মুগ্ধতার রেশ ছড়িয়ে শেষ হলো জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত উৎসব

রবিঠাকুরের গানের প্রাণ জুড়ানো পরিবেশনা আর কবিতার হৃদয়স্পর্শী আবৃত্তিতে দুই দিনের জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত উৎসব শেষ হয়েছে। শনিবার (১৩ মে) রাতে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে সমাপনী অধিবেশনের মাধ্যমে উৎসবটির ৩৪তম আসরের ইতি ঘটে। প্রতি বছরের মতো এ উৎসবের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী সংস্থা।

এদিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে শুরু হয় দ্বিতীয় দিনের কার্যক্রম। সংস্থার সদস্য শিল্পীদের দলীয় পরিবেশনায় জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে আরম্ভ হয় এই অধিবেশন। এরপর দলীয়ভাবে তারা বেশ কয়েকটি গান পরিবেশন করেন। তারপর আসে একক সংগীত ও আবৃত্তির পর্ব। বিভিন্ন গান ও কবিতার অনিন্দ্য পরিবেশনায় শিল্পীরা উপস্থিত দর্শক-শ্রোতাদের মনে ছড়িয়ে দেন বিশ্বকবির অমিয়বাণী।

সংগীত পরিবেশন করেছেন আমিনা আহমেদসংস্থার নির্বাহী সভাপতি হিসেবে একক পরিবেশনার সূচনা করেন রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী আমিনা আহমেদ। এর আগে মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনাদের উপস্থিতি আমাদের উৎসাহ ও প্রেরণা জোগায়। আশা করি আজকের অনুষ্ঠানও আপনাদের ভালো লাগবে। এখানে সব কাজ শিল্পীরা নিজেরাই করেছে। পরিবার, চাকরির কাজ সামলে তারপর এখানে সময় দিয়েছে। রবীন্দ্রনাথকে ভালোবেসেই আমরা এই চর্চা করছি। আপনারাও সবসময় আমাদের উৎসাহ দেবেন।’  

সাধারণ সম্পাদক পীযূষ বড়ুয়া বলেন, ‘আজকে আমাদের এই উৎসবের দ্বিতীয় দিন, অর্থাৎ শেষ দিন। আজ ঢাকা শহরের ট্রাফিক অবস্থা খুব একটা ভালো না। এর মধ্যেও আপনারা যারা এসেছেন, সবাইকে বাংলাদেশ রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী সংস্থার পক্ষ থেকে অনেক কৃতজ্ঞতা। আশা করি আপনারা আমাদের অনুষ্ঠান উপভোগ করবেন।’

সঞ্চালনা-বক্তব্যের ফাঁকে গেয়েছেন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক পীযূষ বড়ুয়াও‘করিস নে লাজ করিস নে ভয়, আপনাকে তুই করে নে জয়’- এই প্রতিপাদ্য নিয়ে শুক্রবার (১২ মে) সকালে শুরু হয় জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত উৎসব। রবীন্দ্রসংগীত নিয়ে এটি দেশের সবচেয়ে বড় আয়োজন। প্রদীপ প্রজ্বালন ও দলীয় নৃত্যের মাধ্যমে উৎসবের সূচনা হয়। আয়োজক সংস্থার নির্বাহী সভাপতি হিসেবে উদ্বোধন করেন আমিনা আহমেদ।

একক পরিবেশনায় এক শিল্পীশুক্রবার দুটি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সকালে উদ্বোধনের পর সংগীত ও আবৃত্তি পরিবেশন করা হয়। এরপর বিকালের অধিবেশনে ছিল সম্মাননা পর্ব ও সংগীতানুষ্ঠান। এ বছর সম্মাননা দেওয়া হয়েছে কিংবদন্তি গিটার শিল্পী এনামুল কবির ও বিশিষ্ট রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী লিলি ইসলামকে। তাদেরকে সংস্থার পক্ষ থেকে ফুল, ক্রেস্ট, মানপত্র ও সম্মাননা অর্থ প্রদান করা হয়।

শিল্পীদের দলীয় পরিবেশনাউল্লেখ্য, রবীন্দ্রসংগীত চর্চা তরান্বিত করার লক্ষ্যে ১৯৮৮ সালে বরেণ্য রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী কলিম শরাফীর হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘বাংলাদেশ রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী সংস্থা’। এরপর থেকে নিবিড়ভাবে রবীন্দ্র চর্চায় কাজ করে যাচ্ছে সংগঠনটি।