বসন্তের জন্য এক বছর অপেক্ষা!

বছর ঘুরে বসন্ত এসে গেছে! শিমুল-পলাশ-অশোকের শাখা ভরে উঠছে রক্তিম ফুলের সম্ভারে। আর এমন একটি আসল দৃশ্যের অপেক্ষায় টানা এক বছর অপেক্ষায় ছিলেন নির্মাতা রফিক সিকদার।

অবশেষে নির্মাতার অপেক্ষার অবসান ঘটলো। ১ মার্চ বসন্ত বিকেলে রক্তিম শিমুল গাছের প্রাকৃতিক ক্যানভাসে শেষ হলো ‘বসন্ত বিকেল’ ছবির শুটিং। এই একটি দৃশ্যই বাকি ছিল ছবিটির।

রফিক সিকদার জানান, ২০১৯ সালে শুটিং শুরু করেন ছবিটির। ২০২০-এর শুরুতেই ৯৯ ভাগ শুটিং শেষ হয়। বাকি ছিল মাত্র একটি দৃশ্য। সেটিও শুটিং করার কথা ছিল সে বছর মার্চের শেষ সপ্তাহে। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে সেই পরিকল্পনা ভেস্তে যায় পরিচালকের। অবশেষে এবার সেই কাঙ্ক্ষিত বসন্তের দেখা পেয়েই আর দেরি করেননি নির্মাতা ও সংশ্লিষ্টরা। শেষ করেন শুটিং।

যে দৃশ্যের মাধ্যমে নির্মাতা তুলে আনতে চাইলেন সিনেমাটির নামের সার্থকতা। যেখানে দেখা যাবে, এক আগুনলাগা বসন্ত বিকালে লাশ হয়ে আগুনের কাছে ফিরছে নায়িকা চন্দ্রাবতী। শিমুল ফুলে ছেয়ে থাকা সড়ক ধরে প্রেমিকার লাশ কাঁধে বহন করছেন নায়ক রুদ্র।

এমন একটি দৃশ্যের কয়েকটি স্থিরচিত্র সোশ্যাল হ্যান্ডেলে প্রকাশ করেছেন রফিক সিকদার। যে ছবিগুলো দেখলে যে কারও মনে দাগ কাটবে। অনুভব করা যাবে, কেন নির্মাতা অপেক্ষা করছিলেন এই একটি বসন্ত বিকেলের জন্য।

রফিক সিকদার বলেন, ‘‘অপেক্ষা বড় কথা নয়। বড় বিষয় হচ্ছে আমি আমার কাঙ্ক্ষিত বসন্ত, লোকেশন এবং ক্যানভাস খুঁজে পেয়েছি। ১ মার্চ সফলভাবে শেষ করেছি শেষ দৃশ্যের শুটিং। আমি তো মনে করি, এমন দৃশ্যের জন্য আরও দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করলেও আমার কষ্ট হতো না। এটা ঠিক, আমি চাইলে সেট বানিয়েও এফডিসিতে এই দৃশ্য করতে পারতাম। কিন্তু আমি আমার দর্শক ও গল্পের কাছে সৎ থাকতে পারতাম না।’’

মানিকগঞ্জের বালিয়াটি ও সাটুরিয়ায় শেষ দৃশ্যের শুটিং করেছে টিম ‘বসন্ত বিকেল’। যেখানে সারি সারি শিমুল আর পলাশের গাছ রয়েছে।

একটি দৃশ্যে শিপনমহানায়িকা সুচিত্রা সেনের স্মৃতিবিজড়িত পাবনা শহরকে কেন্দ্র করে এই সিনেমার কাহিনি আবর্তিত হয়েছে। গল্পে দেখা যাবে, সুচিত্রার শহরে শৈশব হতে বেড়ে ওঠা মুসলিম ধর্মাবলম্বী রুদ্র ও হিন্দু ধর্মাবলম্বী চন্দ্রাবতীর দুরন্ত প্রেম। দুজনে পরিণত বয়সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় প্রণয়ে জড়িয়ে পড়ে, যার সমাপ্তি ঘটে বিয়োগান্তক এক পরিস্থিতির ভেতরে, এক বসন্ত বিকেলে।

ছবির প্রধান দুটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন শিপন মিত্র ও শাহ হোমায়রা সুবাহ। এছাড়াও আছেন ওমর সানী, সুচরিতা, তানভীর তনুসহ প্রমুখ।

নির্মাতা রফিক সিকদার একই সাথে এই চলচ্চিত্রের গল্পকার, সংলাপ রচয়িতা এবং চিত্রনাট্যকারের ভূমিকায় রয়েছেন। চলচ্চিত্রটি প্রযোজনা করছেন সামসুজ্জামান রিমন। আরবিএস টেক লিমিটেড।

ছবিটি আসছে রোজার ঈদ উৎসবে মুক্তির প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান নির্মাতা।