির্মাণের পরিকল্পনা আসে।’’
সিনেমাগুলোর ধরণ প্রসঙ্গে নির্ঝর বলেন, ‘ছবিগুলোর মধ্য দিয়ে আমি চেষ্টা করছি আমাদের চলমান সময়টাকে ধরতে। আমাদের মানসিক পরিস্থিতি ও বাস্তবতার গল্পগুলো তুলে আনার চেষ্টা থাকবে। অবশ্যই সেটা ভিন্ন ভিন্ন গল্পের মাধ্যমে। আমি প্রত্যাশা করবো ছবিগুলোর চেয়ে এর বিষয়বস্তু নিয়ে আপনাদের সমালোচনা। আর কিছু নয়।’
এদিকে শুক্রবারের এই উৎসবমুখর ঘোষণা অনুষ্ঠানে এনামুল করিম নির্ঝরের ডাকে হাজির হয়েছেন দেশের নামকরা শিক্ষাবিদ, স্থপতি, সম্পাদক, সাংবাদিক, মেয়র, সংসদসদস্য, কণ্ঠশিল্পীসহ অনেকেই। তবে সবকিছুর বাইরে গিয়ে নির্ঝরের পাশে অভিনেত্রী অপি করিমের উপস্থিতি ও বক্তব্য ছিল সবার কাছে মেঘ না চাইতে বৃষ্টির মতো।
অনুষ্ঠানের মঞ্চে এনামুল করিম নির্ঝর ও অপি করিম দম্পতি/ ছবি: আর আর খানএনামুল করিম নির্ঝরের পাশে ডায়াসের সামনে দাঁড়িয়ে এসময় অপি করিম বলেন, ‘আমরা স্বপ্ন দেখতে এখন ভয় পাই। সেই সময়ে এই উদ্যোগগুলো সাহসের বিষয়। আমি ছোট্ট একজন নাট্যকর্মী। সে হিসেবে তার এই চলচ্চিত্র প্রজেক্টের সঙ্গে কোনোভাবে জড়িত থাকতে পারলে খুশি হবো। গানটা আমি একেবারেই বুঝি না। তবে আর কিছু বুঝি না বুঝি- আপন মানুষ হিসেবে তার পাশে থাকতে চাই।’
প্রসঙ্গত, পারিবারিক সম্পর্কে এনামুল করিম নির্ঝর ও অপি করিম স্বামী-স্ত্রী। তবে নির্মাণাধীন ৯টি চলচ্চিত্রের কোনোটিতে অপি করিম অভিনয় করছেন কি না, সেটির বিষয়ে স্পষ্ট করেননি স্থপতি, গীতিকবি-সুরকার ও নির্মাতা এনামুল করিম নির্ঝর।