সে তো অন্য ধর্মের মানুষকে বিয়ে করার পর থেকেই শুনতে হচ্ছে: মিথিলা

গতকাল (৩ এপ্রিল) থেকেই তোলপাড় সোশ্যাল মিডিয়া। রাজধানীতে টিপ এক পরা শিক্ষিকার প্রতি আরেক পুলিশ সদস্যের ছুড়ে দেওয়া প্রশ্ন ছিল- ‌টিপ পরছোস কেন? 

এতে তাৎক্ষণিক জবাব এসেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি শিল্পীরা প্রতিবাদে হয়েছেন সামিল। পুরুষ-নারী নির্বিশেষে টিপ পরা ছবি দিয়েছেন ফেসবুকে। এবার প্রতিবাদে যোগ দিলেন রাফিয়াত রশিদ মিথিলা। কলকাতায় তার নতুন ছবি ‘মায়া’র পোস্টার এডিট করে নিজেকে সাজিয়েছেন টিপে।

পোস্টারটি ফেসবুকে পোস্ট করে লিখেছেন, ‘আমার টিপ নিয়ে কোনও কথা নয়, আমার স্বাধীনতা নিয়ে কোনও কথা নয়, যদি থাকে আমার আগুনে নিশ্চিহ্ন হবার ভয়, পৃথিবীটা তোমার একার নয়!’

দুই বাংলার জনপ্রিয় এ অভিনেত্রী ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজারকে বলেন, ‘শাড়ি আর টিপ বাঙালি নারীর প্রিয় সাজ। সেই নিয়ে প্রশ্ন তোলা মানে তার আত্মমর্যাদায় আঘাত করা। যা আমি মেনে নিতে পারছি না।’

ধর্ম ও অসহিষ্ণুতা নিয়ে আক্ষেপ করে এই শিল্পী বলেন, ‘ধর্ম আর অসহিষ্ণুতা বিশ্বকে ক্রমশ গ্রাস করছে। আজ হিজাব, কাল টিপ, পরশু শাড়ি.... নারীর কিছু না কিছু নিয়ে অকারণ বক্তব্য। এটা একে বারেই কাম্য নয়। আমি কী পরব সেটা সম্পূর্ণ আমার বিষয়। আমি কী করব, সেটাও। যিনি বলবেন তাকে আমার রোষের আগুনে পুড়তে হবে।’

এদিকে, ‘মায়া’র পোস্টারে টিপ পরা ছবিতে এসেছে বহু প্রশংসা। আবার কেউ করেছে খারাপ মন্তব্যও। সেই প্রসঙ্গে মিথিলার সপাট জবাব, ‘সে তো অন্য ধর্মের মানুষকে (নির্মাতা সৃজিত মুখার্জি) বিয়ে করার পর থেকেই শুনতে হচ্ছে। এ সব আর গায়ে মাখি না। ভালো থাকাটাই সবচেয়ে জরুরি আমার কাছে। কে কী বলল, কী এসে গেল!’

প্রসঙ্গত, শনিবার (২ এপ্রিল) রাজধানীর গ্রিন রোডের বাসা থেকে কলেজে যাওয়ার পথে উত্ত্যক্তের শিকার হন তেজগাঁও কলেজের প্রভাষক ড. লতা সমাদ্দার। তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘হেঁটে কলেজের দিকে যাওয়ার সময় হুট করে পাশ থেকে মধ্যবয়সী, লম্বা দাড়িওয়ালা একজন- ‘টিপ পরছোস কেন’ বলেই বাজে গালি দেন তাকে। ওই মধ্যবয়সী ব্যক্তির গায়ে পুলিশের পোশাক।’’

ঘটনার প্রতিবাদ জানালে একপর্যায়ে তার পায়ের ওপর দিয়েই বাইক চালিয়ে চলে যায় সেই ব্যক্তি। পরবর্তী সময়ে এ ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন লতা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এর প্রতিবাদ জানিয়ে বিচার দাবি করছেন অগুনতি মানুষ।