বিশ বিশেষ

বাইরে থেকে মনে হয় রঙিন জীবন, বাস্তবে তা নয়

নানা চড়াই-উতরাইয়ের মধ্য দিয়ে দশ-এর দশক শেষ হলো (২০১০-২০১৯)। সাংস্কৃতিক অঙ্গনের জন্য এটি মূলত শূন্যতার দশক। দশে ধ্স—এভাবেও বলছেন কেউ কেউ। সিনেমা, সংগীত, টিভি এমনকি মঞ্চেও নেই উল্লেখযোগ্য কোনও অর্জন। সঙ্গে চলে গেছেন অনেক গুণিজন। তবে শুরু হওয়া নতুন বছর কিংবা বিশ দশক (২০২০-২০২৯) নিয়ে প্রত্যাশার গল্পও শোনাচ্ছেন অনেকে।
বিশে (২০) বিষক্ষয়—এভাবেও মূল্যায়ন করছেন কেউ কেউ। বলছেন, এই বছর থেকে বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে আসবে গুণগত পরিবর্তন। সুরাহা হবে বেশিরভাগ সমস্যার। বিশ দশক হবে দেশীয় সংস্কৃতির বৈপ্লবিক জাগরণের। আবার এমনও অনেকে আছেন, যাদের কণ্ঠে হতাশার সুর। বলছেন—দশক কিংবা নতুন বছর বলে কথা নয়। ক্যালেন্ডার বদলালেও কাজের পার্থক্য ১৯ আর ২০! মানে সামান্যই।
‘দশে ধ্স’ আর ‘বিশে বিষক্ষয়’ অথবা ‘১৯/২০’ বিষয়ে সংস্কৃতির বিভিন্ন বিভাগের উল্লেখযোগ্য শিল্পীরা নিজেদের পর্যালোচনা তুলে ধরলেন বাংলা ট্রিবিউন-এর বিশেষ এই আয়োজনে।

রুনা খাননতুন বছরে এসে কর্মজীবন, ব্যক্তিজীবন, সামাজিক জীবনসহ সকল ক্ষেত্রে সবার মঙ্গল কামনা করি।
মানুষের একটাই তো জীবন। সেই জীবনটা যেন প্রতিটি মানুষ আনন্দ নিয়ে উপভোগ করে যেতে পারেন, সেই প্রার্থনা সবসময় করি। আজও করছি।
সঙ্গে আমার জীবনেও যেন শারীরিক সুস্থতা আর মানসিক শান্তি বজায় থাকে—সেটার প্রত্যাশা করি।
জীবন মানেই কিছু ক্রাইসিস, কিছু না পাওয়ার বেদনা। এটা থাকবেই। সেটা জীবনেরই একটা অংশ। ফলে এসব নিয়ে আমি আসলে খুব একটা ভাবি না।
তবে প্রসঙ্গক্রমে বছরের শেষ দিনটিতে দাঁড়িয়ে এটুকু বলতে চাই, আমাদের কাজটা বেশ শ্রমসাধ্য। অন্যরা যেখানে সাধারণত ৮ ঘণ্টা কাজ করেন, আমরা সেখানে ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা কাজ করি। বাইরে থেকে মনে হয় আমাদের অনেক রঙিন জীবন, বাস্তবে তা নয়।
প্রচণ্ড গরম, তার ওপর ২০ ডিগ্রি (লাইট) বেশি তাপমাত্রার মধ্যে কাজ করি। যখন প্রচণ্ড শীত তখনও খালি পায়ে, পাতলা কাপড় গায়ে হাটে-মাঠে কাজ করতে হয়।
তবে এসব কষ্ট থাকে না, যখন একটা কাজ মানুষ পছন্দ করে, একটু স্বীকৃতি পাই। বিশ্বাস করুন, সব ভুলে যাই তখন।
অন্যদের মতো আমার জীবনেও না পাওয়ার বেদনা হয় তো আছে। তবে যেটুকু পেয়েছি, সেটা নিয়ে আমি খুব আনন্দে থাকি। বারবার মনে হয়, এটুকুও তো না পেতে পারতাম। ফলে আমার মধ্যে না পাওয়ার অতৃপ্তি খুব কম।
সব কথার পরের কথা, আমি খুব অল্পতে খুশি হই। এক জীবনে সব পেতে হবে, এমন তো কথা নেই।
নতুন বছরের নতুন দশকে সবার জন্য শুভকামনা। সবার মঙ্গল হোক। যে যার কর্মের সুফলটা যাতে ভোগ করে যেতে পারেন—সেই প্রার্থনা করি। আমার জীবনটাও যেন আরামের হয়, যে ক’টা দিন বাঁচি।
নববর্ষের শুভেচ্ছা।
শ্রুতিলিখন: মাহমুদ মানজুর