ঢালিউডের সবচেয়ে সফল নায়িকাদের একজন তিনি। অথচ ঝলমলে ক্যারিয়ারটা আলগোছে মলিন হয়ে গেলো, বুঝেও যেন বুঝলেন না; সময়ের সঙ্গে তাল মেলালেন না। যতদিনে বুঝলেন, ততদিনে বড্ড দেরি। তাই সিনেমাই ছেড়ে দেন। স্থায়ী হন দূর অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে। প্রথম দিকে স্বামী-সন্তান নিয়ে সুখেই ছিলেন। পরে সংসারে ভাঙন। এরপর থেকে একমাত্র ছেলে আর নিজের স্বজনদের ঘিরেই তার জীবন।
সে জীবন কেমন, তার নিয়মিত রেশ রাখেন সোশ্যাল হ্যান্ডেলেও। যা দেখে ভক্তরা হন উচ্ছ্বসিত। আবার মনের কোণে উঁকি দেয় অভিমানী আক্ষেপও। যাকে দেখার কথা বড় পর্দায় নানামাত্রিক চরিত্রে, তিনি কিনা শুধুই ফেসবুকে বন্দী! তবুও একেবারে বিস্মৃত হয়ে যাননি, এই সান্ত্বনা।
দেশ ও দেশের মানুষের প্রতি তার টান-ভালোবাসা কেমন, তার গোটা কয়েক নজির ইতোপূর্বে দেখাও গেছে। চলতি বছরের মে মাসে অস্ট্রেলিয়ায় গিয়েছিলেন ফোক সম্রাজ্ঞী মমতাজ। সেখানে তাকে সঙ্গ দিয়েছেন, আস্ত একটা দিন মমতাজের আতিথেয়তায় খরচ করেছেন। এমনকি নিজে গাড়ি চালিয়ে গায়িকাকে বিনামবন্দর অব্দি পৌঁছে দেন।
প্রেক্ষাগৃহে তাকে সর্বশেষ দেখা গেছে ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে। ‘পাগল মানুষ’ নামের সেই ছবিও অনেকদিন আগের। নির্মাণশৈলির ঘাটতি আর নায়িকার ফিটনেসহীনতার কারণে ছবিটি দর্শকের মন জয় করতে পারেনি।
হারিয়ে যাওয়ার পরও একাধিকবার পুরোদমে ফেরার আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু সময় আর নিজের সঙ্গে পেরে উঠলেন না। অনেকদিন ধরে তো দেশেও আসার ফুরসত পাচ্ছেন না। গত বছরের জন্মদিনটা দেশে এসে ভক্ত ও ইন্ডাস্ট্রির কাছের মানুষদের নিয়ে উদযাপন করবেন বলেছিলেন। এক বছর পেরিয়ে আরও এক জন্মদিন ক্যালেন্ডারে হাজির। তার এখনও ফেরা হয়নি।
১৯৭৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর যশোর জেলার শার্শা উপজেলার নাভারণে শাবনূরের জন্ম। তার আসল নাম কাজী শারমীন নাহিদ নুপুর। নির্মাতা এহতেশামুর রহমান চলচ্চিত্রের জন্য তাকে শাবনূর নামটি দিয়েছিলেন।
১৯৯৩ সালে ‘চাঁদনি রাতে’ সিনেমার মাধ্যমে ঢালিউডে আত্মপ্রকাশ করেন শাবনূর। তবে ছবিটি সফলতা পায়নি। কিন্তু নিজের রূপ-অভিনয়শৈলিতে নজর কাড়তে ভুল করেননি তিনি। যার সুবাদে পরের বছরই নায়িকা হিসেবে জনপ্রিয়তা পেয়ে যান। এরপরের ইতিহাসটা সিনেমাপ্রেমী সব দর্শকের জানা।
এই জন্মদিনে কেমন পরিকল্পনা এঁকেছেন, সেটা জানা যায়নি। তবে সম্প্রতি দূর সিডনি থেকে খবর মিলেছে, নায়িকা ফের রূপালি পর্দায় ফেরার প্রস্তুতিতে উদগ্রীব হয়ে আছেন। খবর মিলছে, এরমধ্যেই ওজন কমিয়েছেন অনেক। তাই এই জন্মদিনে শাবনূর ভক্তরা বাড়তি প্রত্যাশা করতেই পারেন প্রিয় নায়িকার কাছ থেকে; শুভদিনে বার্তা পাঠাবেন, ‘আমি আসছি, তোমরা তৈরি তো!’