আর যদি কোনও চরিত্রে অভিনয় করা না হয় কিংবা পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে হয়, তাতে কোনও আফসোস বা আক্ষেপ থাকবে না অভিনেতা আরিফিন শুভর!
শনিবার (১২ আগস্ট) সন্ধ্যায় রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল বলরুমে সেন্সর সনদ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে এমনটাই বলেন এই নায়ক। প্রসঙ্গ বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত ‘মুজিব- একটি জাতির রূপকার’ চলচ্চিত্র। যে সিনেমায় আরিফিন শুভ অভিনয় করেছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চরিত্রে।
মূলত সেই প্রসঙ্গ টেনেই শুভ এদিন সন্ধ্যায় দ্যর্থহীন কণ্ঠে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে অভিনয়ের পর আর কোনও চরিত্রে অভিনয় নাও যদি করি কিংবা পৃথিবী থেকে চলে গেলেও আক্ষেপ থাকবে না আর।’
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তিন ঘণ্টা সময়ের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর জীবন, বাঙালির মুক্তিসংগ্রাম ও ১৯৭৫ সালের মর্মন্তুদ ঘটনাকে যেভাবে তুলে আনা হয়েছে, সেখানেই চলচ্চিত্র পরিচালকের মুনশিয়ানা, অন্য পরিচালকের সাথে পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। থ্যাংকস টু শ্যাম বেনেগালজি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়ার ফলেই এ চলচ্চিত্র নির্মাণের শুরু থেকে মুক্তি পর্যন্ত সাথে থাকার সুযোগ হচ্ছে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘অবর্ণনীয় ব্যস্ততার মধ্যেও এই চলচ্চিত্র নির্মাণে আন্তরিক সময়দানের জন্য বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রীর প্রতি জানাই গভীর কৃতজ্ঞতা। প্রধানমন্ত্রীর সাথে আমার সিনেমাটি ইতিমধ্যে দেখার সৌভাগ্য হয়েছে। এক নিঃশ্বাসে দেখার মতো এমন সিনেমা নির্মাণের জন্য পরিচালক শ্যাম বেনেগাল, শিল্পী-কলা-কুশলী ও নেপথ্য কারিগরদের অকুণ্ঠ ধন্যবাদ।’
স্ক্রিপ্ট রাইটার ভারতের অতুল তেওয়ারি তার বক্তব্যে বলেন, ‘আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞ যে তিনি তার পিতার জীবনের চলচ্চিত্র নির্মাণে আমাদের ওপর বিশ্বাস ও আস্থা রেখেছেন। আমরা ও শিল্পী-কুশলীরা এ নির্মাণকে সেরা করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি।’
খন্দকার মোশতাক চরিত্র রূপায়নকারী অভিনেতা ফজলুর রহমান বাবু বলেন, ‘এই খলচরিত্রে অভিনয়ের জন্য দর্শক যদি আমার দিকে জুতাও ছুঁড়ে মারে, তবে সেটাই হবে আমার পদক।’
মঞ্চে মন্ত্রীর উপস্থিতিতে সেন্সর বোর্ডের চেয়ারম্যান তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মোঃ হুমায়ুন কবীর এবং ভাইস চেয়ারম্যান মুহঃ সাইফুল্লাহ গত ৩১ জুলাই ইস্যুকৃত সেন্সর সনদটি চলচ্চিত্রের বাংলাদেশ পক্ষের প্রযোজক এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুজহাত ইয়াসমিন ও ভারতের পক্ষে আগত স্ক্রিপ্ট রাইটার অতুল তেওয়ারির হাতে তুলে দেন।
বাংলাদেশের ৬০ ভাগ ও ভারতের ৪০ ভাগ ব্যয়ে নির্মিত এই বায়োপিকের শুটিং ২০২১ সালের ২২ জানুয়ারি ভারতের মুম্বাই ফিল্ম সিটিতে শুরু হয়ে ১৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশে শেষ হয়। গত বছর ২০২২ সালের ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকীতে চলচ্চিত্রটির প্রথম পোস্টার, ৩ মে দ্বিতীয় পোস্টার এবং ১৯ মে ফ্রান্সের কান চলচ্চিত্র উৎসবে সিনেমাটির ট্রেলার প্রকাশ করা হয়।
‘মুজিব- একটি জাতির রূপকার’ চলচ্চিত্রের শিল্পী-কুশলী ছাড়াও আজীবন সম্মাননাপ্রাপ্ত অভিনেত্রী ডলি জহুর, পরিচালক কাজী হায়াৎ, মুশফিকুর রহমান গুলজার, কামাল আহমেদ লিপু, প্রযোজক-পরিবেশক খোরশেদ আলম খসরু, রহমতুল্লাহ, জ্যেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক আবদুল লতিফ বাচ্চু, সম্পাদক আবু মুসা দেবু, চলচ্চিত্র প্রদর্শক উপদেষ্টা সুদীপ্ত দাস, প্রদর্শক আওলাদ হোসেন, আমির হামজাসহ সিনেমা ও শিল্প অঙ্গনের বিশিষ্টজনেরা প্রাণবন্ত এ আয়োজনে অংশ নেন।