স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত সংগীতজ্ঞ কালীপদ দাস আর নেই

বীর মুক্তিযোদ্ধা, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত সংগীতজ্ঞ ওস্তাদ কালীপদ দাস আর নেই।

বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টায় খুলনা মহানগরীর বাইতিপাড়াস্থ নিজ বাসভবনে পরলোকে গমন করেন এই সংগীতজ্ঞ। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর।

তিনি দীর্ঘদিন বার্ধক্যজনিত নানা জটিল রোগে ভুগছিলেন। খুলনার এ বরেণ্য সংগীতজ্ঞের মৃত্যুতে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এদিন বেলা সাড়ে ৩টায় মহানগরীর শহীদ হাদিস পার্কে তার মরদেহে শিল্পী, সংস্কৃতিকর্মীসহ সর্বস্তরের জনগণ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর রাষ্ট্রীয়ভাবে তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। এ সময় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নেতৃবৃন্দসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

গার্ড অব অনার শেষে কালীপদ দাসের মরদেহ বিকেল সাড়ে ৫টায় রূপসা শ্মশানঘাটে দাহ করা হয়। সাংস্কৃতিক সংগঠন আব্বাসউদ্দিন অ্যাকাডেমির সাধারণ সম্পাদক মো. এনামুল হক বাচ্চু এসব তথ্য জানান।

খ্যাতনামা সংগীতজ্ঞ ওস্তাদ কালীপদ দাস স্বাধীনতা পদক ২০২০-এ ভূষিত হন। ওস্তাদ কালীপদ দাস নামেই তিনি খুলনা অঞ্চলের মানুষের কাছে বিশেষভাবে পরিচিত। খুলনার খালিশপুরের বড় বয়রা এলাকায় ১৯৩২ সালের ১ মার্চ তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন ডিপ্লোমা কৃষিবিদও।

১৯৫০ সালে বর্তমান বিএল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে পড়ার সময় সংগীতে তার হাতেখড়ি হয়। ১৯৫৩ সালে খুলনা জেলা পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় প্রয়াত সাধন সরকারের সুরে আধুনিক গান গেয়ে তিনি প্রথম স্থান লাভ করেন। ১৯৪৭ সালের ভারত বিভাগের পর সাংস্কৃতিক মজলিস, নয়া সংস্কৃতি সংসদ, অগ্রণী শিল্পী সংসদ, পাকিস্তান আর্ট কাউন্সিল, তরুণ সংঘ, সন্দীপন, পরাবাত ইত্যাদি সংগঠনের সক্রিয় সদস্য এবং নিজের প্রতিষ্ঠিত (১৯৬৫) সংগঠন সুর বিতানের সাধারণ সম্পাদক ও অবৈতনিক অধ্যক্ষ ছিলেন।

১৯৭০ সাল থেকে অর্থাৎ খুলনা বেতারের যাত্রা শুরুর দিন থেকে সংগীত পরিচালক ও প্রযোজক, কৃষি বিষয়ক অনুষ্ঠানের উপস্থাপক ও কথক এবং চিঠিপত্রের উত্তরদাতাসহ নানাভাবে জড়িত ছিলেন। শব্দসৈনিক হিসেবে তিনি ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন।