অনুরাগ কাশ্যপকে বলা হয় বলিউডের ভার্সেটাইল মেধাবীদের অন্যতম। বলিউড বক্স অফিস থেকে বিশ্ব চলচ্চিত্রে যার দৃপ্ত পদযাত্রা সমানতালে। চলমান কান ফেস্টিভালে গিয়ে সেই অনুরাগের দেখা পেলেন ঢাকার আজমেরী হক বাঁধন। বিপরীতে রেহানা মরিয়ম নূর নামের এক বাংলাদেশি নারীকে খুঁজে পেলেন ‘গ্যাংস অব ওয়াসিপুর’-খ্যাত অনুরাগ।
মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) সন্ধ্যার পর অনুরাগ কাশ্যপের সঙ্গে দেখা ও আড্ডা হয় আজমেরী হক বাঁধনের। সঙ্গে ছিলেন ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ প্রযোজক জেরেমি চুয়া ও নির্বাহী প্রযোজক এহসানুল হক বাবু। তারও আগে অনুরাগ কাশ্যপ ছবিটি দেখেন। বাঁধনের সঙ্গে দেখা হওয়ার পর বারবার বললেন ছবিটির প্রতি তার মুগ্ধতার কথা।
কান থেকে বাঁধন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘‘অনুরাগের সঙ্গে আমাদের প্রযোজকের ছোট্ট একটি বৈঠক ছিল। ইনফ্যাক্ট সিঙ্গাপুরে ‘লাইভ ফ্রম ঢাকা’ প্রদর্শনীর পর থেকে জেরেমির সঙ্গে অনুরাগের ভালো বন্ধুত্ব হয়। যাই হোক, অল্প সময়ের জন্য হলেও সন্ধ্যাটা আমরা অসাধারণ আড্ডার মধ্যে কাটালাম। আমাদের সঙ্গে ছিলেন ভ্যারাইটি পত্রিকার সম্পাদকসহ আরও অনেকে। যারা সবাই আমাকে আসলে রেহানা বলেই সম্বোধন করছিলেন। বারবার সাদ ও ছবিটির প্রশংসা করছিলেন। এ মুগ্ধতার অনুভূতি আসলে বলে বোঝানো সম্ভব নয়।’’
এই আড্ডাই নয়, কানে যাওয়ার পর থেকে প্রতিনিয়ত উড়ছেন আজমেরী হক বাঁধন। প্রতিনিয়ত নিজের সব আপডেট জানাচ্ছেন সোশ্যাল হ্যান্ডেলে। নিয়মিত ফেসবুক লাইভে এসে জানাচ্ছেন সারাদিনের গল্প ও আগামী দিনের পরিকল্পনা। বাদ যাচ্ছে না তার মর্নিং ওয়াকের দৃশ্যও।
বাঁধন বলেন, ‘আসলে প্রথম শো দেখার আগ পর্যন্ত আমি আমার জীবনের সর্বোচ্চ প্রেসার নিয়েছি। শো শেষ হওয়ার পর সেই যে করতালি শুরু হলো সেটা তো আর থামছে না। কানে বাজছে এখনও। সেই থেকে আমি আসলেই পাখি হয়ে গেলাম। নিজেকে মুক্ত মনে হচ্ছে। এখন যেখানেই যাই, রেহানা বলে মানুষ হাই দিচ্ছে, এগিয়ে আসছে। তারা কে কোন শহরের মানুষ, পরিচয় কি- আমি কিছুই জানি না। এটা যে কী পরিমাণ ভালো লাগার বিষয়, বলে বুঝাতে পারবো না।’
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কান-তীরে বসে অনুরাগের সঙ্গে আড্ডা দিয়ে বাঁধন আরও রিচার্জ হয়েছেন বলে জানান। বললেন, ‘এই মানুষগুলোর সবচেয়ে বড় গুণ এরা মানুষকে এপ্রিসিয়েট করতে জানেন। তারা ভাবেন না এটা কোন দেশের ছবি, কেমন নির্মাতা বা আর্টিস্ট। তারা কাজ দেখে সেটার মূল্যায়ন করেন। আমি অন্তত অনুরাগের কথায়-মেশায় কোনও অভিনয় দেখিনি। একেবারে ন্যাচারাল। এবং তিনি ছবির দৃশ্য ধরে ধরে প্রশংসা করছেন। সারাক্ষণ সাদ, রেহানা, ইমুর (আমার বাচ্চার চরিত্র) প্রশংসা করছিলেন। অসাধারণ ফিল্ম ক্রিটিক বলে মনে হলো।’
বাঁধন বললেন, ‘আমার আর প্রত্যাশা নেই। আজ পর্যন্ত যেটুকু পেয়েছি, সেটাই অনেক। আর পুরস্কার পেলেও সেটার দাবিদার আমি নই। তার পুরোটা নির্মাতা সাদের। আমি শুধু তার আদেশ মান্য করার চেষ্টা করেছি অক্ষরে অক্ষরে।’
কান উৎসবের অফিসিয়াল সিলেকশনে বাংলাদেশের প্রথম ছবি হিসেবে আমন্ত্রণ পেয়েছে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’। ছবিটির চিত্রনাট্য ও সম্পাদনা করেছেন নির্মাতা আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ নিজেই।
একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক রেহানা মরিয়ম নূরকে কেন্দ্র করে এর গল্প। কর্মস্থলে ও পরিবারে তাল মেলাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় তাকে। কারণ, শিক্ষক, চিকিৎসক, বোন, কন্যা ও মা হিসেবে জটিল জীবনযাপন করেন তিনি।