জয় বাংলা কনসার্টে তারুণ্যের জোয়ার

পপপপতারুণ্যের জোয়ার উঠেছে রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে। সেখানে দেশাত্মবোধ, বঙ্গবন্ধুর ভাষণ আর স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান মিলেমিশে একাকার।  
স্বাধীনতার ডাক দিয়ে ১৯৭১ সালের এই দিনে (৭ মার্চ) বঙ্গবন্ধুর দেওয়া ঐতিহাসিক ভাষণকে কেন্দ্র করে সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) প্রতিষ্ঠান ইয়াং বাংলার তত্ত্বাবধানে ষষ্ঠবারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে জয় বাংলা কনসার্ট।
শনিবার দুপুরে বৃষ্টির বাধা পেরিয়ে ২টার দিকে এই কনসার্ট শুরু হয় জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে। স্টেডিয়ামে উপস্থিত প্রায় ৫০ হাজার তরুণ-তরুণী বুকে হাত রেখে কণ্ঠ মেলান জাতীয় সংগীতের সঙ্গে।
এরপর বাজানো হয় ‘জয় বাংলা বলে আগে বাড়ো’ গানটি। গানটির মাধ্যমে শোনানো হয় বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের একাংশ—‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’
পপপমারিয়া নূরের সঞ্চালনায় এরপর বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের বেশ কয়েকটি ব্যান্ড পারফর্ম করে। তবে বেলা তিনটার পর কনসার্টের মূল পর্ব শুরু হয় ব্যান্ড এফ মাইনরের পরিবেশনা দিয়ে। এরপর একে একে মঞ্চে ওঠেন মিনার রহমান, এভোয়েড রাফা, শূন্য ও ভাইকিংস। সবাই শুরুটা করেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান দিয়ে। এরপর নিজেদের গান পরিবেশন করে মাতিয়ে রাখেন উপস্থিত শ্রোতাদের।
সন্ধ্যার আগে মঞ্চে আরও ওঠার কথা রয়েছে ব্যান্ড লালন ও আরবো ভাইরাস সদস্যদের। এরপর শোনা যাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ।
সন্ধ্যার পর মঞ্চ মাতাতে উঠবে ক্রিপটিক ফেইট, নেমেসিস, ফুয়াদ অ্যান্ড ফ্রেন্ড এবং চিরকুট।
জয় বাংলা কনসার্টের আয়োজক ইয়াং বাংলা জানিয়েছে, ব্যান্ড দলগুলোর গানের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বেশ কিছু ঐতিহাসিক উক্তি দিয়ে সাজানো হয়েছে পুরো কনসার্ট। তবে আজকের আয়োজনের বড় চমক হয়ে থাকছে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে হলোগ্রাফিক রিপ্রেজেন্টেশন। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের ২৩টি বাক্য বাছাই করে নির্মিত হয়েছে এই প্রজেকশন। এটি প্রদর্শিত হবে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ।
পডএবারের আয়োজন প্রসঙ্গে সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) ট্রাস্টি নসরুল হামিদ বিপু বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে ভাষণটি দিয়েছিলেন, সেটি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ভাষণ। সেই ভাষণের গুরুত্ব ও তাৎপর্য তরুণ প্রজন্মকে আমরা জানাতে চাই। পাঁচ বছর ধরে এই আয়োজনের মাধ্যমে সেই চেষ্টা চালিয়ে আসছি। শুধু ভাষণই নয়, সঙ্গে যুদ্ধদিনে প্রেরণা দেওয়া গানগুলোও আমরা ছড়িয়ে দিতে চাই তরুণ প্রজন্মের মাঝে। এবার থাকছে হলোগ্রাফিক প্রজেকশনসহ বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আরও বিশেষ আয়োজন। আমার বিশ্বাস, এবারের আয়োজন আরও বিশেষ হয়ে উঠবে তরুণদের কাছে।’
এদিকে কনসার্টে আগত দর্শকদের মধ্যে করোনা ভাইরাস সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করেছে আয়োজক প্রতিষ্ঠান। স্টেডিয়ামের এক পাশে রয়েছে স্যাভলনের স্টল। সেখান থেকে কনসার্টে আগত দর্শকরা হাত ধুয়ে নিচ্ছেন।
সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) জানায়, গত বছর (৭ মার্চ, ২০১৯) এই কনসার্ট টেলিভিশন ও অনলাইনে উপভোগ করেছেন ১০ লাখের বেশি দর্শক। আর সরাসরি আর্মি স্টেডিয়ামে উপস্থিত থেকে কনসার্ট উপভোগ করেছেন ৬০ হাজার মানুষ।পপ

ছবি: সাজ্জাদ হোসেন