সন্ধ্যা দিদি আমাকে ফোন করতে চেয়েছিলেন: রুনা লায়লা

থেমে গেলো সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের কণ্ঠ। তিনি চলে গেলেন চিরঘুমে। কিংবদন্তির প্রয়াণের খবর জানাতেই স্মৃতিকাতর হলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শিল্পী রুনা লায়লা। স্মৃতির জানালায় তাকিয়ে দুটি ঘটনা বাংলা ট্রিবিউনকে জানালেন তিনি। 

রুনা লায়লা বলেন, ‘২০১৩ সালের ১০ জানুয়ারি কলকাতার হোটেল গ্র্যান্ড ওবেরয়ের বলরুমে অষ্টম সিটিসেল-চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডে আমাকে ও সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়। সেই পুরস্কারটি সন্ধ্যা দিদির হাত থেকে পেয়েছিলাম। এটা আমার জন্য পরম পাওয়া।’

রুনা লায়লার গায়কীতে মুগ্ধ হয়েছিলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। একথা জানাতে তিনি বাংলাদেশে ফোনও করতে চেয়েছিলেন। সেই স্মৃতি হাতড়ে রুনা লায়লা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, “কলকাতার জি বাংলা চ্যানেলের সংগীত বিষয়ক একটি রিয়েলিটি শোতে অতিথি বিচারক হিসেবে গিয়েছিলাম। কুমার শানু ও জয় সরকার মূল বিচারক ছিল। প্রতিযোগিতার একটি পর্বে আমি গজল গেয়েছিলাম। সেই পর্বটি দেখেছিলেন সন্ধ্যা দিদি। পরবর্তী সময়ে আমি কলকাতায় গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছিলাম। তখন তিনি আমাকে বলেছিলেন, ‘আমার কাছে তোমার ফোন নম্বর থাকলে তোমার গজল পরিবেশনা দেখার পরপরই অভিনন্দন জানাতে ফোন করতাম। দারুণ সুন্দর করে গেয়েছো।’ তিনি অনেক বড় মাপের শিল্পী ছিলেন। তার মুখ থেকে এই প্রশংসা শোনা আমার জন্য আনন্দের ছিল। তার প্রতি আমার অগাধ শ্রদ্ধা ও প্রণাম রইলো।”

মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টায় কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। গীতশ্রীর প্রয়াণে বাংলা সংগীত জগতের একটি যুগের অবসান ঘটলো। ‘সপ্তপদী’, ‘পথে হল দেরি’, ‘অগ্নিপরীক্ষা’, ‘দেওয়া নেওয়া’, ‘পিতা-পুত্র’সহ অসংখ্য বাংলা ছবিতে তাঁর গাওয়া গান শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছে। হেমন্ত মুখোপাধ্যায় ও সলিল চৌধুরীর সঙ্গে অনেক কালজয়ী গান উপহার দিয়েছেন এই গীতশ্রী। ‘জয় জয়ন্তী’, ‘নিশিপদ্ম’ ছবিতে গান গেয়ে ভারতের জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন। বঙ্গ বিভূষণ সম্মান পেয়েছেন। ১৯৬৬ সালে কবি ও গীতিকার শ্যামল গুপ্তকে বিয়ে করেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। তাঁর গাওয়া অনেক গানের কথা শ্যামল গুপ্তর লেখা।