টানা ছয় মাস একা থেকে নওয়াজুদ্দিনের উপলব্ধি

দীর্ঘ এক যুগের বেশি সময় ধরে স্ট্রাগল করেছেন। ছোটখাটো চরিত্রে হাজির হয়েছেন পর্দায়। মুখ্য ভূমিকায় কিংবা গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে সুযোগ সেভাবে জোটেনি। ২০১২ সালে পাল্টে যায় তার ক্যারিয়ার গ্রাফ। এ বছরই তার জীবনে সাফল্যের পদ্ম ফোটে। ‘কাহানি’ ও ‘গ্যাংস অব ওয়াসিপুর’ তাকে বলিউডে নতুন অবস্থান গড়ে দেয়।

হ্যাঁ, তিনি নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকি। বলিউডের এই দাপুটে অভিনেতা ২০১২ সালের পর থেকে প্রায় বিশ্রামহীন কাজ করেছেন। একের পর এক সিনেমা, সিরিজ মাতিয়েছেন তুখোড় অভিনয়শৈলিতে। কিন্তু ২০১৯ সাল থেকে দুই বছর তাকে পাওয়া যায়নি ক্যামেরার সামনে, শুটিং সেটে।
 
পাক্কা দুই বছরের বিরতি। কেন? এতদিন পর এসে খোলাসা করলেন সেই রহস্য। এক সাক্ষাৎকারে নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকি বলেন, ‘একটা সময় পর সবাই একটা পর্যায়ে পৌঁছায়। এটা প্রত্যেকেই তাদের পেশাগত জীবনে অনুভব করেন। একজন মানুষ কতদিন ধরে শুধু অভিনয় আর সিনেমা, অভিনয় আর সিনেমা; এসব ভাবতে পারে! এরকম সময়ে আপনার পেশা ছাড়া অন্য কিছু দরকার, যেটা আপনাকে সচল রাখতে পারে। আমার মনে হয় ২০১৯ সাল আমার জন্য তেমন ছিলো, যখন আমি অনুভব করেছি; দুর্ভাগ্যজনকভাবে তখন মহামারিও চলে আসলো। আমি কিছুটা সময় বিরতি চেয়েছিলাম এবং মহামারির কারণে দুই বছর পেয়ে যাই। বলতে পারেন, এটা দুই বছরের বিশ্রাম ও উপলব্ধি। এর পর আমি পুরোদমে আবার কাজে ফিরেছি।’ 

নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকিকিন্তু লম্বা এই সময়ে কী করেছেন নওয়াজুদ্দিন? কীভাবে কেটেছে তার সময়? অভিনেতার জবাব, ‘আমি একা বসে ছিলাম। প্রথমে আমি আমার গ্রামে ২ মাস ছিলাম। এরপর দেহরাদুনের একটি ফার্মহাউজে চলে যাই। সেখানে আমি ৬ মাস একদম একা ছিলাম, শুধু নিজের সঙ্গে। ছয় মাস পর মা এসে আমার সঙ্গে যোগ দেন। ওই ৫-৬ মাস আমার জীবনের সেরা সময় ছিলো। নিজের সম্পর্কে আমি অনেক কিছু উপলব্ধি করেছি।’

কর্মব্যস্ততার ফাঁকে নিজেকে একান্ত কিছু সময় দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন নওয়াজ। তিনি বলেন, ‘নিজেকে সময় দেওয়া ভুলেই গেছি আমরা। আমাদের সেই একান্ত সময়টুকু প্রয়োজন, যখন উপলব্ধি করা যাবে জীবনে কী পেয়েছি, কী হারিয়েছি আর কী শিখেছি। আমার একাকী ওই সময়ে আমি বুঝতে পেরেছি যে, আমি জীবনে এবং ক্যারিয়ারে কোথায় ভুল করেছি। আমি খুঁজে বের করেছি, ব্যক্তি হিসেবে আমি কতটা খারাপ এবং কতটা ভালো। চিহ্নিত করেছি আমি কতটা মিথ্যা বলি এবং কতটা সত্য বলি। আমি নিজেকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ করতে পেরেছি। একা থাকাটা আপনার নিজেকে ভুল প্রমাণের শক্তি দেয়।’

এদিকে বিরতির পর ফিরে বেশ কিছু প্রজেক্ট নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন নওয়াজুদ্দিন। তার হাতে রয়েছে ‘অদ্ভুত’, ‘টিকু ওয়েডস শেরু’, ‘নূরানি চেহরা’, ‘বোলে চুড়িয়া’, ‘আফওয়া’সহ বেশ কয়েকটি সিনেমা। মায়ের সঙ্গে নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকি

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া