করোনাকালে শিল্পীরা ঐক্যবদ্ধ হলেন অন্তর্জাল আড্ডায়

লাইভ আড্ডায় মন্ত্রী ও শিল্পীরাকরোনাভাইরাস প্রতিরোধে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি শিল্পীরাও নিজেদের গৃহবন্দি করে রেখেছেন। সাময়িক এই দূরত্ব থেকে শিল্পীদের আরও কাছাকাছি আনতে কিংবা একাকী জীবনে বৈচিত্র্য আনতে অথবা চলমান অচল সময়টাকে সচল রাখতে অন্যরকম এক উদ্যোগ নিয়েছেন সংগীতশিল্পী কৌশিক হোসেন তাপস।

দেশের একমাত্র সংগীতভিত্তিক টিভি চ্যানেল গানবাংলার এই ব্যবস্থাপনা পরিচালক আগেই পাঁচ শতাধিক শিল্পীকে নিয়ে ‘গানবাংলা পরিবার’ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপ তৈরি করেছেন। মূলত সেই গ্রুপ থেকেই চলমান দুর্যোগ মোকাবিলায় অন্তর্জাল আড্ডায় এক হয়েছেন তারা।

এমন অসময়ে ঐক্যের জানান দিতেই বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) গানবাংলা টেলিভিশনের ফেসবুক পেজে লাইভ আড্ডায় যুক্ত হন শিল্পীরা।

কৌশিক হোসেন তাপসের সঞ্চালনায় এ আড্ডায় উপস্থিত হয়ে শিল্পীরা করোনাভাইরাস দুর্যোগ মোকাবিলায় সাধারণ মানুষের প্রতি সচেতনতামূলক বক্তব্য রাখার পাশাপাশি দুর্যোগকালীন ও দুর্যোগ-পরবর্তীতে শিল্পীদের কাজের সুযোগ সৃষ্টিসহ বর্তমান ও আসন্ন নানা সংকট নিয়ে খোলামেলা আলোচনায় যুক্ত হন।



আলোচনায় অংশ নেন গীতিকার আসিফ ইকবাল, সুরকার শওকাত ইসলাম, ব্যান্ড তারকা হামিন আহমেদ, সংগীতশিল্পী ফাহমিদা নবী, মেজবাহ আহমেদ, আরফিন রুমি, অদিত, ইলিয়াস, শান, সিঁথি সাহা, লুইপা, ঐশী, রেশমিসহ অনেকেই।
শিল্পীরা বলেন, ‘করোনাভাইরাসের মতো দুর্যোগ কেটে গেলেও আরও অনেকদিন আমরা ভাঙা অবস্থায় থাকবো। কনসার্টে জড়ো হওয়া নিয়ে শ্রোতারা হয়তো অনিশ্চয়তায় থাকবেন। এই সময়টায় আমাদের কাজের সুযোগ ও আয় অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। ব্যক্তিগত ও সামগ্রিক এমন দুর্যোগ সামাল দিতে এবং সংকটের স্থায়ী সমাধানের জন্য সব শিল্পীর মধ্যে এমন একটি প্ল্যাটফর্মের কোনও বিকল্প নেই।’
আলোচনায় উঠে আসে শিল্পীদের আয় নিশ্চিত করতে নিজস্ব স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের প্রয়োজনীয়তার কথা। পাশাপাশি নিয়মিত পারফরম্যান্স নিশ্চিত করতে দেশের বিভিন্ন স্থানে অডিটোরিয়াম বরাদ্দ ও অনলাইন টিকিটিংয়ের মাধ্যমে নিয়মিত কনসার্টের আয়োজন করার। এছাড়াও শিল্পীদের ইউটিউবকেন্দ্রিক ভিউর দৌড়ে না নেমে দূরদর্শী হওয়ারও আহ্বান জানানোর পাশাপাশি শিল্পীদের নিজেদের মূল্য তৈরিতে সচেতন হতে হবে বলে বক্তারা মন্তব্য রাখেন।
আলোচনায় লন্ডন থেকে যুক্ত হন ফাহমিদা নবী ও নিজ বাসভবন থেকে যুক্ত হন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। করোনাভাইরাসের ফলে সৃষ্ট দুর্যোগ নিয়ে সরকারের প্রস্তুতির নানাদিক তুলে ধরার পাশাপাশি শিল্পীদের জন্য দুর্যোগ-পরবর্তী সময়ে বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণের প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি।
তিনি বলেন, “নেটফ্লিক্সের মতো বাংলাদেশের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলো কেন নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় দাঁড়াতে পারবে না? সে ব্যাপারে আমরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই সকলে মিলে একটি উদ্যোগ গ্রহণ করবো।”

তিনি জানান, শিল্পীদের রয়্যালটি নিশ্চিত করতে ইন্টালেকচুয়াল প্রোপার্টি রাইট রেজিস্ট্রেশন ল’ নিয়ে ইতোমধ্যে শিল্প মন্ত্রণালয় কাজ শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সম্প্রতি তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আইসিটি মন্ত্রণালয়।
লাইভ ভিডিওটি সম্প্রচারে সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন সংগীতশিল্পী জুয়েল মোর্শেদ।
গানবাংলা সূত্র জানায়, প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত নিয়মিত এই লাইভ আড্ডাটি চলবে চ্যানেলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে।