এবার তিনি লিপস্টিকের মডেল!

নন্দিত অভিনেত্রী দিলারা জামান ৭৮ বসন্তে পা রেখেছেন গত ১৯ জুন। এটা যে শুধুই ক্যালেন্ডারের মারপ্যাঁচ সেটি তিনি প্রমাণ করে চলেছেন নিরন্তর। এখনও তিনি ক্যামেরার সামনে নিয়মিত।

তবে মাঝে মাঝে তার গেটআপ-মেকআপ আর কার্যক্রমে চমকে ওঠেন সবাই। যেখানে তিনি বার বার বয়সের অংক উড়িয়ে দেন বাউন্ডারির বাইরে। ২০১৯ সালে লাইফস্টাইল ম্যাগাজিন ‘আইস টুডে’র একটি সংখ্যার প্রচ্ছদে ওয়েস্টার্ন লুকে হাজির হয়ে সবাইকে বোকা বানিয়ে দেন বর্ষীয়ান এই অভিনেত্রী। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেটির রেশ কাটতে না কাটতে একটি নাটকে অভিনেতা ইরফান সাজ্জাদের বিপরীতে ১৬ বছরের কিশোরীর চরিত্রে অভিনয় করেও তাক লাগান জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এই অভিনেত্রী! 

এবার তিনি সোশ্যাল হ্যান্ডেলে হাজির হলেন ফামি ইউকে ব্র্যান্ডের একটি লিপস্টিকের প্রচারক হিসেবে। নব্বই দশকের অন্যতম মডেল যুক্তরাজ্য প্রবাসী স্মৃতি ফামির গড়া এই ব্র্যান্ডের লিপস্টিক ঠোঁটে মাখেন গর্জিয়াস দিলারা জামান। তেমন দুটি স্থিরচিত্র ফেসবুকে শেয়ার করে স্মৃতি ফামি লেখেন, ‘আমি আজ অনেক খুশি। কারণ আমাদের দেশের সবার শ্রদ্ধেয় অভিনয়শিল্পী দিলারা জামান ফামি ইউকে-এর লিপস্টিক পছন্দ করেছেন।’স্মৃতি ফামি

লন্ডন থেকে ফামি আরও বলেন, ‘এটাকে আসলে মডেলিং বলা যাবে কী না, জানি না। দিলারা আন্টির মেয়ে রাইসা যুক্তরাষ্ট্রে থাকে। সে আমার ছোট হলেও বন্ধুর মতোই। তো রাইসা সম্প্রতি আন্টির জন্য উপহার হিসেবে কিছু লিপস্টিক অনলাইনে কিনে ঢাকা পাঠায়। আন্টি সেটা ঠোঁটে মেখে ছবিগুলো পাঠান। খুব প্রশংসা করেন। বলেন, নিয়মিতই ব্যবহার করবেন আমার লিপস্টিক। উনার মতো গুরুজনের এমন উৎসাহকে মডেলিং বলে ছোট করতে চাই না। এটা বিজ্ঞাপনের চেয়েও অনেক অনেক বেশি কিছু। আমি কৃতজ্ঞ।’

এখনও নিয়মিত কাজের বাইরে নিজেকে প্রতিনিয়ত ভাঙা প্রসঙ্গে দিলারা জামান আগেই বলেছেন, ‘এখনও নির্মাতাসহ অন্যরা আমাকে নিয়ে ভাবেন, সেটিই বড় আনন্দের বিষয়। কারণ আমাদের এখানে তো এই চর্চাটা নেই। আটাত্তর পার করছি। তবুও আমাকে নতুন নতুন চরিত্র বা গেটআপে উপস্থাপনের জন্য অনেকে চেষ্টা করছেন যারা, তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। এটিই একজন শিল্পীর সার্থকতা বলতে পারি।’

আইস টুডে’র প্রচ্ছদে দিলারা জামানদিলারা জামানের অভিনয়ের শুরু ১৯৬৬ সালে ‘ত্রিধারা’ নাটক দিয়ে। নাটকের পাশাপাশি তিনি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেন। ১৯৯০-এর দশকে তিনি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘চাকা’ ও ‘আগুনের পরশমণি’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। পরবর্তীতে ‘ব্যাচেলর’, ‘মেড ইন বাংলাদেশ’, ‘চন্দ্রগ্রহণ’, ‘প্রিয়তমেষু’, ‘মনপুরা’সহ অসংখ্য চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। ১৯৯৩ সালে শিল্পকলায় অবদানের জন্য তিনি বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান একুশে পদকে ভূষিত হন। নাটক, চলচ্চিত্র আর বিজ্ঞাপনে এখনও নিয়মিত কাজ করে চলেছেন এই কিংবদন্তি।