অবশেষে ঢাকার মঞ্চে উঠলেন আধুনিক বাংলা গানের পথিকৃৎ কবীর সুমন। নিজের শারীরিক অবস্থার অবনতির বর্ণনা দিতে গিয়ে মজার ঢংয়ে রাশভারী কণ্ঠের এই গানওয়ালা বললেন, ‘মাঝে মাঝে মনে হয় শুয়ে শুয়ে গান গাই!’ আবার মজার এই পরিবেশে টেনে দিলেন গম্ভীরতা; বললেন, ‘এমন ভাগ্য করে জন্মাইনি যে, বাংলাদেশের মাটিতে মরবো’।
অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে শনিবার (১৫ অক্টোবর) সন্ধ্যে নামার আগে (বিকাল সোয়া পাঁচটা) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তন মঞ্চে ওঠেন কবীর সুমন। সঙ্গে তার সফরসঙ্গী তিনজনকে পরিচয় করিয়ে দিলেন। গান শুরু করার আগে ছোট্ট বক্তব্যে তিনি বললেন তার কিছু না পারার কথা।
সুমনের ভাষায়, ‘এখন গিটার বাজাতে পারি না, এটা নিয়ে দুঃখ নেই। গুরুদের কৃপায় গাইতে পারি। এটাই আনন্দ।’
শরীরে বাসা বাঁধা দুটো রোগের কারণে এখন আর ঠিক মতো দাঁড়াতেও পারেন না এই গানওয়ালা। চলাচলের জন্য বসতে হয় চলন্ত চেয়ারে। সমস্যা হয় কোথাও একটানা বসে থাকলেও। সেটি মনে করিয়ে দিয়ে সুমন বললেন, ‘মাঝে মাঝে মনে হয় শুয়ে শুয়ে গান গাই!’
ঠিক এই পর্যায়ে বিরতিতে গেলেন গানওয়ালা। যাবার আগে শোনালেন বাংলাদেশ নিয়ে অদ্ভুত এক অনুভূতির কথা। হাতের পাশে রাখা ইনহেলার দেখিয়ে বললেন, ‘ভয় পাবেন না, মরবো না। আমি এমন ভাগ্য করে জন্মাইনি যে, বাংলাদেশের মাটিতে মরবো।’
এরপরই অনুষ্ঠানস্থল থেকে আয়োজকরা বের করে দেয় গণমাধ্যমকর্মীদের! এতে প্রচণ্ড বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় আয়োজকদের প্রতি। টিকিট অব্যবস্থাপনা, অডিটোরিয়াম জটিলতা এবং সংবাদকর্মীদের সঙ্গে অসৌজন্য আচরণের কারণে আগে থেকেই বিতর্কের জন্ম দিয়েছে আয়োজক প্রতিষ্ঠান পিপহোল।
যার শেষ পেরেকটা পড়লো সুমনের প্রথম দিনের আয়োজনের আধা ঘণ্টার মধ্যে সংবাদকর্মীদের বের করে দেওয়ার মাধ্যমে।
এই বিষয়ে আয়োজকদের বক্তব্য এমন, সাংবাদিকদের আধাঘণ্টা সুযোগ দেওয়া হলো সংবাদ সংগ্রহ ও ভিডিও ফুটেজের জন্য। তারা তো টিকিট কাটা দর্শক নন। ফলে তাদের উপস্থিতির কারণে টিকিট-কাটা দর্শকদের সংগীত উপভোগে ব্যাঘাত ঘটবে!
২০০৯ সালের ১৬ অক্টোবর শেষবার ঢাকার মঞ্চে গেয়েছিলেন সুমন।
ছবি: সাজ্জাদ হোসেন