গান চুরির অভিযোগ: প্রীতমের কাছে ক্ষমা চাইলেন সাথী

৩ জুন ইউটিউবে অবমুক্ত হয় তরুণ গায়িকা সাথী খানের গাওয়া ‘বনমালী’ গানচিত্র। গানটির দুটি লাইন নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। এতে বাক্য ও ছন্দ চুরি বা নকলের অভিযোগ তুলেছেন সংগীতশিল্পী প্রীতম আহমেদ।

এটি নিয়ে গেলো এক সপ্তাহ পাল্টাপাল্টি অন্তর্জালে আক্রমণ চলার পর ৮ জুন রাতে আনুষ্ঠানিকভাবে পুরো দোষ স্বীকার করে প্রীতম আহমেদের কাছে ক্ষমা চান সাথী খান। আর পুরো বিষয়টি আইনি পর্যায়ে গড়ানোর আগেই শান্তিপূর্ণ সমাধানের উদ্যোগ নেন গানটির প্রযোজক-পরিবেশক সিডি চয়েসের কর্ণধার জহিরুল ইসলাম সোহেল।

ক্ষমা চাইতে গিয়ে প্রীতম আহমেদকে উদ্দেশ করে সাথী খান বলেন, ‘‘বনমালী’ গানটিতে সম্মানিত গীতিকার, সুরকার, সংগীত পরিচালক ও কণ্ঠশিল্পী প্রীতম আহমেদ ভাই-এর ‘কৃষ্ণলীলা’ গানের প্রথম দুই লাইন ব্যবহার করা হয়েছে। আমি শুধুমাত্র গানটি গেয়েছি। তবু আমার কোনও কথায় আপনার সম্মানহানি হলে আমি ক্ষমাপ্রার্থী।’’

সাথী খান প্রীতমের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন ‘বনমালী’ গানটির গীতিকারের পক্ষ থেকেও। বলেন, ‘এটা নিয়ে প্রীতম ভাই সম্পর্কে যত কমেন্ট ও পোস্ট এর আগে করা হয়েছে তার জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত। গানটি নিয়ে আর যেন কোনও বিতর্ক তৈরি না হয় সেই প্রত্যাশায় সকলের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’

এদিকে সাথী খানের ক্ষমা চাওয়া ও চুরির ঘটনার শেষ প্রতিক্রিয়া প্রসঙ্গে প্রীতম আহমেদ বলেন, ‘আজকের বাংলাদেশের গানে আমাদের সিনিয়রদের অনেক ঘাম ও পরিশ্রম জড়িয়ে আছে। আমরাও গত ২০/২১ বছর ধরে তিলে তিলে নিজেদের তৈরি করেছি। এসব গানের কথা-সুর চট করেই কেউ অন্য একটা গানে ঢুকিয়ে নিজের দাবি করতে পারে না। প্রতিটি সৃষ্টির পেছনে এক বা একাধিক মানুষের জীবনের অনেক শ্রম ও সাধনা থাকে। হুট করেই আকাশ থেকে তারকা নেমে আসে না। আর জনপ্রিয়তা খুব ঠুনকো বিষয়, সেটা পাওয়ার জন্য অন্যের সম্পদ চুরি করার দরকার নেই। যার যতটুকু প্রাপ্য তাকে তা দিতেই হবে। আমি আগেও বলেছি এখনও বলি, আমরাও আমাদের সিনিয়রদের দোয়া ও ভালোবাসা নিয়ে পথ চলছি। যারা নতুন আসবে, তারাও ভালোবাসার পথ ধরেই সব জয় করতে পারবে। সততা ও পরিশ্রমের কোনও শর্টকাট নেই। সাথী ও এই গানের সুরকার যেভাবে উল্টো আমাকেই অভিযুক্ত করছিল শুরুতে, তা অন্যায় ও শিষ্টাচার-বহির্ভূত। প্রযোজক সোহেল ভাইয়ের অনুরোধ আর সাথী প্রকাশ্যে ক্ষমা না চাইলে আমি নিশ্চিত মামলা করতাম। কারণ, আমাদের ছাড় দিতে দিতেই আজ এই ইন্ডাস্ট্রিতে চুরির সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে।’

প্রীতমের কথা-সুর-কণ্ঠে মূল গানটির রিমেক ভার্সন:

২০০৪ সালের ২৮ মে প্রকাশ হয়েছিল প্রীতম আহমেদের ‘চলো পালাই’ অ্যালবাম। যেখানে ‘সংসার’, ‘মেয়ে’, ‘কৃষ্ণ করলে লীলাখেলা’, ‘চলো পালাই’ গানগুলো জনপ্রিয় হয়। শ্রোতাপ্রিয়তার কাতারে সামনে ছিল ‘কৃষ্ণ করলে লীলাখেলা’ গানটি। যার রিমিক্স প্রকাশ হয় ২০১২ সালে একই শিল্পীর ‘ভালো থেকো’ অ্যালবামে। গানটির কপিরাইট প্রীতমের নামে রেজিস্ট্রেশন করা হয় ২০০৯ সালে।

গানটির অন্যতম জনপ্রিয় লাইন হলো- কৃষ্ণ করলে লীলাখেলা আর আমি করলে ঢং/ বড়লোকের সবই রাইট হয় গরিব করলে রং। অন্যদিকে সদ্য প্রকাশিত সাথী খানের ‘বনমালী’ গানটিতে রয়েছে- কৃষ্ণ করলে লীলাখেলা আর রাধা করলে ঢং/ পুরুষ মানুষের সবই রাইট হয় নারী করলে রং।