স্কুটিতে চেপে মুরগির উচ্ছিষ্ট নিয়ে ছুটছেন নায়লা নাঈম!

স্কুটিতে চেপে মুরগির উচ্ছিষ্ট নিয়ে ছুটছেন নায়লা নাঈমসবাই যখন ঘরে বসে ‘বড় লোকের বেটি লো, লম্বা লম্বা চুল!’ গান নিয়ে ব্যস্ত, তখন নায়লা নাঈম দিনের প্রচণ্ড রোদ কিংবা রাতের ঘুঁটঘুঁটে অন্ধকার কেটে নিজের স্কুটিতে চেপে ছুটছেন রাজধানীর অলিতে-গলিতে।

কাঁচাবাজার থেকে মুরগির উচ্ছিষ্ট সংগ্রহ করে রাস্তার অবহেলিত কুকুর-বিড়ালদের খাওয়াচ্ছেন রোজ।
কারণ, এখন ‘কোভিড-১৯ টাইম’। জনশূন্য রাস্তায় ক্ষুধার্ত প্রাণীদের মুখে খাবার তুলে দিতেই তার এই অভিযান।
গত ২৭ মার্চের ঘটনা প্রসঙ্গে এই তারকা বলেন, ‘প্রায় ১৮০ থেকে ২০০ কুকুরকে এদিন আমি খাবার দিতে পেরেছি। সকাল ও দুপুরে দিয়েছি আফতাবনগর এরিয়ায়। এরপর বিকাল পাঁচটায় রামপুরা ব্রিজ থেকে শুরু করেছি। বউবাজার গিয়ে একবার খাবার রিফিল করেছি। পরে তালতলা মার্কেটে গিয়ে আরও তিনবার খাবার রিফিল করেছি। এরপর খিলগাঁও চৌরাস্তা থেকে ফেরত এসে রামপুরা ব্রিজ ইউলুপে আফতাবনগর পুরাটা কাভার করেছি। প্রায় ত্রিশ কিলোমিটারের মতো স্কুটি চালিয়েছি মধ্যরাত পর্যন্ত।’


অথচ সেদিন ছিল তার বাইক চালানোর দ্বিতীয় দিন। নিজের জন্মদিনে এই স্কুটি উপহার পেয়েছিলেন। যা এতদিন পড়েছিল নিজের পার্কিংয়ে, অযত্নে। চলমান লকডাউন-এ সেটি দিয়ে এখন নগরের অসহায় ‍কুকুরের সন্ধানে ছুটে বেড়াচ্ছেন দেশের আলোচিত এই মডেল।
পরের দিন প্রায় ৪০ কিলোমিটার এলাকা ঘুরে খাবার দিয়েছেন। এভাবে প্রতিদিনই তিন চাকার যানটি নিয়ে বের হচ্ছেন তিনি।
গতকালও (৩০ মার্চ) নায়লা একসঙ্গে অনেক এলাকায় কাভার করেছেন। তার ভাষায়, ‘গতকাল শুরু করলাম রামপুরা ব্রিজ থেকে। তালতলা মার্কেট গিয়ে রিফিল করে আমার খাওয়া নিলাম। চলে গেলাম ভিকারুননিসা নূন স্কুলের সামনে এবং ম্যানহোলের মধ্যে একটা ছোট সাদা বিড়াল দেখলাম। খুবই ছোট,  সেটাকে রেসকিউ করলাম! এরপর বেইলী রোড, প্রেসক্লাব, শান্তিনগর, পীরেরবাগের গলি, রাজারবাগ, শাহজাহানপুর, রাজারবাগ পুলিশ লাইন, খিলগাঁও রেল গেটের পাশে কিছু অংশে খাবার দিয়েছি। যখন খিলগাঁও রেলগেট পার হয়েছিলাম তখন ছোট একটা ওয়ালের ওপর দেখি বাম হাত ভাঙা একটা ছোট কুকুরের বাচ্চা। এটাকেও রেসকিউ করেছি! মোটামুটি মেইন রোডে কুকুরের সংখ্যা কম ছিল, যা ছিল মোটামুটি ভালোই ক্ষুধার্ত ছিল। দুই এক জায়গায় আমরা এটা প্রমাণ পেয়েছি যে কেউ কেউ খাবার দিয়ে গেছে।’


পেশায় ডেন্টিস্ট নায়লা। কাজ করে চলেছেন মডেলিং আর অভিনয় নিয়েও। এর ফাঁকে নিজের উদ্যোগে আহত পশু-পাখিদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন এই তারকা। জানালেন, লকডাউনে যতদিন পারেন এই কাজটি করে যেতে চান। যেন মানবশূন্য শহরে খাবারের অভাবে মারা না যায় তারা।
ঠিক একই নজির স্থাপন করছেন দেশের আরেক তারকা শিল্পী জয়া আহসানও।

* রোজ দুপুরে অসহায় কুকুরদের পাশে জয়া আহসান!