কলকাতা থেকে তুষি: এই শহরের ঘ্রাণ এত সুন্দর…

বিজয় দিবসের দিনে পশ্চিমবঙ্গে শুভ সূচনা হলো বাংলাদেশি সিনেমা ‘হাওয়া’র। শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) ওপার বাংলার প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে মেজবাউর রহমান সুমন পরিচালিত এই ছবি। যেটা ইতোপূর্বে বাংলাদেশ ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দারুণ সাড়া পেয়েছে।

সিনেমা মুক্তি উপলক্ষে কলকাতায় অবস্থান করছেন নির্মাতা সুমন ও ‘হাওয়া’র একমাত্র অভিনেত্রী নাজিফা তুষি। বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) তারা অংশ নিয়েছেন কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনে। এরই ফাঁকে বাংলা ট্রিবিউনের মুখোমুখি হয়েছেন তুষি। জানিয়েছেন তার কলকাতা ভ্রমণ, সিনেমা মুক্তি ও আনুষঙ্গিক বিষয়ে ভাবনার কথা...

বাংলা ট্রিবিউন: কেমন লাগছে কলকাতা?

নাজিফা তুষি: কলকাতা আমার পছন্দের শহর। এর একটা ভিনটেজ রূপ আছে। মাটির কাপে চা, ফুচকা। আমি কলকাতায় ফ্লাইট থেকে নামলেই একটা বাতাস পাই। এটা আমার চেনা। এই শহরের ঘ্রাণ এত সুন্দর। আমার কাছে পরিচিত। আমি মনে করি পুরান ঢাকায় আছি।

বাংলা ট্রিবিউন: ভারতজুড়ে মুক্তি পাচ্ছে ‘হাওয়া’। অনুভূতি কেমন?

নাজিফা তুষি: এই প্রথম আমাদের ছবি ভারতে মুক্তি পাচ্ছে। আপনাদের এত ভালোবাসার কারণেই আমরা সিনেমাটা নিয়ে আসতে পেরেছি। চাইবো এই ভালোবাসা অটুট থাকুক। সবাইকে বলবো, দেখুন সিনেমাটি। আবার এটাও বলবো, অবশ্যই ভালো লাগলেই দেখবেন। জানাবেন কেমন লাগলো। মহান বিজয় দিবসে ‘হাওয়া’ মুক্তি পাওয়াটা আমার কাছে ডাবল সেলিব্রেশন। দু’রকমের বিজয়। একটা তো স্বাধীনতা। আরেকটা সিনেমার দিক থেকে ধরলে বিজয় শুরু। এটা খুবই আনন্দের। আমি অনেক ধন্যবাদ জানাই আমার টিমের সবাইকে। যারা এটার সঙ্গে ছিলেন। যারা এই ১৬ তারিখটা ঠিক করেছেন। আমি অনেক খুশি। অবশ্যই ভালো লাগছে। নিজের কাজ যখন সবার কাছে যায়, তখন আনন্দটা আরও বেড়ে যায়।

বাংলা ট্রিবিউন: ওপার বাংলার সিনেমা এপারে আসা বা ঢালিউডের সঙ্গে টলিউডের মেলবন্ধন নিয়ে আপনার ভাবনা কী?

নাজিফা তুষি: আমার কাছে এপার, ওপারের কোনও দেয়াল নেই। আমি আমার পরিচালককে বলছিলাম, এরকম হলে ভালো হয় না যে সবাই যারা বাংলা ভাষার মানুষ, আসাম, কলকাতার, আমরা বাঙালি একটা দেশ হয়ে যেতাম। একসঙ্গে থাকতাম। কত মজা হতো। আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করতাম। জীবনযাপন করতাম। কিন্তু এখন যা হচ্ছে এটা তার বাইরেও নয়। আপনি যদি আমার দেশে আসেন, আমি যেভাবে আপনাকে আপন করে নেবো, আপনারাও ঠিক তেমনভাবেই আমাকে আপন করে নিচ্ছেন। তাই আমার কাছে এপার ওপার বলে কিছু নেই।নাজিফা তুষি

বাংলা ট্রিবিউন: ‘হাওয়া’য় গুলতি চরিত্রটা আপনার কাছে কতটা স্পেশাল?

নাজিফা তুষি: অবশ্যই অনেক স্পেশাল। কারণ, এই চরিত্রটা করার পরে এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনও চরিত্র পাইনি। যিনি কাজ করেন, তার একটা পছন্দের চরিত্র থাকে। সবাই পরিশ্রম করে কিন্তু সুযোগ জীবনে কমই আসে। সবসময় যে আপনি তা ব্যবহার করতে পারবেন, তাও নয়। কীভাবে যেন আমার গুলতি করার সৌভাগ্য হলো। আমার অল্প সময়ে টাফ চরিত্র। পরিচালক আমাকে কাস্ট করলেন কেন, আমি জানি না। ধন্যবাদ তাকে। গুলতি একটা রহস্যময় চরিত্র। আমি পুরোটা বলতে চাই না। এখানে অনেকই এখনও দেখেননি। তারা দেখলে বুঝতে পারবেন, কতটা কঠিন এই চরিত্রটি। ‘হাওয়া’ আমার লাইফের টার্নিং  পয়েন্ট কিনা জানি না। সময় বলবে আসলে কী? তবে ‘হাওয়া’ আমার জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। প্রথম নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ পেয়েছি। এটা দীর্ঘ যাত্রা। অভিনয় করার জন্য কাজ শেখা শুরু। সব কিছু মিলিয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

বাংলা ট্রিবিউন: টলিউড থেকে কাজের প্রস্তাব পেলে করবেন?

নাজিফা তুষি: অফার আসছে। আমিও ভিন্ন ধরনের কাজ করতে চাই। ছোট থেকেই অভিনয় করি। বাবার ব্যবসা টুকটাক দেখি। কিন্তু অভিনয় আমার পেশা। অভিনেতাদের কোনও ভৌগোলিক সীমারেখা নেই। সব জায়গায় বিচরণ করবে। আমিও চাই নিজেকে এক্সপ্লোর করতে।কলকাতায় ‘হাওয়া’র পোস্টারের সামনে তুষি