হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরলেন ফরিদা পারভীন

টানা ৮ দিন হাসপাতালে করোনার চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরেছেন কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী ফরিদা পারভীন।

করোনা পজিটিভ হয়ে ১২ এপ্রিল থেকে রাজধানীর ইউনিভার্সাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন এই লালনকন্যা। আজ, ২০ এপ্রিল দুপুর নাগাদ তিনি বাসায় ফিরে যান।

হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, করোনা পজিটিভ ছাড়াও এই শিল্পী অনেক দিন ধরে কিডনি, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, থাইরয়েডসহ নানা জটিলতায় ভুগছিলেন।

হাসপাতালটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. আশীষ কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘ফরিদা আপা এখন অনেকটাই সুস্থ। করোনার তেমন কোনও উপসর্গ আর নেই। অক্সিজেন মাত্রাটাও স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে এসেছে। তাই হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিয়েছি উনাকে। তবে বাসায় গিয়ে তাকে আরও কয়েকদিন আইসোলেশনে থাকতে হবে। আমরা ফলোআপে রাখবো উনাকে। আশা করছি শিগগিরই তিনি স্বাভাবিক জীবনে ফিরবেন।’

এদিকে লালনকন্যার ছেলে ইমাম জাফর জানান, ‘এপ্রিলের প্রথম থেকে অসুস্থবোধ করছিলেন আম্মা। গত ৭ এপ্রিল তার করোনা টেস্ট করা হয়। ৮ এপ্রিল পজিটিভ রিপোর্ট পাই। ১২ এপ্রিল হাসপাতালে ভর্তি করালাম। আজ (২০ এপ্রিল) বাসায় ফিরলাম। এখন আম্মা বেশ সুস্থ আছেন।’

ফরিদা পারভীন লালনের গান গেয়ে দেশে-বিদেশে খ্যাতি পেয়েছেন। ১৯৫৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর নাটোর জেলার সিংড়া থানার শাওল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। জন্ম নাটোরে হলেও বড় হয়েছেন কুষ্টিয়ায়। ১৯৬৮ সালে রাজশাহী বেতারের তালিকাভুক্ত শিল্পী হিসেবে নজরুলসংগীত দিয়ে শুরু করেন। ১৯৭৩ সালের দিকে দেশাত্মবোধক গান গেয়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।

এরইমধ্যে সাধক মোকসেদ আলী শাহের কাছে ফরিদা পারভীন লালন সংগীতের তালিম নেন। এরপর থেকে তিনি মূলত লালনের গান সংগ্রহ, স্টাফনোটেশন তৈরি ও গাওয়া নিয়েই মূলত আছেন।

১৯৮৭ সালে ফরিদা পারভীন সংগীতাঙ্গনে বিশেষ অবদানের জন্য একুশে পদক পান। এছাড়া ২০০৮ সালে তিনি জাপান সরকারের পক্ষ থেকে ‘ফুকুওয়াকা এশিয়ান কালচার’ পুরস্কারও পেয়েছেন। সেরা প্লেব্যাক গায়িকা হিসেবে ১৯৯৩ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছেন লালনের এই নন্দিত শিল্পী।