অবশেষে কান অফিসিয়াল সিলেকশনে বাংলাদেশের ছবি!

বিশ্ব চলচ্চিত্রের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ আসর কান-এর অফিসিয়াল সিলেকশনে অবশেষে পা রাখলো বাংলাদেশ। আর সেটি সম্ভব হলো নির্মাতা আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ সাদের ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে।

ছবিটির প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন আজমেরী হক বাঁধন। যিনি গেলো প্রায় তিন বছর ধরেই ছবিটি নিয়ে স্বপ্ন দেখছিলেন। যার বাস্তবায়নের শুরুটা হলো বৃহস্পতিবার (৩ জুন) কান উৎসব কর্তৃপক্ষের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার মধ্য দিয়ে।

বাঁধন বাংলা ট্রিবিউনকে বললেন, ‘আমাদের এতদিনের কষ্ট আর অপেক্ষার ফলাফল আজ হাতে পেলাম। আমরা গর্বিত এই উৎসবের অফিসিয়াল সিলেকশনে বাংলাদেশ নামটি যুক্ত করতে পেরে। আমাদের সব কষ্ট সার্থক।’

এদিকে নির্মাতা সাদ ২০১৬ সালেই নিজের জাত চিনিয়েছেন ‘লাইভ ফ্রম ঢাকা’ চলচ্চিত্র দিয়ে। ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ তার দ্বিতীয় নির্মাণ।

এদিকে ৬ জুলাই থেকে ফ্রান্সের কান শহরে বসছে এবারের উৎসব। ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ সংশ্লিষ্টরা এবার স্বপ্ন দেখছেন ছবিটি থেকে আরও বড় চমকের।

ছবিটির প্রেক্ষাপট প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নির্মাতা জানান, প্রাইভেট মেডিকেল কলেজের একজন শিক্ষক রেহানা মরিয়ম নূরকে কেন্দ্র করেই এই সিনেমার গল্প। যেখানে রেহানা একজন মা, মেয়ে, বোন ও শিক্ষক হিসেবে জটিল জীবনযাপন করেন। এরমধ্যে এক সন্ধ্যায় কলেজ থেকে বেরোনোর সময় একটি অপ্রত্যাশিত ঘটনার সাক্ষী হন রেহানা।

এরপর থেকে তিনি এক ছাত্রীর পক্ষ হয়ে সহকর্মী এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে ঘটনার প্রতিবাদ করতে শুরু করেন এবং ক্রমশ একরোখা হয়ে ওঠেন। কিন্তু একই সময়ে তার ৬ বছর বয়সী মেয়ের বিরুদ্ধে স্কুল থেকে রূঢ় আচরণের অভিযোগ করা হয়। এমন অবস্থায় অনড় রেহানা তথাকথিত নিয়মের বাইরে থেকে সেই ছাত্রী ও তার সন্তানের জন্য ন্যায় বিচারের খোঁজ করতে থাকেন।

আর এই অনবদ্য রেহানা চরিত্রে অভিনয় করেন আজমেরী হক বাঁধন। 

পোটোকল ও মেট্রো ভিডিও’র ব্যানারে ছবিটি প্রযোজনা করেছেন সিঙ্গাপুরের প্রযোজক জেরেমি চুয়া, নির্বাহী প্রযোজক এহসানুল হক বাবু এবং সহ-প্রযোজনা করেছেন রাজীব মহাজন, আদনান হাবিব, সাঈদুল হক খন্দকার। ছবিটির সিনেমাটোগ্রাফার তুহিন তমিজুল, প্রোডাকশন ডিজাইনার আলী আফজাল উজ্জ্বল ও সাউন্ড ডিজাইনার শৈব তালুকদার। ছবিটি সহ-প্রযোজনা করেছে সেন্সমেকারস প্রডাকশন।

ছবিতে আরও অভিনয় করেছেন আফিয়া জাহিন জাইমা, কাজী সামি হাসান, আফিয়া তাবাসসুম বর্ণ, ইয়াছির আল হক, সাবেরী আলমসহ অনেকে।

এদিকে এমন খবর পেয়ে ফেসবুকে শুভেচ্ছায় ভাসছেন সাদ-বাঁধন টিম। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় দেশের অন্যতম নির্মাতা অমিতাভ রেজা বলেন, ‘বাংলা সিনেমার ইতিহাসে এরচেয়ে ভালো দিন আর কখনও আসে নাই।’

এর আগে ২০০২ সালে কান উৎসবে বাংলাদেশের মুখ খানিকটা উজ্জ্বল করেছিলেন তারেক মাসুদ। সে বছর তার ‘মাটির ময়না’ ছবিটি ডিরেক্টরস ফোর্টনাইট বিভাগের জন্য নির্বাচিত হয়েছিল।