আমার গান কম হয়েছে, কিন্তু স্বকীয়তা নষ্ট হয়নি: তপন চৌধুরী

শুরুতে ব্যান্ড, পরবর্তীতে একক কণ্ঠশিল্পী হিসেবে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন তপন চৌধুরী। আশি ও নব্বই দশকে তার খ্যাতি ছিল প্রথম সারিতে। উপহার দিয়েছেন কালজয়ী বহু গান। তবে সমসাময়িক অনেকের তুলনায় তার গানের সংখ্যা কমই বটে।

এর পেছনে কারণও রয়েছে। তপন চৌধুরীর মতে, তিনি কখনও বাজে গান করেননি। বুঝে-শুনে ভালো মানের গান করেছেন। আর এটাই তার স্বকীয়তা। তার ভাষ্য, ‘আমার গানের সংখ্যা কম হয়েছে। কিন্তু আমার অস্তিত্ব, স্বকীয়তা তো নষ্ট হয়নি। এজন্য বলি, একটা ভালো গান যদি হয়ে যায়, সারা জীবনে কোটি কোটি টাকা কামালেও, এই গানই আপনাকে বাঁচিয়ে রাখবে। গানটা যেখানে বাজবে, সেখানে বলবে তপন চৌধুরীর গান। এর চেয়ে বড় পাওনা আর কিছু নেই।’

অনেক দিন ধরে পরিবারসহ কানাডায় থাকেন তপন চৌধুরী। সম্প্রতি দেশে ফিরেছিলেন। শনিবার (২১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় অংশ নিয়েছিলেন একটি গান প্রকাশনা অনুষ্ঠানে। ‘কিছুটা সময়’ শিরোনামের সেই গান গেয়েছেন তপন চৌধুরী ও জান্নাতে রোম্মান তিথি।

এ অনুষ্ঠানেই সংগীতের কিছু নেতিবাচক দিক নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করেন নন্দিত এই শিল্পী। তপন চৌধুরী বলেন, ‘এখানে গান এখন শুনতে চায় না কেউ। গানের সঙ্গে নাচার জন্য নিয়ে যায় শিল্পীকে। এটা তো আমাদের গান না। গান বাজে আর ওনারা পেট দেখিয়ে দেখিয়ে নাচে; এটা কী ধরনের সংগীত অনুষ্ঠান আমি বুঝি না।’

বক্তব্য রাখছিলেন তপন চৌধুরীগান করতে গেলে আয়োজকদের আপত্তিকর আবদারের মুখে পড়তে হয় বলেও জানান তপন চৌধুরী। বললেন, ‘আমরা গেলে আমাদের বলেন একটা গরম গান করেন। গরম গান আমি দেখিনি জীবনে। গরম গান কী ভাই? রিদমিক গান হতে পারে, স্লো গান হতে পারে, স্যাড রোম্যান্টিক গান হতে পারে। গরম গান আবার কী? আশির দশকে আমরা বুয়েট, ঢাকা মেডিকেলের অনুষ্ঠানে গান করতাম। ওই গ্যালারি কিন্তু খুব ছোট। চার-পাঁচ ঘণ্টা গান করতাম। শো শেষে দেখতাম, আসনগুলো সব ঘামে ভেজা। কারণ এসি ছিল না। গরম সহ্য করেও মানুষ গান শুনতো। ভালো গান শুনতো। এর চেয়ে বড় পাওয়া আর কী?’

জানা গেছে, ‘কিছুটা সময়’ গানের কথা লিখেছেন ও সুর করেছেন রিপন চৌধুরী। সংগীতায়োজনে ভারতের মধু মুখার্জী। দুর্গাপূজা উপলক্ষে গানটি প্রকাশ করা হয়েছে। প্রকাশনা অনুষ্ঠান শেষে শনিবার রাতেই তপন চৌধুরী ফের কানাডার উদ্দেশে রওনা দেন বলে জানা গেছে।