উত্তরবঙ্গের ভাষা-সংস্কৃতি-সংকট নিয়ে গান

সংগীতের ‘ওয়ান ম্যান আর্মি’ সোহান আলী। লেখেন, সুর-সংগীতায়োজনের পর গেয়ে নিজের ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজে সেটা প্রকাশ করেন। যার অন্যতম সৃষ্টি ‘চল দোতং পাহাড়’। যেখানে সোহান নিজের কথা-কণ্ঠ-সুরে তুলে ধরেছেন নাগরিক জীবনের অবসাদ ও পাহাড়ি জীবনের আখ্যান। 

সেই নৈসর্গিক প্রতিধ্বনি ছাপিয়ে এবার সোহান আলী কথা-গানে তুলে আনলেন উত্তরবঙ্গের ভাষা ও সংস্কৃতি। নাম দিয়েছেন ‘জলপাই’। ৪ আগস্ট রাতে গানটি লিরিক্যাল ভিডিও প্রকাশ হয়। সোহান জানান, গানটির কোরাস অংশের কথা ও সুর উত্তরবঙ্গের প্রচলিত গীত থেকে সংগৃহীত। যাত্রাপালার সুরের সঙ্গে ইডিএম মিউজিকের সমন্বয়ে গানটি সাজিয়েছেন গায়ক নিজেই। 

সোহান জানান, তার জন্ম দিনাজপুরে। এরপর বেড়ে ওঠা উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়। সেই সুবাদে সেখানকার বিভিন্ন বিয়ে বাড়ির গীত শুনেছেন। যা তার মনে গেঁথে আছে এখনও। সেই ঐতিহ্যকে নতুন আঙ্গিকে প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতেই তার এই প্রয়াস। 

সোহান বলেন, “উত্তরবঙ্গের গীতগুলোকে মেইনস্ট্রিমে নিয়ে আসার প্ল্যান ছিল অনেক আগে থেকেই। সে ইচ্ছা থেকেই ‘জলপাই’ গানের সৃষ্টি। গানটির জন্য আমি গাইবান্ধা গিয়েছিলাম তথ্য সংগ্রহ করতে। তবে কেউ বলতে পারেননি প্রকৃত সুরকার আর গীতিকারের নাম। যুগ যুগ ধরে এটা মানুষের মুখে মুখে প্রচলিত।” 

আঞ্চলিক বিয়ের গীতের সঙ্গে সোহান তুলে ধরেছেন তিস্তা নদীর সংকট ও স্থানীয় যৌতুক সমস্যার ব্যথা। গানের শেষে তিনি তিস্তা রক্ষা ও যৌতুক বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। 

গানের মিউজিক অ্যারেঞ্জমেন্ট নিয়ে সোহান বলেন, ‘শুরুতে ইচ্ছাকৃতভাবে যাত্রাপালার একটা আবহ তৈরি করেছি। যেন কেউ শুনলে মনে করে যাত্রাপালার গান শুনতে যাচ্ছি। তারপর হুট করে ইডিএমে চলে যাই। গানে র‌্যাপের একটা অংশ আছে, যেখানে উত্তরবঙ্গের যৌতুক সমস্যা ও তিস্তা নদীর কথা বলেছি। সব মিলিয়ে উত্তরবঙ্গের ভাষা, সংস্কৃতি ও সংকটকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।’

জলপাই: